এম. কে. সরোজা | |
---|---|
জন্ম | মাদ্রাজ কাদিরাভেলু সরোজা ৭ এপ্রিল ১৯৩১ |
পেশা | নৃত্যশিল্পী |
দাম্পত্য সঙ্গী | মোহন খোকর |
সন্তান | হরিহরন নন্দন আশিস বিবেক |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী সংগীত নাটক একাদেমি পুরস্কার কালাইমণি পুরস্কার আজীবন সম্মাননা ই. কৃষ্ণা আইয়ার পদক নাট্য কালানিধি ঠাকুর একাদেমি রত্ন পুরস্কার |
মাদ্রাজ কাদিরাভেলু সরোজা একজন ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী, তিনি তাঁর দক্ষতার জন্য, একজন অভিযোজক হিসাবে এবং ভরতনাট্যমের শাস্ত্রীয় নৃত্য শিক্ষক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। শিল্প ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত করে।[১]
ভরত নাট্যম (তামিল: பரதநாட்டியம்) ভরতনাট্যমও বানানেও লেখা হয়, হলো একটি ধ্রুপদী ভারতীয় নৃত্য রূপ, এটি তামিলনাড়ুর মন্দিরে উদ্ভূত হয়েছিল। আজ এটি সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচারিত নৃত্যশৈলগুলির মধ্যে একটি এবং সারা বিশ্বে পুরুষ এবং মহিলা নৃত্যশিল্পীরা এটি পরিবেশন করে থাকেন।
প্রখ্যাত ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী পদ্ম সুব্রাহ্মণ্যম বলেন - "তিনি একজন সাধু ব্যক্তি, তিনি প্রচার এবং প্রচারণা বিমুখ ছিলেন।"[২]
এম. কে. সরোজা ১৯৩১ সালের ৭ এপ্রিল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ে (পূর্ববর্তী মাদ্রাজ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাঁচ বছর বয়সে তাঁর বোনের সাথে ধ্রুপদী নৃত্য শেখা শুরু করেন, তিনি বিখ্যাত ধ্রুপদী নৃত্যশিক্ষক মুথুকুমারন পিল্লাইয়ের কাছে নাচ শিখেন[২] এবং কথিত আছে যে, তিনি রুক্মিনী দেবী অরুন্দলের কালাক্ষেত্রে প্রথম নৃত্যশিক্ষক ছিলেন; তিনি মৃণালিনী সারাভাই এবং কমলা লক্ষ্মণের মতো অনেক খ্যাতিমান শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পীর শিক্ষক ছিলেন। তরুণ সরোজা ব্যাঙ্গালোরের বেঙ্গালুরু স্টুডিওতে যোগদানের জন্য ব্যাঙ্গালোর চলে আসার পরেও গুরুকে অনুসরণ করেন।[৩]
১৯৪০ সালে সরোজার অভিষেক ঘটে এবং শীঘ্রই তিনি একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পীতে পরিনত হন। ১৯৪৬ সালে তাকে চেন্নাইয়ের জেমিনি স্টুডিওতে একটি সিনেমার চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এর তিন বছর পর ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে তিনি কলাক্ষেত্রের খ্যাতিমান শিল্প ইতিহাসবিদ ও নৃত্য পণ্ডিত[৪][৫] এবং সহ-ছাত্র মোহন খোকরকে বিয়ে করেন।[২] তাঁর স্বামী মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদে নিযুক্ত হলে তিনি তাঁর স্বামীর সাথে বরোদাতে চলে আসেন।[৩] বরোদায় সরোজা বিখ্যাত কত্থক গুরু সুন্দরলাল এবং কুন্দনলাল গাঙ্গানীর কাছে কত্থক নৃত্য শিখেন।
১৯৬১ সালে মোহন খোকর সংগীত নাটক একাদেমিতে নৃত্যের বিশেষ কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত হন এবং এই দম্পতি নতুন দিল্লিতে চলে আসেন। সেখানে তিনি পুনরায় পাঠদান শুরু করেন এবং নাচের পরিবেশনা অব্যাহত রাখেন এবং সফরকারী সৌদি আরব শাসকের সামনে রাষ্ট্রপতি ভবনে নৃত্য পরিবেশন করার সুযোগ পান। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য প্যারিসের কেন্দ্রীয় মন্ডপ পরিদর্শন শুরু করেন, যা তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছিলেন।[৩]
এম.কে. সরোজা তার স্বামীর মৃত্যুর পরে ২০০০ সালে ৪০ বছর সক্রিয়ভাবে কাজ করার পর পেশাদার নৃত্য থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[৩] তাঁর চার পুত্র রয়েছে যার মধ্যে তৃতীয় পুত্র আশীষ মোহন খোকর খ্যাতিমান শিল্প ইতিহাসবিদ, লেখক ও নৃত্য সমালোচক।[৬] তিনি বর্তমানে চেন্নাইতে বাস করেন।[৩]
"এম. কে. সরোজার শিল্পটি ভক্তির। তার মধ্যে নিখুঁত 'ভক্তি' রয়েছে ...", - লীলা স্যামসন, কালাক্ষেত্রের পরিচালক[২]
এম. কে. সরোজের উত্তরাধিকার সেই পবিত্রতা থেকেই গিয়েছে যা তিনি ভারতনাট্যমে নিয়ে এসেছিলেন এবং নার্গিস কাতপিতিয়া, প্রতিভা পণ্ডিত, সুধা প্যাটেল, লক্ষ্মী বলরানি, ইন্দ্রাণী রহমান, ইয়ামিনী কৃষ্ণমূর্তি, রোমানা অগ্নেল,[৭] শোভনা রাধাকৃষ্ণ, রসিকা খান্না, অরূপ ঘোষ, লুসিয়া ম্যালোনি, মিলেনা সালভিনি এবং বিদ্যা প্রভৃতি খ্যাতি অর্জনকারি যে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তাদের মধ্য দিয়েই তিনি বেঁচে আছেন। শেষ দুজন নৃত্যশিল্পী এখনও প্যারিসের কেন্দ্রীয় মন্ডপে পাঠদান করেন।
এম. কে. সরোজার উপর দুটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে, একটি রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগ এবং অন্যটি ক্লাউড ল্যামোরাইজ নির্মান করেন।[৩]