ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | এডওয়ার্ড আর্নেস্ট হেমিংস | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | লিমিংটন স্পা, ওয়ারউইকশায়ার, ইংল্যান্ড | ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | বেথ মরগ্যান (ভাগ্নী) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৯৭) | ২৯ জুলাই ১৯৮২ বনাম পাকিস্তান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৪ জানুয়ারি ১৯৯১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৬৫) | ১৭ জুলাই ১৯৮২ বনাম পাকিস্তান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ বনাম নিউজিল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ অক্টোবর ২০১৯ |
এডওয়ার্ড আর্নেস্ট হেমিংস (ইংরেজি: Eddie Hemmings; জন্ম: ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৯) ওয়ারউইকশায়ারের লিমিংটন স্পা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ার, সাসেক্স ও ওয়ারউইকশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন এডি হেমিংস।
১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এডি হেমিংসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ছোটখাটো গড়নের স্থূলকায় ছিলেন তিনি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও পেশাদারী পর্যায়ের ক্রিকেটে অগ্রসর হয়েছিলেন। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে দূর্দান্ত প্রতাপে খেলেছিলেন।
খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে সিম বোলার হিসেবে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে খেলতেন। পরবর্তীতে নটিংহ্যামশায়ারে চলে গেলে অফ স্পিন বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন। এভাবেই টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নেন তিনি।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৬ টেস্ট ও ৩৩টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন এডি হেমিংস। ২৯ জুলাই, ১৯৮২ তারিখে বার্মিংহামে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৪ জানুয়ারি, ১৯৯১ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
তুলনামূলকভাবে খেলোয়াড়ী জীবনের শেষপ্রান্তে অবস্থান করে ৩৩ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। এরজন্যে মূলতঃ ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় তৎকালীন নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকায় গমনের কথা ঘোষণা করলে তার এ অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে। তার সময়কালে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে কেবলমাত্র একজন স্পিনারকে রাখা হতো। অফ স্পিনার হিসেবে রে ইলিংওয়ার্থ ১৯৬৯ সালে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। জন এম্বুরি’র স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। ঐ খেলায় তিনি ছয় উইকেট লাভ করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে জন এম্বুরি’র উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পুনরায় তাকে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়।
১৯৮৭ সালের পূর্ব-পর্যন্ত এম্বুরি’র তেমন কোন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হলে ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার ঠাঁই হয়। এ প্রতিযোগিতায় জয়পুরে অনুষ্ঠিত খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৪র্থ আসরে মাইক গ্যাটিংয়ের অধিনায়কত্বে অংশ নেন। সেমি-ফাইনালে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনকে ৬৪ রানে এলবিডব্লিউতে বিদেয় করে দলকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। চূড়ান্ত খেলায় নির্ধারিত ১০ ওভারে ২/৪৮ পান। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ রানে পরাজিত হলে শিরোপা জয় থেকে বঞ্চিত হয় তার দল।[২][৩] ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে পাকিস্তানে কুখ্যাত সফরে অংশ নিয়েছিলেন।
আবারও বিদ্রোহী দলের সদস্যরূপে এম্বুরি’র দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের ফলে ৪০ বছর বয়সে হেমিংসকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে, তাকে কেবলমাত্র গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন একদিনের দলে খেলানো হয়। বল হাতে বেশ মিতব্যয়ীতার পরিচয় দেন। ১৯৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের প্রথম পছন্দের স্পিনারে পরিণত হন তিনি।
১৯৯০ সালে ভারত দল ইংল্যান্ড গমন করে। লর্ডসে সিরিজের প্রথম টেস্টে ফলো-অনের কবলে পড়ে ভারত দল। শেষ উইকেট জুটিতে নরেন্দ্র হিরওয়ানিকে সাথে নিয়ে কপিল দেব হেমিংসের বলের পরপর চারটি ছক্কা হাঁকান ও ফলো-অন থেকে সফরকারীদের রক্ষা করেন। পরের ওভারের প্রথম বলেই অ্যাঙ্গাস ফ্রেজার হিরওয়ানিকে এলবিডব্লিউতে বিদেয় করেন। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৯৫ রান তুলেন। ভারতের বিপক্ষে ডেভন ম্যালকমের সাথে ৫১ রানের দ্বিতীয় অর্ধ-শতরান শেষ উইকেট জুটিতে করেন।
১৯৯০-৯১ মৌসুমে ৪১ বছর বয়সে ইংরেজ দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। সিডনিতে একটিমাত্র টেস্টে অংশ নিলেও প্রায় সকল ওডিআইয়েই তার অংশগ্রহণ ছিল। তবে, ইংল্যান্ড দল বিশ্ব সিরিজ কাপের চূড়ান্ত খেলায় অংশ নিতে পারেনি। অ্যাশেজ সফর শেষে এডি হেমিংস তার সর্বশেষ ওডিআই সিরিজ খেলার জন্যে নিউজিল্যান্ড গমন করেন।[১]
সর্বোপরি ১৯৮২ থেকে ১৯৯১ সময়কালে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সেরা অফ স্পিনারের মর্যাদা লাভ করেছেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে নিজের স্বর্ণালী সময়টুকু জন এম্বুরি’র সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। এছাড়াও, ঐ সময়ে ইংল্যান্ড দলে একমাত্র স্পিনার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে জিওফ মিলার, ভিক মার্কস ও প্যাট পোকক দাবীদার ছিলেন। কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবেও যথেষ্ট সুনাম কুড়ান। ১৯৮৯ সালের ট্রেন্ট ব্রিজে টেস্টের চতুর্থ দিনের চা বিরতির পূর্বে অস্ট্রেলীয় বোলার জিওফ লসনের বলকে যথেচ্ছ পেটান। বেশ কয়েকটি চারের মার মেরে খেলার গতিধারাকে পরিবর্তন করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখেন।
১৯৮৯ সালে বেনসন এন্ড হেজেস কাপের চূড়ান্ত খেলায় এসেক্সের তারকা বোলার জন লিভারের শেষ বলের চার রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্বার্থকভাবে পূরণ করে নটিংহ্যামশায়ার দলকে নাটকীয়ভাবে জয়ে অবদান রাখেন। এর পরপরই ঐ বছরে অনুষ্ঠেয় অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্ট খেলার জন্যে তাকে ইংরেজ দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ঐ টেস্টে তিনি কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাননি। তবে, উভয়ে ইনিংসেই ত্রিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
বেশ দেরীতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হলেও এক দশকব্যাপী খেলোয়াড়ী জীবনে অন্যতম খেলোয়াড়ের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছিলেন। নিজস্ব ৪২তম জন্মদিনের কয়েক সপ্তাহ পূর্বে সর্বশেষ খেলায় অংশ নেন তিনি।
৪৬ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে এডি হেমিংস অবসর গ্রহণ করেন। এরপূর্বে সাসেক্স দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি। ২০০৬ সালে এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, উত্তর ল্যাঙ্কাশায়ারের গ্রাম্য এলাকায় দোকান পরিচালনা করছেন।[৪]
এক ইনিংসে দশ উইকেট লাভের ন্যায় বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হলেও সর্বাধিক খরুচে বোলারে পরিণত হন তিনি। তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৪৯.৩-১৪-১৭৫-১০। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে জ্যামাইকার কিংস্টনে আন্তর্জাতিক একাদশের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে এ কীর্তি স্থাপন করেন।[৫]
তার বোনঝি বেথ মরগ্যান ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন।[৬] বর্তমানে তিনি লিঙ্কনশায়ারের পশ্চিম বাটারউইকে গ্রাম্য দোকান ও ডাকঘর পরিচালনা করছেন।[৭] এছাড়াও, ইসিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার অন্বেষণের সাথে যুক্ত রয়েছেন।[৮]