ঊষা গাঙ্গুলি | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ঊষা পাণ্ডে ২০ আগস্ট ১৯৪৫ কানপুর, উত্তর প্রদেশ, ভারত |
মৃত্যু | ২৩ এপ্রিল ২০২০ | (বয়স ৭৪)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | মঞ্চ অভিনেত্রী, পরিচালক, কর্মী |
কর্মজীবন | ১৯৭০-২০২০ |
পরিচিতির কারণ | রঙ্গকর্মী গ্রুপ থিয়েটার (প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক) |
দাম্পত্য সঙ্গী | কমলেন্দু গাঙ্গুলি |
সন্তান | হীরকেন্দু গাঙ্গুলি |
ওয়েবসাইট | https://www.ushaganguli.com |
ঊষা গাঙ্গুলি (বিবাহের পূর্বে 'ঊষা পাণ্ডে') (২০ আগস্ট ১৯৪৫ - ২৩ এপ্রিল ২০২০) ছিলেন একজন ভারতীয় পরিচালক-অভিনেত্রী এবং সক্রিয় সমাজকর্মী, যিনি ১৯৭০ এবং ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের দশকে কলকাতা শহরে হিন্দি থিয়েটারের জন্যে পরিচিত। তিনি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে রঙ্গকর্মী গ্রুপ থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন, যারা মহাভোজ, রুদালি, কোর্ট মার্শাল এবং অন্তর্যাত্রার মতো নাটকগুলো প্রস্তুত করেছিলেন।[১][২][৩] এই নাটক ছাড়াও পদাতিক-এর শ্যামানন্দ জালান (১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত), তিনি কলকাতার একমাত্র হিন্দি থিয়েটার পরিচালক যেখানে অনেকটা বাংলায় সংলাপ বলা চালু ছিল।[৪][৫]
১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় সংগীত, নৃত্য এবং নাটকের আকাদেমি, সংগীত নাটক আকাদেমি থেকে ঊষা গাঙ্গুলি সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৬] এছাড়া গুড়িয়া ঘর নাটকে অভিনয়ের জন্যে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মানও অর্জন করেছিলেন [১]
ঊষা পাণ্ডে রাজস্থানের যোধপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট।[৭][৮] তার পরিবার উত্তর প্রদেশ রাজ্যের নার্ভা গ্রামে থাকত। তিনি ভরতনাট্যম্ নৃত্য শিক্ষা সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং পরবর্তীতে কলকাতা শহরে আসেন। কলকাতার শ্রী শিক্ষায়তন কলেজ-এ তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। স্নাতকোত্তর স্তরে তিনি হিন্দি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।[৯]
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজে একজন শিক্ষিকা হিসেবে ঊষা গাঙ্গুলি তার কর্মজীবন শুরু করেন, যেটা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত। ওই একই বছর তিনি সংগীত কলা মন্দিরের সঙ্গে অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং তার প্রথম অভিনয় হল, মিট্টি কি গাড়ি (শূদ্রক লিখিত 'মৃচ্ছকটিকম' ভিত্তিক) (১৯৭০), যেখানে তিনি নটী বসন্তসেনার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।[১০] তিনি ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করা পর্যন্ত কলকাতার পাশাপাশি ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটিতে একজন হিন্দি লেকচারারের শিক্ষকতা চালিয়ে যান।[১১]
১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে তিনি রঙ্গকর্মী নামে এক থিয়েটার গ্রুপ গঠন করেন।[১০] প্রথম দিকে একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তালিম নেওয়ার সময় এই গোষ্ঠী বাইরের পরিচালকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, যেমন 'মা'-এর পরিচালক অ্যানবেস, ইবসেন-এর এ ডল'স হাউস অনুসরণে তৃপ্তি মিত্র পরিচালিত 'গুড়িয়া ঘর'; তিনি নিজে নাট্য পরিচালনার আগে পর্যন্ত রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত এবং বিভাস চক্রবর্তির পাশাপাশি তৃপ্তি মিত্র এবং মৃণাল সেনের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
তিনি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের দশকে তার পরিচালনর কাজ শুরু করেন এবং অল্পদিনের মধ্যেই তার কর্মচাঞ্চল্যের ধারা এবং নবীন প্রজন্মকে নিয়ে শৃঙ্খলাবদ্ধ ঐকতানে বড়ো ধরনের পরিবর্তন এনে শহরের হিন্দি থিয়েটারে একটা পুনরুত্থান ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার গুরুত্বপূর্ণ নাট্যকর্মগুলো হল: ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের মনু ভাণ্ডারি লিখিত উপন্যাস ভিত্তিক মহাভোজ (গ্রেট ফিস্ট), ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে রত্নাকর মতকারি কৃত লোককথা (ফোকটেল), ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে নাট্যকার মহেশ এলকুঞ্চওয়ার কৃত হোলি এবং ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে মহাশ্বেতা দেবী লিখিত গল্পে তার নিজস্ব নাট্যরূপ দেওয়া রুদালি, বের্টোল্ড ব্রেশট-এর মাদার কারেজ অনুসরণে হিম্মত মাঈ এবং নাট্যকার স্বদেশ দীপক লিখিত বিখ্যাত কোর্ট মার্শাল।[১১] কাশিনাথ সিং-এর উচ্চাঙ্গের লেখা কাশি কা আসি থেকে কানে কৌন কুমতি লাগি-এর ওপর ভিত্তি করে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কাশিনামা নাটকের নাট্যরূপ দেন এবং নিজে একটা সম্পূর্ণ নাটক লেখেন খোজ।
ও হেনরি লিখিত দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই অবলম্বনে ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত রেনকোট হিন্দি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের ওপরও ঊষা গাঙ্গুলি কাজ করেছিলেন।