গণিতে উৎপাদকে বিশ্লেষণ বা উৎপাদকীকরণ বলতে একটি সংখ্যা বা কোনো গাণিতিক বস্তুকে কয়েকটি উৎপাদকের গুণফলরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়, যা সাধারণত একই ধরনের ক্ষুদ্রতর কিংবা সরলতর বস্তু হিসেবে লেখা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, পূর্ণসংখ্যা ১৫ এর বিশ্লেষিত রূপ ৩ × ৫, এবং বহুপদীর একটি বিশ্লিষ্ট রূপ । সাধারণত বাস্তব কিংবা জটিল সংখ্যার ভগ্নাংশকে উৎপাদক হিসেবে গ্রহণ করা মূলত অর্থহীন, যেহেতু স্পষ্টতই যেকোনো কে হিসেবে লেখা যায়, যেখানে । তবে যেকোনো মূলদ সংখ্যা কিংবা মূলদ ফাংশনের লঘিষ্ঠ রূপ লিখে তার হর এবং লবকে পৃথক ভাবে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করে মূল সংখ্যা কিংবা ফাংশনটিকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়।
পূর্ণসংখ্যাকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ সর্বপ্রথম প্রাচীন গ্রিক গণিতবিদদের মাঝে দেখা যায়। তারা সর্বপ্রথম পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্য প্রমাণ করেন, যার বক্তব্য হলঃ প্রত্যেকটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাকে এক বা একাধিক মৌলিক সংখ্যার গুণফল রূপে প্রকাশ করা যাবে, যা পুনরায় আর ১ এর চেয়ে বড় কোন পূর্ণ সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। অধিকন্তু এই উৎপাদকে বিশ্লেষণ, উৎপাদকগুলোর ক্রমকে উপেক্ষা করলে, প্রত্যেকটি সংখ্যার জন্য অনন্য। যদিও পূর্ণসংখ্যা উৎপাদকে বিশ্লেষণ একপ্রকারে গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া,অ্যালগরিদমীয়ভাবে এটি ব্যাপক জটিল এবং সময়সাপেক্ষ, যে ব্যাপারটিকে আরএসএ গুপ্তবিদ্যায় ব্যবহার করে পাবলিক কী ক্রিপ্টোগ্রাফিতে প্রয়োগ করা হয়।
বহুপদী উৎপাদকে বিশ্লেষণও বহুকাল ধরে অধীত হয়েছে। প্রাথমিক বীজগণিতে কোন বহুপদীর উৎপাদকে বিশ্লেষণ এর সমীকরণের মূলগুলো খুঁজে পাওয়ার সমস্যাকে অনেকাংশেই সমাধান করে। ফিল্ড অথবা পূর্ণসংখ্যা সহগবিশিষ্ট বহুপদী সমূহ অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ ধারণ করে। সুনির্দিষ্টভাবে, জটিল সহগ ও এক চলকবিশিষ্ট বহুপদীর উৎপাদক সমূহ অনন্য (ক্রম কে উপেক্ষা করে) যোগাশ্রয়ী বহুপদী: এটি বীজগণিতের মৌলিক উপপাদ্যের একটি সংস্করণ। সে ক্ষেত্রে মূল অনুসন্ধানী অ্যালগরিদমসমূহ ব্যবহার করে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়। কম্পিউটার বীজগণিতের জন্য পূর্ণসাংখ্যিক সহগবিশিষ্ট বহুপদীর উৎপাদকে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রটি মৌলিক। নির্দিষ্ট বলয়ে মূলদ সহগবিশিষ্ট বহুপদী সমূহের উৎপাদকে বিশ্লেষণ করার জন্য অনেক দক্ষ কম্পিউটার অ্যালগরিদম রয়েছে।
অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এমন বিনিময় বলয়কে অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ জগৎ বলা হয়। অনেক সংখ্যা পদ্ধতি, যেমন বীজগাণিতিক পূর্ণসংখ্যার বলয়, অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ জগৎ নয়। তবে বীজগাণিতিক পূর্ণসংখ্যার বলয়সমূহ ডেডিকেট রাজ্যের দুর্বল ধর্ম, আদর্শ মৌলিকে আদর্শ উৎপাদক, কে মেনে চলে।
উৎপাদকে বিশ্লেষণ কোন গাণিতিক বস্তুকে ক্ষুদ্রতর অথবা সরলতর বস্তুর গুণফল রূপে প্রকাশ করাকেও বুঝায়। যেমন প্রত্যেক ফাংশন কে একটি এক-এক ফাংশন ও একটি সার্বিক ফাংশন এর সংযোগ রূপে লেখা যায়। ম্যাট্রিক্সও অনেক ধরনের উৎপাদকে বিশ্লেষণের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, প্রত্যেক ম্যাট্রিক্সের সকল কর্ণভুক্তি ১ বিশিষ্ট নিম্নস্থ ত্রিকোণাকার ম্যাট্রিক্স L এর সঙ্গে উপরস্থ ত্রিকোণাকার ম্যাট্রিক্স U এবং বিন্যাসক ম্যাট্রিক্স P এর গুণফলরূপে একটি অন্যন্য এলইউপি উৎপাদকে বিশ্লেষিত রূপ বিদ্যমান; এটিই গাউসীয় অপসারণের ম্যাট্রিক্স রূপ।
পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্য অনুযায়ী ১ ছাড়া সকল সংখ্যার একটি অনন্য (উৎপাদকগুলোর ক্রম বিবেচনা না করে) মৌলিক সংখ্যার বিশ্লেষিত রূপ রয়েছে, যাকে আর বিশ্লেষণ সম্ভব নয়।
সংখ্যা n এর উৎপাদকে বিশ্লেষণের জন্য এর একটি উৎপাদক q নির্ণয় কিংবা n এর মৌলিকত্ব যাচাইয়ের জন্য একটি অ্যালগরিদম প্রয়োজন। যদি এমন একটি উৎপাদক পাওয়া যায়, তবে অ্যালগোরিদমটি পুনরায় q এবং n / q এর উপর প্রয়োগের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে n এর উৎপাদকে বিশ্লেষণ পাওয়া সম্ভব।[১]
n এর একটি উৎপাদক q, যদি থাকে, খুঁজে পাওয়ার জন্য এটি সকল q এর মান পরীক্ষা করে যেন 1 < q এবং q2 ≤ n হয়। প্রকৃতপক্ষে, যদি r n এর একটি উৎপাদক হয় যেন r2 > n, তবে q = n / r ও n একটি উৎপাদক হবে যখন q2 ≤ n
যদি কেউ ক্রমবর্ধমান হারে q এর মান পরীক্ষা করতে থাকে, তবে প্রথমেই প্রাপ্ত উৎপাদকটি মৌলিক সংখ্যা হওয়া উচিত এবং সহগুণক r = n / q এর q এর চেয়ে ছোট কোন উৎপাদক থাকতে পারবে না। সম্পূর্ণ বিশ্লেষিত রূপ পাওয়ার জন্য এটি r এর, q এর চেয়ে ছোট এবং √r এর চেয়ে বড় নয়, এমন উৎপাদক খুঁজতে থাকে।
এই পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য সকল q মান পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। মূলনীতি অনুযায়ী, এটি শুধুমাত্র মৌলিক উৎপাদকসমূহকেই গ্রহণ করে। এর ফলে একটি মৌলিক সংখ্যার সারণি প্রয়োজন হয় যা ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনির মাধ্যমে প্রস্তুত করা সম্ভব। যেহেতু উৎপাদকে বিশ্লেষণের এই পদ্ধতিটি ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনির মতো একই কাজ করে, তাই যে সংখ্যার মৌলিকত্বে সংশয় রয়েছে তাকে পরীক্ষা করার মাধ্যমেই দক্ষভাবে কাজটি সম্পন্ন করা যায়। অর্থাৎ কেউ ২, ৩, ৫ এবং ৫ এর ক্ষুদ্রতর সংখ্যা, যেসব সংখ্যার শেষ অঙ্কটি ১,৩,৭,৯ এবং অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৩ এর গুণিতক নয় এমন সংখ্যা দ্বারা পরীক্ষা করতে পারে।
এই পদ্ধতিটি ছোট কোন সংখ্যার জন্য ভালো কাজ করলেও বড় সংখ্যার জন্য তা সময় সাপেক্ষ উদাহরণস্বরূপ - পঞ্চম ফার্মা সংখ্যা একটি মৌলিক সংখ্যা নয় এটি আবিষ্কার করতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে যেসব সংখ্যায় ১০টি অঙ্ক রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য ১০০০০বার ভাগের প্রয়োজন হবে।
এছাড়াও আরো দক্ষ উৎপাদকে বিশ্লেষণ অ্যালগরিদম রয়েছে। তবে বর্তমান প্রয়োজনের তুলনায় সেগুলো খুবই অদক্ষ কারণ এখন অত্যন্ত শক্তিশালী কম্পিউটারের দ্বারাও দুটি দৈবনির্বাচিত মৌলিক সংখ্যার মাত্র ৫০০ অঙ্ক বিশিষ্ট গুণফলকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটিই মূলত আরএসএ গুপ্তবিদ্যার নিরাপত্তার মূলভিত্তি, যা ব্যাপক হারে ইন্টারনেট যোগাযোগে ব্যবহৃত হয়।
মৌলিক সংখ্যার সাহায্যে n = ১৩৮৬ কে বিশ্লেষণের জন্য:
বীজগণিতের মূলভিত্তি হল বিভিন্ন রাশিকে ব্যবস্থাপনা করা। বিভিন্ন কারণে উৎপাদকে বিশ্লেষণ রাশি ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম পদ্ধতি। যদি কোন সমীকরণকে উৎপাদক আকার E⋅F = 0 এ প্রকাশ করা যায়, তবে সমীকরণটির সমাধান মূলত দুটি স্বাধীন সমস্যা E = 0 এবং F = 0 এর সমাধানে বিভক্ত হয়ে যায়। যখন কোনো রাশিকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়, তখন উৎপাদকগুলোগুলো প্রায়ই সরল হয় এবং সমস্যা সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ ১৬ টি গুণন, চারটি বিয়োগ এবং তিনটি যোগ সংবলিত
রাশি থেকে অনেকটাই সহজ দুটো গুণন এবং তিনটি বিয়োগ সংবলিত উৎপাদকে বিশ্লেষণ আকারে প্রকাশ করা যায়:
তবে, বিশ্লেষিত রূপটির মাধ্যমে রাশিগুলো দ্বারা গঠিত বহুপদীর সরাসরি x এর সাপেক্ষে মূলগুলো প্রদান করেন,যেগুলো হলঃ x = a,b,c। অন্যদিকে , উৎপাদকে বিশ্লেষণ সবসময় সম্ভব নয় এবং যখন সম্ভব তখন সবসময়ই উৎপাদকগুলো সরল আকারের নাও হতে পারে।উদাহরণস্বরূপ, কে দুটি মৌলিক উৎপাদক এবং এর গুণফল আকারে প্রকাশ করা যায়।
উৎপাদকে বিশ্লেষণ করার জন্য অনেক পদ্ধতিই আবিষ্কৃত হয়েছে। নিচে তার কিছু বর্ণনা করা হলোঃ
বীজগাণিতিক সমীকরণ সমাধান কে উৎপাদকে বিশ্লেষণ এর সমস্যারূপে দেখা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে বীজগণিতের মৌলিক উপপাদ্যকে নিম্নোক্তভাবে বর্ণনা করা যেতে পারেঃ
n ঘাত এবং জটিল সহগবিশিষ্ট যেকোনো, x এর বহুপদী কে n সংখ্যক যোগাশ্রয়ী উৎপাদক (i = 1, ..., n এর জন্য) রূপে প্রকাশ করা যেতে পারে, যেখানে হল বহুপদীটির মূল।[২]
আবেল-রুফিনি উপপাদ্য অনুসারে, যদি এসব ক্ষেত্রে উৎপাদকে বিশ্লেষণ এর গঠন জানাও থাকে, তবুও সাধারণভাবে nতম মূলের সাপেক্ষে aiগুলো নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। অধিকাংশ সময়েই, সর্বোত্তম উপায় হল মূল অনুসন্ধানী অ্যালগরিদম এর সাহায্যে মূল এর নিকটতম মানসমূহ নির্ণয় করা।
রাশিকে বীজগাণিতিকভাবে সরলীকরণ (বিশেষ করে সমীকরণসমূহকে) সম্ভবত নবম শতাব্দীতে মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল খোয়ারিজমির বিখ্যাত গ্রন্থ আল জাবর ওয়াল মুকাবালার মাধ্যমে আবির্ভাব হয়, যেখানে দু'ধরনের ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছিল। তবে হ্যারিয়টের এর কাজ তার মৃত্যুর দশ বছর পরে ১৬৩১ সালে প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়নি। [৩]
তার গ্রন্থ Artis Analyticae Praxis ad Aequationes Algebraicas Resolvendas এর প্রথম পরিচ্ছদে হ্যারিয়ট একপদী, দ্বিপদী, ত্রিপদী এবং বহুপদীসমূহের যোগ, বিয়োগ,গুন, ভাগের সারণী অঙ্কন করেছিলেন। অতঃপর, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে, তিনি একটি সমীকরণ aa − ba + ca = + bc প্রতিষ্ঠা করেন এবং উৎপাদকে বিশ্লেষণ, (a − b)(a + c), প্রদানের মাধ্যমে তিনি দেখান যে এই সমীকরণটি তার প্রদত্ত গুণের আকারের সঙ্গে মিলে যায়।[৪]
সমষ্টি কিংবা সমষ্টি আকারে রূপান্তর করা যায়, এমন যে কোন রাশির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। সুতরাং এই পদ্ধতি গুলো প্রায় বহুপদী উপর প্রয়োগ করা হয়, এমনকি যখন পথ গুলো একপদী নয় অর্থাৎ চলক এবং ধ্রুবকের গুণফল আকারে থাকে, তখনও এগুলো প্রয়োগ করা সম্ভব।
কোন সমষ্টির সকল পদগুলো একটি সাধারণ সংখ্যার গুণফল হতে পারে। এক্ষেত্রে গুণের বণ্টন বিধি অনুযায়ী উৎপাদকটিকে বাইরে বের করে নেওয়া যায়। যদি এমন একাধিক সাধারণ উৎপাদক থাকে, তবে বৃহত্তম উৎপাদকটি দিয়ে ভাগ করা হয়। এছাড়াও যদি পূর্ণসাংখ্যিক সহগ থাকে তবে সবগুলোর গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক বের করে নিয়ে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ [৫]
কারণ ৬,৮ এবং ১০ এর গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক ২ এবং দ্বারা সবগুলো পদ নিঃশেষে বিভাজ্য।
উৎপাদকে বিশ্লেষণ এর অন্য আরেকটি পদ্ধতি হলো গুচ্ছীকরণ। যেমন
রাশিটির উৎপাদকে বিশ্লেষণ করার সময় লক্ষ্য করা যায় যে, প্রথম দুটি পদের সাধারণ উৎপাদক x, এবং শেষ পদদ্বয়ের সাধারণ উৎপাদক y। ফলে
অতঃপর পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে এদের সাধারণ উৎপাদক x + 5, এবং উৎপাদকে বিশ্লেষিতরূপ
সাধারণভাবে দুটি দ্বিপদীর গুণফল রূপে পাওয়া চার পদ বিশিষ্ট কোন রাশির ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত পদ্ধতিটি প্রযোজ্য। তবে সব ক্ষেত্রে না হলেও এটি অনেক জটিল ক্ষেত্রেও কাজ করতে পারে।
কখনো কখনো কয়েকটি পদকে একসাথে একটি গুচ্ছে পরিণত করার মাধ্যমে কিছু বিশেষ ধরনের বিন্যাস খুঁজে পাওয়া যায়। অতঃপর কোন একটি পদ যোগ করার মাধ্যমে ওই বিন্যাসটি সম্পূর্ণ করা হয় এবং বিয়োগ করার মাধ্যমে রাশিটির মান অপরিবর্তিত রাখা হয়।
এর একটি ব্যবহার হলো দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের জন্য পূর্ণ বর্গীকরণ।
অন্য আরেকটি উদাহরণ হল এর উৎপাদকে বিশ্লেষণ। যদি এতে কাল্পনিক সংখ্যা আবির্ভাব ঘটানো হয় যা সাধারণত i দ্বারা নির্দেশ করা হয়, তবে বর্গের পার্থক্য বিধি অনুযায়ী:
তবে বাস্তব সহগের মাধ্যমেও এই কাজটি সম্পাদন করা যায়। যোগ ও বিয়োগ করার মাধ্যমে এবং তিনটি পদকে একত্র করার মাধ্যমে,দ্বিপদীর বর্গ লক্ষ্য করা যায়:
যোগ এবং বিয়োগ এর মাধ্যমে বিশ্লেষিত রূপটি দাঁড়ায়
এসব উৎপাদকে বিশ্লেষণ শুধুমাত্র জটিল সংখ্যার জন্যই যে প্রযোজ্য তা নয় বরং যেকোনো গাণিতিক ফিল্ডের জন্য প্রযোজ্য যেখানে ১, ২ অথবা -২ একটি পূর্ণবর্গসংখ্যা। সসীম ফিল্ডে দুটি পূর্ণবর্গ সংখ্যার গুণফল একটি পূর্ণবর্গ; এর ফলে বলা যায় যে, বহুপদীটি প্রত্যেক মৌলিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজনের পর প্রাপ্ত ভাগশেষ ;যদিও এটি মৌলিক বহুপদী। উদাহরণস্বরূপ
অনেক অভেদ সমষ্টি এবং গুণফলের মাঝে সমতা প্রদান করে। উপর্যুক্ত পদ্ধতিগুলো কিছু অভেদের সমষ্টিকে একটি রাশিতে লেখার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে যা পরবর্তীতে গুণফল দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যায়।
নিচে কিছু অভেদ রয়েছে যাদের বাম পক্ষকে বিন্যাস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, অর্থাৎ এসব অভেদে উপস্থিত E এবং F চলকগুলো সংশ্লিষ্ট রাশির যেকোনো উপরাশিকে প্রতিনিধিত্ব করে) [৬]
এককের nতম মূলগুলো হল জটিল সংখ্যা যার প্রত্যেকেই বহুপদীটির বীজগাণিতিক মূল। ফলে, এর জন্য এগুলো হল
এর ফলে বলা যায় যে, যেকোনো দুটি রাশি E এবং F এর জন্য:
যদি E এবং F বাস্তব রাশি হয়, তবে এদের বাস্তব উৎপাদকে বিশ্লেষণ করতে গেলে প্রত্যেকটি অনুবন্ধী জটিল সংখ্যা জোড়াকে এদের গুণফল দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে। যেহেতু এর অনুবন্ধী জটিল সংখ্যা এবং
তাই একে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করতে হবে (n – k কিংবা n + 1 – k তে k পরিবর্তন করে অগ্রসর হয়ে) এবং সাধারন ত্রিকোণমিতিক সূত্রাবলী প্রয়োগ করতে হবে:
এই বিশ্লেষিত রূপে কোসাইনগুলো হল বীজগাণিতিক সংখ্যা এবং একে n-তম মূল দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব(এটি সম্ভব কারণ তাদের গ্যালোয়া গ্রুপ চক্রীয়)। তবে n এর মান বড় হলে এসব মূল ব্যবহার করা ব্যাপক জটিল হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ,
প্রায়ই মূলদ সহগবিশিষ্ট উৎপাদকে বিশ্লেষণের প্রয়োজন পড়ে। সাইক্লোটোমিক বহুপদীতে এই ধরনের উৎপাদকে বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়। সমষ্টি এবং অন্তর কিংবা ঘাতের উৎপাদক বিশ্লেষণের প্রকাশের জন্য আমাদের বহুপদী সমগোত্রীয় প্রকাশরীতির প্রয়োজন পড়ে : যদি এর সমগোত্রীয় হলো দ্বিচলকীয় বহুপদী । তখন
যেখানে n এর সকল উৎপাদক কিংবা 2n এর সে সকল উৎপাদক যারা n কে নিঃশেষে বিভাজ্য করে না তাদের গুণফল এবং হল n তম সাইক্লোটোমিক বহুপদী।
উদাহরণস্বরূপ
যেহেতু ৬ এর সকল উৎপাদক ১,২,৩,৬ এবং ১২ এর সকল উৎপাদক যারা ৬ টি নিঃশেষে বিভাজ্য করে না তারা হল ৪ এবং ১২।
বহুপদীর ক্ষেত্রে উৎপাদকে বিশ্লেষণ বীজগাণিতিক সমীকরণসমূহ সমাধানের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সম্পৃক্ত। একটি বীজগাণিতিক সমীকরণ হল , যেখানে
যাতে x এর একটি বহুপদী P(x) এবং । এই সমীকরণের একটি সমাধান (সমীকরণের মূলও বলা হয়) হল x এর এমন মান r, যেন হয়।
যদি দুটি বহুপদীর গুণফল আকারে Pএর বিশ্লেষিত রূপ হয়, তবে P এর মূলগুলো হল Q এর মূলসমূহ এবং R এর মূলসমূহের সংযোগ। এভাবে P এর সমাধান Q ও R এর সমাধান দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
বিপরীতক্রমে ভাগশেষ উপপাদ্যের বক্তব্য হলো যদি r দ্বারা P নিঃশেষে বিভাজ্য হয়, তবে P কে আকারে লেখা সম্ভব, যেখানে Q(x) হল P কে x – r দ্বারা ইউক্লিডীয় ভাগ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত ভাগফল।
যদি P এর সহগসমূহ বাস্তব অথবা জটিল হয়, তবে বীজগণিতের মৌলিক উপপাদ্য অনুযায়ী, P এর বাস্তব অথবা জটিল মূল রয়েছে। পৌনঃপুনিক ভাবে ভাগশেষ উপপাদ্য ব্যবহার করে পাওয়া যায়
যেখানে P এর বাস্তব কিংবা জটিল মূল গুলো হল ।এই বিশ্লেষিত রূপটি (ক্রম উপেক্ষা করে) অনন্য।
যদি P এর মূলগুলো বাস্তব হয় তবে বাস্তব সহগবিশিষ্ট উৎপাদক পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উৎপাদকে বিশ্লেষণের পর দেখা যেতে পারে যে কিছু কিছু উৎপাদকের দ্বিঘাত রয়েছে। এই বিশ্লিষ্ট রূপকে খুব সহজেই ব্যবস্থাপনা করা যায়। প্রকৃতপক্ষে, যদি P এর একটি জটিল মূল r = a + ib হয় তবে এর অনুবন্ধী জটিল সংখ্যা s = a - ib ও P এর একটি মূল হবে। ফলে এদের গুণফল
টি P এর উৎপাদক, যার বাস্তব মান রয়েছে। এই গুচ্ছীকরণ পদ্ধতিটি ততক্ষণ পর্যন্ত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না বিশ্লিষ্ট রুপটি বাস্তব উৎপাদকের এক কিংবা দ্বিঘাতসম্পন্ন হয়।
এই বাস্তব কিংবা জটিল উৎপাদকে বিশ্লেষণের জন্য বহুপদী টির মূলগুলো জানা থাকা প্রয়োজন। সাধারণভাবে সেগুলো সরাসরি নির্ণয় করা সম্ভব হয় না এবং শুধুমাত্র আসন্ন মান পাওয়া যেতে পারে। এই উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা অসংখ্য অ্যালগরিদম এর জন্য দেখুন মূল অনুসন্ধানী অ্যালগরিদম।
বাস্তবে পাওয়া বেশিরভাগ বীজগাণিতিক সমীকরণ পূর্ণসংখ্যা কিংবা মুলদ সহগবিশিষ্ট এবং এই ধরনের উৎপাদক নির্ণয় করার প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্য ব্যবহার করা যেতে পারে অর্থাৎ পূর্ণসংখ্যা কিংবা মূলদ সহগবিশিষ্ট কোন বহুপদীর অনন্য বিশ্লেষণ ধর্ম রয়েছে। আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, মূলদ সহগবিশিষ্ট প্রত্যেক বহুপদীকে
উৎপাদকে বিশ্লেষণ করার জন্য অনেক দক্ষ অ্যালগরিদম রয়েছে, যেগুলো বেশিরভাগ কম্পিউটার বীজগণিত সিস্টেমে প্রয়োগ করা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, হাতে কলমে নির্ণয়ের জন্য অ্যালগরিদম গুলো খুবই জটিল। উপরে বর্ণিত সাধারণ পদ্ধতি গুলোর পাশাপাশি আরো সামান্য কিছু পদ্ধতি আছে যেগুলো নিম্ন ঘাত এবং কিছু অশূন্য সহগবিশিষ্ট বহুপদীর জন্য প্রযোজ্য। পরবর্তী পরিচ্ছেদে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রত্যেক মুলদ সহগবিশিষ্ট বহুপদী কে একটি মূলদ সংখ্যা এবং একটি পূর্ণসংখ্যার সহগ ও ধনাত্মক মুখ্য সহগবিশিষ্ট মৌলিক (যার সহগগুলোর গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক ১) বহুপদীর গুণফল আকারে অনন্য উপায়ে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ:
এই বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মূলদ সংখ্যাটিকে বলা হয় ধ্রুবক এবং মৌলিক বহুপদীটিকে বলা হয় মৌলিক অংশ। নিম্নোক্তভাবে এই উৎপাদকে বিশ্লেষণ নির্ণয় করা যায় : প্রথমত বহুপদীটির একটি পূর্ণসংখ্যা q দ্বারা ভাগফল পাওয়ার জন্য সকল সহগকে সাধারণ উৎপাদকের সাথে গুণফল আকারে প্রকাশ করতে হবে। এরপর এই বহুপদীর সবগুলোকে গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক p দ্বারা ভাগ করে মৌলিক অংশ এবং ধ্রুবক পাওয়া যায়। সর্বশেষে প্রয়োজন সাপেক্ষে p এবং সকল সহগ এর চিহ্ন পরিবর্তন করতে হবে।
এই উৎপাদকে বিশ্লেষণ এর ফলে মূল বহুপদীর তুলনায় প্রাপ্ত রূপটি অনেক বৃহৎ হতে পারে, (বিশেষ করে যখন অনেকগুলো সহমৌলিক উৎপাদক থাকে) তবুও পরবর্তী বিশ্লেষণ এর জন্য এটি খুবই ফলপ্রসূ।
ভাগশেষ উপপাদ্যের বক্তব্য হল যদি কোন বহুপদী
(অর্থাৎ P(r) = 0) এর একটি মূল r হয় তবে বহুপদীটির একটি উৎপাদকে বিশ্লেষিত রূপ
যেখানে
যাতে i = 1, ..., n – 1 এর জন্য এবং
হয়।
যখন দেখা মাত্র কিংবা কিছু অতিরিক্ত তথ্য ব্যবহার করে বহুপদীটির মূল সম্পর্কে জানা যায় তখন এটি ফলপ্রসূ। উপর্যুক্ত সূত্রের পরিবর্তে বহুপদী ভাগ পদ্ধতি ব্যবহার করে Q(x) নির্ণয় করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ বহুপদী পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে এর সহগ গুলোর সমষ্টি ১। ফলে বহুপদীটির একটি মূল r = 1। যেহেতু r + 0 = 1, এবং , ফলে
শুধুমাত্র মূলদ সহগবিশিষ্ট বহুপদীর মূল পাওয়া যায়। মৌলিক অংশ-ধ্রুবক উৎপাদকে বিশ্লেষণ পদ্ধতি পূর্ণসাংখ্যিক সহগবিশিষ্ট বহুপদীর এই মূলদ মূল খোঁজার কাজকে অনেকটাই সহজ করে দেয়, কেননা এতে সহগ সমূহের গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক ১। যদি এমনই একটি বহুপদী
এর একটি মুলদ মূল হয় তবে ভাগশেষ উপপাদ্য অনুসারে
যেখানে উভয় উৎপাদকেরই পূর্ণসংখ্যা সহগ রয়েছে (কারণ দ্বারা P(x) এর ভাগফলের জন্য উপর্যুক্ত সূত্রের সাহায্যে বলা যায় যে Q এর পূর্ণ সংখ্যা সহগ রয়েছে)
উপর্যুক্ত সমীকরণে ধ্রুব সহগসমূহ এবং n ঘাতবিশিষ্ট সহগসমূহের তুলনায় দেখা যায় যে, যদি লঘিষ্ঠ রূপে কোন মূল হয়, তবে এর একটি উৎপাদক q এবং এর একটি উৎপাদক p। সুতরাং p এবং q এর সসীম সংখ্যক সম্ভাবনা রয়েছে যা পদ্ধতিগতভাবে পরীক্ষা করা যায়।[৭]
উদাহরণস্বরূপ যদি
বহুপদীর একটি মূলদ মূল হয় তবে p অবশ্যই ৬ কে নিঃশেষে বিভাজ্য করবে অর্থাৎ এবং q অবশ্যই ২ কে নিঃশেষে বিভাজ্য করবে অর্থাৎ অধিকন্তু যদি x < 0, তবে বহুপদীটির প্রত্যেকটি পদ ঋণাত্মক এবং যার ফলে কোন মূল ঋণাত্মক হতে পারবে না। অর্থাৎ
অবশ্যই সত্য হতে হবে। সরাসরি হিসাব করলে দেখা যায় যে ব্যতীত অন্য কোনো মূলদ মূল নেই। এই উপপাদ্য প্রয়োগ করে পাই,
দ্বিঘাত বহুপদীর জন্য উপর্যুক্ত পদ্ধতিটি অবলম্বন করে, উৎপাদকে বিশ্লেষণের এসি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয় [৮]
একটি দ্বিঘাত ও পূর্ণসংখ্যা সহগবিশিষ্ট বহুপদী
বিবেচনা করা যাক যদি এর কোন মূল্য মূল থাকে তবে এর হরটি অবশ্যই a কে নিঃশেষে বিভাজ্য করবে। ফলে একে সম্ভাব্য লঘিষ্ঠ রূপ আকারে লেখা যায়। ভিয়েটার সূত্রানুযায়ী অন্য মুলটি
যেখানে ফলে দ্বিতীয় মূলটিও মূলদ এবং ভিয়েটারের দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী
অর্থাৎ
যদি কোন মূলদ মূল থাকে তবে সবগুলো ক্রমজোড় পরীক্ষা করলে যেগুলোর গুণফল ac হবে, সেগুলোই সমীকরণের মূল। উদাহরণস্বরূপ
এবং বিশ্লিষ্ট রূপটি
যেকোনো একচলকীয় দ্বিঘাত সমীকরণ কে দ্বিপদী উপপাদ্য:
অনুযায়ী উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায় যেখানে এবং বহুপদীটির দুটি মূল।
যদি a, b, c প্রত্যেকেই বাস্তব হয়, তবে উৎপাদকসমূহ বাস্তব হবে যদি এবং কেবল যদি নিশ্চায়ক অঋণাত্মক হয়। অন্যথায়, দ্বিপদী বহুপদীটি অ-ধ্রুবক বাস্তব উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায় না।
যখন সহগ দুইটি পৃথক বৈশিষ্ট্যযুক্ত কোনও ক্ষেত্রের অন্তর্গত হয় (বিশেষত, একটি বিজোড়সংখ্যক উপাদানবিশিষ্ট সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রের সহগের জন্য) দ্বিপদী উপপাদ্যটি প্রযোজ্য হয়। [৯]
ত্রিঘাত ফাংশন এবং চতুর্ঘাত ফাংশন এর মূলের জন্যও সূত্র রয়েছে, যা সাধারণভাবে ব্যবহারিকভাবে জন্য খুব জটিল। আবেল-রুফিনি উপপাদ্যটি প্রমাণ করে যে, পাঁচ বা ততোধিক মাত্রার বহুপদীর জন্য কোনও মৌলিক মূল সূত্র নেই।
এটি তখনই ঘটে যখন বহুপদীর মূলের সঙ্গে সহগসমূহের সম্পর্ক জানা থাকে। গ্যালোয়ার তত্ত্বটি ভিয়েটার সূত্রসহ মূল এবং সহগসমূহের সম্পর্কের পদ্ধতিগত তত্ত্ব।
এখানে বহুপদীটির দুটি মূল এবং যাতে
যেখানে Qও একটি বহুপদী।
এর ফলে এবং এর সাধারণ মূল । ফলে এটি বহুপদীদ্বয়ের গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক। এতে বলা যায় যে এই গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়কটি একটি অধ্রুব বহুপদী। ইউক্লিডীয় অ্যালগরিদমের সাহায্যে এই গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক নির্ণয় করা সম্ভব।
উদাহরণস্বরূপ,[১০] যদি জানা থাকে যে: এর দুটো মূল রয়েছে যাদের সমষ্টি শূন্য তবে and এর উপর ইউক্লিডীয় অ্যালগরিদম প্রয়োগ করা যায়। প্রথম ধাপটি হল কে দ্বারা ভাগ করা যাতে ভাগশেষ থাকে
অতঃপর কে দ্বারা ভাগ করলে নতুন ভাগশেষ শূন্য এবং ভাগফল x – 5 পাওয়া যাবে। ফলে সম্পূর্ণ উৎপাদকে বিশ্লেষণ
কোন ক্ষেত্রস্থিত পূর্ণ সংখ্যা এবং বহুপদীগুলোর অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ ধর্ম রয়েছে অর্থাৎ প্রত্যেক অশূন্য উপাদানকে একটি বিপরীতক (একটি একক, পূর্ণ সংখ্যার ক্ষেত্রে ১) এবং একটি মৌলিক উপাদান ( পূর্ণ সংখ্যার ক্ষেত্রে মৌলিক সংখ্যা) গুণফল আকারে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়। যেসব সমাকলন জগৎ এই ধর্ম ধারণ করে তাদেরকে অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ জগৎ (ইউএফডি) বলা হয়। ইউএফডিগুলোতে গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক বিদ্যমান থাকে এবং বিপরীতক্রমে, গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক আছে এমন সকল সমাকলন জগতকে ইউএফডি বলা হয়।
ইউক্লিডীয় জগৎ হল যে সমাকলন জগতে পূর্ণ সংখ্যার মধ্যে ইউক্লিডীয় বিভাজন সংজ্ঞায়িত প্রত্যেকটি ইউক্লিডীয় জগৎ একেকটি ইউএফডি।
ইউক্লিডীয় জগতে গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক নির্ণয় এর জন্য ইউক্লিডীয় অ্যালগরিদম সংজ্ঞায়িত আছে। তবে উৎপাদকে বিশ্লেষণ অ্যালগরিদম নাও থাকতে পারে। কোন একটি গাণিতিক ক্ষেত্র F এর কোনও উৎপাদকে বিশ্লেষণ অ্যালগোরিদম থাকবে না যদি একটি একচলকীয় বহুপদী হয়।
বীজগাণিতিক সংখ্যাতত্ত্বে, দিওফান্তসীয় সমীকরণগুলোর অধ্যয়ন ১৯ শতাব্দীতে পূর্ণসংখ্যার সাধারণীকরণের সূচনা করে গণিতবিদদের নেতৃত্ব দিয়েছিল। গাউসীয় পূর্ণসংখ্যা এবং আইজেনস্টাইন পূর্ণসংখ্যা বীজগাণিতিক পূর্ণসংখ্যার প্রথম বলয় হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, যা সাধারণ পূর্ণসংখ্যার সাথে প্রধান আদর্শ ডোমেন হিসাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, এবং এভাবে স্বতন্ত্র উৎপাদকে বিশ্লেষণ ধর্ম রয়েছে।
দুর্ভাগ্যবশত, শীঘ্রই দেখা যায় যে বীজগাণিতিক পূর্ণসংখ্যার অধিকাংশ বলয়ই মূখ্য নয় এবং অনন্য বিশ্লেষিত রূপ থাকে না। এর সবচেয়ে সরল উদাহরণ হল যাতে
এবং এই উৎপাদকগুলো সবাই মৌলিক উপাদান।
অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণের ঘাটতি দিওফান্তসীয় সমীকরণসমূহ সমাধান করার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। উদাহরণস্বরূপ ফার্মার শেষ উপপাদ্যের অনেক ভুল প্রমাণ (যাতে সম্ভবত ফার্মার,আমি একটি দারুণ প্রমাণ পেয়েছি কিন্তু এই মার্জিনটি তার জন্য যথেষ্ট নয়ও অন্তর্ভুক্ত) অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছিল।
দেদেকিন্দ এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে দেন এবং প্রমাণ করেন যে, প্রত্যেকটা বীজগাণিতিক পূর্ণসংখ্যার বলয়ের অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণ রয়েছে: এই সব বলয়ের প্রত্যেকটি আদর্শ বলয় একাধিক মৌলিক আদর্শের গুণফল এবং ক্রমকে উপেক্ষা করলে এটি অনন্য। যে সমস্ত সমাকলন জগতের এই অনন্য বিশ্লিষ্টতার ধর্ম রয়েছে তাদেরকে দেদেকিন্দ জগৎ বলা হয়। তাদের অনেক সুন্দর বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদেরকে বীজগাণিতিক সংখ্যাতত্ত্বের মূল করে তোলে।
মেট্রিক্স বলয়গুলোর কোন বিনিময়যোগ্যতা নেই এবং এদের কোন অনন্য উৎপাদকে বিশ্লেষণও নেই : সাধারণভাবে কোনো ম্যাট্রিক্স বিভিন্ন উপায়ে দুটি ম্যাট্রিক্স এর গুণফল আকারে লেখা সম্ভব। ফলে উৎপাদকে বিশ্লেষণ সমস্যাটি নির্দিষ্ট ধরনের উৎপাদক খোঁজার সমস্যায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ এলইউ বিভাজন পদ্ধতিতে একটি মেট্রিক্সকে নিম্ন ত্রিকোণ মেট্রিক্স ও একটি উচ্চ ত্রিকোণ মেট্রিক্স এর গুণফল্রূপে পাওয়া যায়। যেহেতু এটি সর্বদা সম্ভব নয়,তাই "এলইউপি বিভাজন" পদ্ধতি বিবেচনা করতে হয় যেখানে তৃতীয় উৎপাদক হিসেবে বিন্যাস ম্যাট্রিক্স থাকে।
সাধারণ কিছু ম্যাট্রিক্স উৎপাদকে বিশ্লেষণের জন্য দেখুন ম্যাট্রিক্স বিভাজন।
যৌক্তিক ম্যাট্রিক্স দ্বিমিক সম্পর্ককে উপস্থাপন করে এবং ম্যাট্রিক্স গুণন এই সম্পর্ককে সংযোজিত করে।উৎপাদকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে ম্যাট্রিক্স বিভাজন বিভিন্ন সম্পর্ককে ( যেমন দ্ব্যপক্ষেকীয়) গাণিতিক রূপ দেয়।
|তারিখ=
(সাহায্য)
বীজগণিত
বীজগণিত • মেট্রিক্স • নির্ণায়ক • বহুপদী • বীজগাণিতিক সমীকরণ • ফিল্ড • গ্যালোয়ার তত্ত্ব • যোগাশ্রয়ী জগৎ • রিং • সহযোগী বীজগণিত • বিনিমেয় রিং • ন্যোথারীয় রিং • বহুপদীর রিং • ঘাত ধারার রিং • দ্বিঘাত বহুপদী • ক্লিফোর্ড বীজগণিত • অন্তরক রিং • ভিট ভেক্টর • মান আরোপন • আদেলীয় গ্রুপ • কেলি বীজগণিত • জর্ডান বীজগণিত • মডিউল • হোমোলজীয় বীজগণিত • হপ্ফ্ বীজগণিত |