এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক লিমিটেড হচ্ছে ভারতের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কিং এবং আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এটির সদর দফতর মহারাষ্ট্রেরমুম্বাইয়ে অবস্থিত। মোট সম্পদ ও বাজার মূলধনের ভিত্তিতে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এটি ভারতের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক।[১২] বাজার মূলধনের ভিত্তিতে এটি ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জের তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানি এবং প্রায় ১২০,০০০ কর্মচারীসহ ভারতের ১৫তম বৃহত্তম নিয়োগকর্তা।[১৩][১৪]
এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ১৯৯৪ সালে আগস্ট মাসে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহরে আবাসন উন্নয়ন অর্থায়ন কর্পোরেশনের সহায়ক সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ব্যাঙ্কটির প্রথম কর্পোরেট অফিস (পূর্ণ শাখার সুবিধাসহ) ওরলির সানডোজ হাউসে খোলা হয়, যেটি তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, মনমোহন সিংহ উদ্বোধন করেন। ২০২১ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত ব্যাঙ্কটির শাখার সংখ্যা ৫,৬৫৩টি এবং এটিএম মেশিনের সংখ্যা ১৬,২৯১টি।[১৫]
এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক হোলসেল ব্যাঙ্কিং, খুচরা ব্যাঙ্কিং, ট্রেজারি, অটো ঋণ, দ্বি-চক্র ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ, সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ডসহ বেশ কিছু ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে। ব্যাঙ্কটি ঐতিহ্যগত সেবার পাশাপাশি পেজাপ্প এবং স্মার্টবাই-এর মাধ্যমে বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা প্রদান করে।[১৬]
এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টাইমস ব্যাঙ্কের সাথে একীভূত হয়েছিল। এটি ছিল নতুন প্রজন্মের বেসরকারী ব্যাঙ্ক খাতের প্রথম একীভূত হওয়ার ঘটনা।[১৭] টাইমস ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভারতের দ্য টাইমস গ্রুপ হিসেবে পরিচিত বেনেট, কোলম্যান এবং কোং লিমিটেড।[১৮]
২০০৮ সালে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক সেঞ্চুরিয়ান ব্যাঙ্ক অব পাঞ্জাব (সিবিওপি) অধিগ্রহণ করেছিল। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের বোর্ড সিবিওপি অধিগ্রহণের জন্য ₹৯৫.১০ বিলিয়ন অনুমোদন দিয়েছিল যেটি ছিল ভারতে আর্থিক খাতে বৃহত্তম সংযুক্তি।[১৯]
২০২১ সালে ব্যাঙ্কটি ভারতের ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশনের মতো একটি খুচরা পেমেন্ট সিস্টেম পরিচালনার জন্য টাটা গ্রুপ পরিচালিত ফারবাইন প্রাইভেট লিমিটেডের ৯.৯৯% মালিকানা কিনে নেয়।[২০]
২০২০ সালের মার্চ মাসে এইচডিএফসি (এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মূল কোম্পানি) ইয়েস ব্যাঙ্কে ₹১০০০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করে।[২১] ইয়েস ব্যাঙ্কের পুনর্গঠন প্রকল্প অনুসারে কর্পোরেশনের মোট বিনিয়োগের ৭৫% অর্থ তিন বছরের জন্য লকড থাকবে। ২০২০ সালের ১৪ই মার্চ ইয়েস ব্যাঙ্কের ইস্যুকৃত শেয়ারের মূলধনের ৭.৯৭ শতাংশের মালিকানা এইচডিএফ কর্পোরেশনকে দেয়া হয়।[২২]
এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ভারতের জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত। এছাড়াও এটি নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ ও লাক্সেমবার্গ স্টক এক্সচেঞ্জেও বিদেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ইক্যুইটি শেয়ার লেনদেন করে।[২৩] এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারহোল্ডিং অবস্থা নিম্নরুপঃ
২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এইচডিএফসি ব্যাংককে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ইউটিলিটি পরিষেবাদিতে বিভ্রান্তির ঘটনাকে উদ্ধৃত করে ব্যাংকের ডিজিটাল ২.০ প্রোগ্রামের আওতায় নতুন ক্রেডিট কার্ড প্রদান এবং সমস্ত পরিকল্পনামূলক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।[২৫][২৬]
২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারী, প্রাথমিক পাবলিক অফারে বিডের জন্য ৩৯টি চলতি হিসাবে বিডিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ ডিউ ডিলিজেন্স পরিপালন না করায় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এইচডিএফসি ব্যাংকে আর্থিক জরিমানা করেছিল। [২৭]
২০১৩ সালে ওডিশায় এইচডিএফসি ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপককে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি অনুগুল জেলা কালেক্টর অফিসের হিসাব থেকে ₹৫৯.৪১ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেছে।[২৮]