উবুন্টু (/uːˈbʊntuː/ oo-BUUN-too;) হল দক্ষিণ আফ্রিকার বন্টু উপজাতিদের একটি শব্দ যার অর্থ হল অপরের জন্য মানবতা। এই শব্দটি মানবতাবাদী দর্শন, নৈতিক ভাবাদর্শ, উবুন্টুইজম ও মানবতাবাদী বোঝাতে আশি এবং নব্বইয়ের দশক থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে।
নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় থেকে এই শব্দটি দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে ব্যাপক জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এছাড়া ডেসমন্ড টুটুর লেখার মাধ্যমেও ইংরেজি ভাষাভাষী জনগণের মধ্যেও তা জনপ্রিয়তা লাভ করে।
উবুন্টু শব্দটি দক্ষিণ আফ্রিকায় উনিশ শতকের শুরুর দিক থেকেই আবির্ভাব হতে শুরু করে। বিভিন্ন ধরনের অনুবাদে মানবতা, সদয়গুণ, পরোপকারিতা দয়াশীলতা ইত্যাদি উঠে আসতে থাকে। তবে ব্যকরনগত ভাবে এর উৎপত্তি হয়েছে উন্টু শব্দ থেকে যার অর্থ মানুষ বা ব্যক্তি। এর সাথে উবু (বিশেষ্য, অর্থ মানবতা) উপসর্গটি যোগ করার ফলে শব্দটি দারায় উবুন্টু যার পুরো আর্থ দারায় মানুষের জন্য মানবতা বা অপরের জন্য মানবতা।[২]
উবুন্টু শব্দের অনেক অর্থ বিদ্যমান তবে এর মূল মূল উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকান ভাষাগুলোতেই এর যুতসই সংজ্ঞা পাওয়া যায় না (উবুন্টুর সম্পর্কে সক্ষিন আফ্রিকান এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভূতরা কি মনে করেন তা জানতে একটা জরিপ চালানো হয়েছিল)[৩]। আফ্রিকানদের মতে উবুন্টু হল এমন একটি সমাজ যেখানে সকলকে মানবতার সাথে বিবেচনা করা হয়।
মিচায়েল ওনিইবুচি এজের মতে উবুন্টুর মূল দর্শনকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে- একজন মানুষের সাথে আরেকজনের পার্থক্য, স্বতন্ত্র বিচার ধারা এবং ভিন্ন অবস্থান থাকা সত্ত্বেও অপরের মতামতকে সম্মান করা এবং তার দর্শনকে স্বীকৃতি প্রদান করা। এটি অবশ্যই একটি সৃষ্টিশীল সঙ্গায়ন। মানবতা একটি চারিত্রিক গুন। সমাজের এই পরিবর্তনের মাঝে টিকে থাকতে হলে প্রত্যেকের প্রয়োজন প্রত্যেককে। এই দর্শনের মতে আমরা একে অপরের সৃষ্টিশীলতা ভাগাভাগি করে নেই এক সাথে চলব বলে। তুমি আছ বলে আমি আছি, আর অবশ্যই আমি আছি বলে তুমি আছ, শত পার্থক্য এবংমূল্যবোধ থাকা সত্ত্বেও আমি একাই কোন একক স্বত্বা নই।[৪]