চীনা বৌদ্ধশাস্ত্র |
---|
বিভাগ |
একোত্তর আগম (ঐতিহ্যগত চীনা: 增壹阿含經; পিনয়িন: zēngyī-ahánjīng) একটি প্রাচীন ভারতীয় বৌদ্ধ শাস্ত্র ও সূত্র পিটকের পাঁচটি আগমের মধ্যে একটি। শুধুমাত্র চীনা ভাষায় এই আগমের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। মূল সংস্কৃত ভাষাতে এই গ্রন্থের অস্তিত্ব লুপ্ত হয়ে গেছে। চীনা দাজাংজিং (ঐতিহ্যগত চীনা: 大藏經; পিনয়িন: Dàzàngjīng) গ্রন্থে চারটি আগমের মধ্যে একোত্তর আগম একটি।
৩৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মনন্দী একোত্তর আগমের সম্পূর্ণ অনুবাদ করেন এবং ৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দে গৌতম সংঘদেব সম্পাদনা করেন। সর্বাস্তিবাদ না মহাসংঘিকার মধ্যে কোন সম্প্রদায় এই গ্রন্থ রচনা করেছেন, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।[১] আবার যেহেতু এই আগমে ধর্মগুপ্তক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মহাসংঘিকা সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিপরীতধর্মী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতিমোক্ষ নিয়মের উল্লেখ রয়েছে, তাই এই আগম ধর্মগুপ্তক সম্প্রদায়দের দ্বারা রচিত বলেও অনুমান করা হয়।[২] এতিয়েন লামোত্তের মতে, উত্তর পশ্চিম ভারত থেকে প্রাপ্ত মহাযান প্রভাবাধীন একটি পুঁথি থেকে একোত্তর আগমকে অনুবাদ করা হয়।[৩] পঞ্চম শতাব্দীর ধর্মগুপ্তক ভিক্ষু ও দীর্ঘ আগমের অনুবাদক বুদ্ধয়ষসের লেখনীতে এই বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায় যখন তিনি লিখেছিলেন ধর্মগুপ্তক সম্প্রদায় মহাযান ত্রিপিটককে অঙ্গীভূত করে নেয়।[৪] একোত্তর আগমে মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের পারমিতা তত্ত্ব লিখিত আছে। [৫]
একোত্তর আগম পালি ভাষায় রচিত থেরবাদ তিপিটকের সুত্ত পিটকের অঙ্গুত্তর নিকায়ের অনুরূপ। কিন্তু চীনা দাজাংজিং গ্রন্থে চারটি আগমের মধ্যে একমাত্র একোত্তর আগমের সঙ্গে থেরবাদ ত্রিপিটকের প্রচুর অমিল পাওয়া যায়। এমনকি অষ্টাঙ্গিক মার্গ সম্বন্ধীয় বৌদ্ধ ধর্মের মূল তত্ত্বও এই আগমে ভিন্ন। [১][n ১]
একোত্তর আগমে আনাপানস্মৃতি সূত্র একটি উল্লেখযোগ্য সূত্র। এই সূত্রে গৌতম বুদ্ধ তার পুত্র রাহুলকে আনাপানস্মৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান প্রদান করেন। গৌতম বুদ্ধের নির্দেশমতো রাহুল ধ্যানের মাধ্যমে সমাধি লাভ করে অর্হত হয়ে তার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি সম্বন্ধে বিস্তারিত প্রতিবেদন তার পিতার কাছে নিবেদন করেন। এই সূত্র থেরবাদ তিপিটকের সুত্ত পিটকের মজ্ঝিম নিকায়ের মহারাহুলোবাদ সুত্তের অনুরূপ।