খতিবে মিল্লাত উবায়দুল হক জালালাবাদী | |
---|---|
খতিব, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ | |
কাজের মেয়াদ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ – ৬ অক্টোবর ২০০৭ | |
পূর্বসূরী | আব্দুল মুইজ |
উত্তরসূরী | মোহাম্মদ নুরুদ্দীন |
হেড মাওলানা, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮০ – ২ মে ১৯৮৫ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | বারোঠাকুরি, জকিগঞ্জ, সিলেট | ২ মে ১৯২৮
মৃত্যু | ৬ অক্টোবর ২০০৭ ল্যাবএইড হাসপাতাল, ধানমন্ডি | (বয়স ৭৯)
সমাধিস্থল | আজিমপুর কবরস্থান |
জাতীয়তা |
|
রাজনৈতিক দল | জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম |
দাম্পত্য সঙ্গী | ২ |
সন্তান | ৪ ছেলে ও ৭ মেয়ে |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
পিতামাতা |
|
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি[১] |
প্রধান আগ্রহ | |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | খতমে নবুয়ত আন্দোলন |
উল্লেখযোগ্য কাজ | |
শিক্ষক | |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
এর শিষ্য | |
শিক্ষার্থী | |
সাহিত্যকর্ম | তারিখে ইসলাম, সীরাতে মোস্তফা, শিয়া সুন্নি ইখতেলাফ |
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
উবায়দুল হক জালালাবাদী (খতিব উবায়দুল হক নামেও পরিচিত; [২] খ্রিস্টাব্দ; ৯ জিলহজ্জ ১৩৪৬ – ২৩ রমজান ১৪২৮ হিজরি) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত ও শিক্ষাবিদ। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তৃতীয় খতিব ও সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকার হেড মাওলানা ছিলেন। দারুল উলুম দেওবন্দে শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত হন। মাঝখানে তিনি কিছুকাল জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ঢাকা আলিয়া থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার সাথে জড়িত হন। তিনি আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া ও জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
২ মে ১৯২৮ – অক্টোবর ৬, ২০০৭বর্তমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ভিত স্থাপিত হয়েছিল তার চিন্তাধারায় গঠিত ইসলামি গবেষণা পরিষদের উদ্দীপনা থেকে।[৩] তিনি বাংলাদেশে ইসলামি ঐক্যের জন্য সকল ধর্মীয় দলের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছিলেন। এলক্ষ্যে তিনি একটি অরাজনৈতিক স্বতন্ত্র পরিষদ হিসেবে জাতীয় শরিয়া কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের মধ্যে ইসলামি ব্যাংক ও বীমাসেবা চালুর জন্য তিনি পথিকৃৎ হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। তিনি ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া কাউন্সিল এবং সম্মিলিত শরিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
আন্তর্জাতিক মজলিস তাহাফফুজে খতমে নবুয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে তিনি দীর্ঘকাল খতমে নবুয়ত আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করেন। ইসলাম ও শরিয়ত বিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন। তার আহ্বানে একযোগে বাংলাদেশের আড়াই লাখ মসজিদে জঙ্গিবাদ বিরোধী খুতবা ও বক্তব্য প্রদান করা হয়।[৪] তারিখে ইসলাম, সীরাতে মোস্তফা সহ তিনি কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রকাশিত শতাধিক সম্পাদিত ও অনূদিত গ্রন্থে তার নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।[৫] তিনি সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান মজলিশে শুরা থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন।
উবায়দুল হক ১৯২৮ সালের ২ মে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারোঠাকুরিতে জন্মগ্রহণ করেন।[৬] তার পিতা জহুরুল হক উরফে উরকিজ আলী মৌলভী দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্র ও আশরাফ আলী থানভীর খলিফা ছিলেন।[৭] তার মায়ের নাম আয়েশা বেগম। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বোনের সংখ্যা ৪ জন।[৮] পরিবার ও নিজ গ্রামের মসজিদে তার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। এরপর তিনি সিলেটের বিয়ানিবাজারে আতহার আলীর প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুকাল লেখাপড়া করেন। তথায় তিনি শামসুল হক শাহবাগির কাছে ফার্সি ভাষা ও সাহিত্যের কারিমা, পান্দেনামা ও মিজান মুনশাইব ইত্যাদি শিক্ষালাভ করেন। দুই বছর তিনি ঘুংগাদিতে ছিলেন। এরপর তিনি হবিগঞ্জের মাওলানা মুদাসসির ও মুসির আলির নিকট কিছুদিন প্রাইভেট লেখাপড়া করেন।[৯] ১৪ বছর বয়সে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে চলে যান। সেখানে তিনি প্রথমে কাফিয়া শ্রেণিতে ভর্তি হন। দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষায় তিনি রেকর্ড ফলাফল লাভ করেন, যা ছিল দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।[১০] তার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন: হুসাইন আহমদ মাদানি, ইব্রাহিম বালিয়াভি, ইজাজ আলী আমরুহী, কারী মুহাম্মদ তৈয়ব প্রমুখ। আসআদ মাদানি, সালেম কাসেমি, ওয়াহিদুজ্জামান কিরানবি, আবুল হাসান যশোরী তার সহপাঠী ছিলেন।[১১] দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালে তিনি হুসাইন আহমদ মাদানির হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি আশরাফ আলী থানভীর খলিফা আতহার আলীর নিকট বায়আত হন। তার মৃত্যুর পর তিনি মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর নিকট বায়আত হন ও খেলাফত লাভ করেন। তবে খেলাফতপ্রাপ্তির কথা তিনি গোপন রাখতেন। হাফেজ্জীর মৃত্যুর পর তিনি আবরারুল হক হক্কীর সাথে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।[১২]
শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর ১৯৪৯ সালে আবদুল ওয়াহহাব পীরজীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম, বড় কাটরায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়।[১৩] শিক্ষকতার চতুর্থ বছর তিনি হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে হজ্জ করা সম্ভব না হওয়ায় হুসাইন আহমদ মাদানি ও ইজাজ আলী আমরুহীর সান্নিধ্যে তিনি দেওবন্দ গমন করেন। আমরুহী তাকে শাহজাহানপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দেন।[১৪] পরবর্তীতে তিনি দারুল উলুম করাচিতে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দারুল উলুম করাচির প্রধান শফি উসমানির বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে বছরের শেষ দিকে তিনি সহীহ বুখারীর শিক্ষাদান করতেন।[১৫] দারুল উলুম করাচিতে শিক্ষকতাকালে তিনি জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টির পশ্চিম পাকিস্তানের প্রচার সম্পাদক নিযুক্ত হন। তখন থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার সক্রিয়তা শুরু হয়।[১৫][১৬] পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর যুক্তফ্রন্টের শরীক দল নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আতহার আলী তাকে শিক্ষকতা পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য শফি উসমানিকে অনুরোধ করলে তিনি তাকে অব্যাহতি দিতে সম্মত হন। এরপর তিনি পূর্ণকাল রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে কিছুকাল শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্ব পান। তবে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার কয়েকমাস পর কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার ভেঙে দেয় এবং সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হয়। ফলে ১৯৫৪ সালের আগস্টে তিনি পুনরায় বড় কাটরা মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।[১৭] ১৯৫৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকায় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত তিনি ঢাকা আলিয়ার হেড মাওলানা ছিলেন। ১৯৮৫ সালের ২ মে তিনি সরকারি আলিয়া থেকে অবসর নেন।[১৮] হেড মাওলানা থাকাকালীন ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব পদে নিয়োগ পান। আমৃত্যু তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।[১৮] মাঝখানে শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম মেয়াদে বার্ধক্যের অজুহাতে এই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদানের প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা সফল হয় নি।[১৯][২০]
ঢাকা আলিয়া থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। প্রথমেই তিনি মাদ্রাসায়ে ইসলামিয়া ইসলামপুরের মুহতামিম নিযুক্ত হন। ১৯৮৫ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি মাদ্রাসায়ে ফয়জুল উলুম আজিমপুরের শায়খুল হাদিস পদে ছিলেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার শায়খুল হাদিস এবং ১৯৮৭ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর শায়খুল হাদিস ছিলেন।[২১] কয়েকবছর জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদের মুহাদ্দিস ছিলেন। শিক্ষকতা জীবনে তার ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন: তাকি উসমানি, রফি উসমানি, মতিউর রহমান নিজামী, মোঃ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।[২২]
২০০১ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি হাইকোর্টের ২ জন বিচারপতিকে তওবা করার ঘোষণা দেন এবং হাইকোর্টের ফতোয়া বিরোধী রায় সম্পর্কে ইসলাম ধর্মে ফতোয়ার গুরুত্ব, মুসলিম পারিবারিক আইন ইত্যাদি বিষয়ে বয়ান পেশ করেন।[২৩] ২০০৭ সালে দৈনিক প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ধর্মাবমাননার অভিযোগ উঠে। এ পত্রিকার আলপিন ম্যাগাজিনে মুহাম্মদ (স.)–এর কার্টুন অঙ্কন করা হলে এর প্রতিবাদে সারাদেশে আন্দোলন দাঁনা বাধে। তিনিও আন্দোলনকারীধের সপক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল তার সাথে সাক্ষাৎ করে এই ভুলের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আলপিন ম্যাগাজিন বন্ধ ঘোষণা করেন।[২৪] তিনি আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের সভাপতি ছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি অহিংস পদ্ধতিতে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন।[২৫] এর কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারের প্রথম মেয়াদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরীর সাথে সাক্ষাৎ করে দীর্ঘ আলোচনা করেন।[২৬] তিনি ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া কাউন্সিলের সভাপতি এবং সকল ইসলামি ব্যাংকের সমন্বয়ে গঠিত সম্মিলিত শরিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একইভাবে ইসলামি বীমা সংস্থাগুলোর সম্মিলিত কমিটিরও সভাপতি ছিলেন। তিনি জাতীয় শরিয়া কাউন্সিল নামে একটি সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেন।[২৭] ১৯৬৯–৭০ সালে তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত "কুরআনে হাকিম আওর হামারে জিন্দেগী" নামক অনুষ্ঠানে তিনি উর্দু ভাষায় নিয়মিত কথিকা পাঠ করতেন।[২৮]
কর্মজীবনের শুরু থেকে তিনি লেখালেখি শুরু করেন। লেখালেখির ক্ষেত্রে তিনি তার জন্মভূমি সিলেটের অপর নাম জালালাবাদকে নিজের নামের সাথে সংযুক্ত করে উবায়দুল হক জালালাবাদী ব্যবহার করতেন। তার অধিকাংশ কিতাবে এই নাম ব্যবহৃত হয়েছে। তার রচনাবলি দুই ধরনের: পাঠ্যবই ও এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ এবং সাধারণ। আরবি, বাংলা, উর্দু তিন ভাষায় তার রচনা পাওয়া যায়। তবে তুলনামূলক উর্দু ভাষায় বেশি।[২৯][৩০]
এছাড়াও তিনি মুহাম্মদ ইকবালের শিকওয়া ও জাওয়াবে শিকওয়া অনুবাদ করেছেন।
তিনি ১৯৫৬ ও ১৯৫৮ সালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা থেকে ‘জমিয়তে লিসানুল কুরআন’ পাকিস্তানের অধীনে অনুষ্ঠিত আরবি বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেন। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান মজলিশে শুরা তাকে স্বর্ণপদক প্রদান করে। জাতীয় সিরাত কমিটি বাংলাদেশ তাকে ২০০৪ সালে বছরের সেরা ইসলামি ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত করে স্বর্ণপদক প্রদান করে। ২০০৫ সালে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কুরআন শিক্ষা সোসাইটি তাকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করে। হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন বিষয়ে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে বিশেষ পদকে ভূষিত করে।[৩১]
২০০৭ সালের ৬ অক্টোবর রমজান মাসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৩২] রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, ইরানের রাষ্ট্রপতি আকবর হাশেমী রাফসানজানি, তাকি উসমানি, আবদুর রউফ, কাজী দীন মুহাম্মদ, শাহ আহমদ শফী প্রমুখ তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।[৩৩] জাতীয় ইদগাহে ছেলে আতাউল হকের ইমামতিতে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ সহ তথ্য ও ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান মঈন উদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, মতিউর রহমান নিজামী, আজিজুল হক, ফজলুল হক আমিনী, সৈয়দ রেজাউল করিম প্রমুখ তার জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।[৩৪]
২০১৪ সালে তার জীবন কর্মের উপর সৈয়দ রেজওয়ান আহমদের একটি এমফিল অভিসন্দর্ভ প্রকাশিত হয়। ২০০৭ সালে তার স্মরণে সাপ্তাহিক মুসলিম জাহানের একটি স্মরণ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। ২০০৮ সালে সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে আল্লামা খতিব স্মরণসভা বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক খতিবে মিল্লাত স্মৃতি স্মারক প্রকাশিত হয়।