একবিংশ শতাব্দীতে জলদস্যুতা

আধুনিক জলদস্যু জাহাজ

একবিংশ শতাব্দীর জলদস্যুতা মূলত সোমালী জলদস্যুদের সাথে সম্পর্কিত। ২০০৫ সাল ও সোমালী গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় থেকে এ অঞ্চলে জলদস্যুতা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। বিংশ শতকের শেষভাগে, ২০০১ ও ২০০৫ এর মাঝামাঝি সময়ে জলদস্যুতার অভাশ্রম বলে বিবেচ্য ভারত, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশপশ্চিম আফ্রিকা উপকূলে এর প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

২০০১-২০০৪

[সম্পাদনা]

২০০১ সালের আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০১ সালের প্রথম তিন মাসেই জলদস্যুতার ৫০টি ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে, ১৮টি দক্ষিণ চীন সাগরে, ১৪টি মালাক্কা প্রণালীতে, ১৩টি ভারত মহাসাগরে, ৪টি পশ্চিম আফ্যিকা উপকূলে ও একটি ফিলিপাইনে

নববর্ষের দিন, বাংলাদেশের পাথরঘাটে একটি জলদস্যু দল পাঁচটি জাহাজ আটক করে, পরবর্তীতে একই দিনে একই দল মান্দেরবারিয়াতে একটি জাহাজ আক্রোমন করে। এছাড়াও মার্চে অ্যাকচুয়ারিয়া নামে একটি জাহাজের ক্রুরা চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করা অবস্থায় জলদস্যুদের একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।

৬ই ডিসেম্বর আমাজন নদীর প্রবেশপথে জলদস্যুরা নিউজিল্যান্ডের বিশিষ্ট ইয়ট-বাইচ খেলোয়াড় ও ১৯৯৫ এবং ২০০০ সালের আমেরিকা কাপ জয়ী স্যার পিটার ব্লেকের ব্যক্তিগত ইয়ট ১১৯-ফিট সীমাস্টারে আরোহণের চেষ্টা করে, এতে পিটার তাদের বাঁধা প্রদান করলে জলদস্যুরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।

২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতকে জলদস্যুতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় প্রথম তিনটি দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তালিকাটি তৈরির সময় ইন্দোনেশিয়ায় ১০২টি, বাংলাদেশে ৩২টি এবং ভারতে ১৮টি জলদস্যু আক্রোমন সংঘটিত হওয়াকে বিবেচনায় আনা হয়েছিল।

২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ৯৩টি ও নাইজেরিয়ায় ৩৯টিসহ সাড়া বিশ্বে ৩২৫টির মত জলদস্যুতার ঘটনা ঘটেছিল। এর ফলে ৩০ জন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য আক্রমণ

[সম্পাদনা]
চিত্র পতাকা (মালিক) নাম (শ্রেণী) কর্মী (কার্গো) অবস্থা আক্রান্ত হওয়ার তারিখ স্থানাঙ্ক
মুক্তির তারিখ মুক্তিপণ দাবি
 বাংলাদেশ দিলরুবা
(মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত)
অজানা
(অজানা)
আক্রান্ত ফেব্রুয়ারি ২০০১ unknown
নাই নাই
পাথরঘাটে আক্রমণ। বন্দুক যুদ্ধে একজন আহত ক্রুকে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং জলদস্যুরা $১৩৯,৩৭৩ সমমূল্যের রসদ চুরি করে নিয়ে যায়।
 পানামা লিংফিল্ড
(ট্যাঙ্কার)
অজানা
(অজানা)
আক্রান্ত মার্চ ৭, ২০০১ unknown
নাই নাই
ইন্দোনেশিয়ার বিনটেনের কাছে আক্রোমন করে আটজন জলদস্যু জাহাজের তিনজন সিনিয়র অফিসারকে বেঁধে রেখে জাহাজের ভল্ট থেকে $১১,০০০ ডলার চুরি করে নিয়ে যায়।
 পানামা জেসপার
(কার্গো)
অজানা
(অজানা)
আক্রান্ত ৯ই মার্চ ২০০১ unknown
নাই নাই
থাইল্যান্ডে আক্রান্ত হয় ও থাইল্যান্ড অর্গারাইসজ্ড ক্রাইম সংস্থার মতে $১১,০০০ ডলারের চালান ছিল।
 ইন্দোনেশিয়া ইনাবুকাউয়া
(কার্গো)
অজানা
(অজানা)
আক্রান্ত ১৫ই মার্চ ২০০১ unknown
(দুই সপ্তাহ পর) নাই
মালশিয়া উপকূলের একটি জনবসতিহীন দ্বীপ থেকে জলদস্যুরা আক্রমণ করে $২,১৭০,০০০ সমমূল্যের মালামাল নিয়ে যায় এবং ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ দুই সপ্তাহ পর জাহাজটি উদ্ধার করে ও জলদস্যুদের গ্রেফতার করে।
 পানামা মেরিন ইউনিভার্সাল
(কার্গো)
অজানা
(অজানা)
আক্রান্ত মে ২০০১ unknown
নাই নাই
চারজন জলদস্যু নাইজেরিয়ায় আক্রমণ করে ও একজন কর্মীকে জিম্মী করে।

২০০৫-২০১০: সোমালী জলদস্যুতা

[সম্পাদনা]
সোমালিয়ার জলদস্যু

২০০৫ সাল থেকে সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুতার প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং জলদস্যুরা গৃহযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের রসদ লাইন কেটে দেয় যার ফলে রসদ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে ও কমপক্ষে ১৩টি ভেসেল অপহরণ করে।