এরশাদ হুসেন (ارشاد حسین) | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | পাকিস্তানি |
মাতৃশিক্ষায়তন | কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তান, লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য |
পুরস্কার | পাকিস্তান বিজ্ঞান একাডেমী দ্বারা রসায়নে স্বর্ণপদক (২০১৪), পাকিস্তান বিজ্ঞান একাডেমী দ্বারা রসায়নে অধ্যাপক ডাঃ আতা-উর-রহমান স্বর্ণপদক (২০০৭) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | রসায়ন বস্তু বিজ্ঞান এবং ন্যানোপ্রযুক্তি |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পেশোয়ার জাতীয় জৈব প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হুয়াজং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | ধাতব ন্যানো কণার সংশ্লেষণ এবং অত্যাধুনিক উপাদান প্রযুক্তিতে তাদের প্রয়োগ [১] |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | অ্যান্ড্রু ইয়ান কুপার এবং ম্যাথিয়াস ব্রাস্ট |
ওয়েবসাইট | Functional Nanomaterials |
এরশাদ হুসেন (উর্দু: ارشاد حسین) হলেন পাকিস্তানের একজন রসায়নবিদ এবং পাকিস্তানে ন্যানোম্যাটরিয়ালস গবেষণা শুরু করার অন্যতম এক পথিকৃৎ। তিনি এসবিএ স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (এসবিএএসএসই) একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এসবিএ স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। এলইউএমএসয়ের রসায়ন বিভাগের উন্নয়নে (২০১০-২০১৬) তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।[২] তিনি লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস এর রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের একজন মেয়াদী অধ্যাপক। এর আগে তিনি পেশোয়ারের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউএস-পাকিস্তান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন এনার্জি বিভাগে নবায়নযোগ্য শক্তি (রিনিউয়েবেল এনার্জি) প্রকৌশল অধ্যাপক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সময়, ২০১৭ সালে, তিনি এলইউএমএস থেকে বেতনভোগী ছুটিতে ছিলেন।[২][৩][৪][৫] হুসেন ২০১৫ সালে পাকিস্তান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাউন্সিলে জাতীয় ন্যানোটেক বিশেষজ্ঞ সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি পাকিস্তান একাডেমি অফ সায়েন্সেস (পিএএস) এর পক্ষ থেকে রসায়নে অধ্যাপক আতা-উর-রহমান স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন, এবং ২০১৪ সালে আর একবার রসায়নে পিএএস স্বর্ণপদক পান।[৬] বর্তমানে, তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কর্মীগোষ্ঠী, ন্যানোটেকনোলজির জাতীয় কোর দলের নেতৃত্বে আছেন।
পাকিস্তানের ঝাংয়ের অন্তর্গত আহমেদপুর সিয়ালের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম মৌজা সাধনায় হুসেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন ও শৈশব কাটিয়েছিলেন। তিনি ঝাং জেলার সমান্দোয়ানা এবং আহমেদ পুর সিয়াল থেকে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছিলেন। তারপরে তিনি মুলতান চলে এসেছিলেন এবং মুলতানের বোসান রোডের সরকারি এমারসন কলেজ (বিজেডইউ, মুলতান) থেকে এফ.এস.সি. ও বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। এরপরে তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন হুসেন ইব্রাহিম জামাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ কেমিস্ট্রি শিক্ষায়তনে আতা-উর-রহমান এবং মুহাম্মদ ইকবাল চৌধুরীর গোষ্ঠীভূক্ত হয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি ফয়সালাবাদের জাতীয় জৈব প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (এনআইবিজিই) যোগদান করেন এবং এনআইবিজিই তে কাজ করার সময়, ২০০৫ সালে, অ্যান্ড্রু ইয়ান কুপার এবং ম্যাথিয়াস ব্রাস্টের তত্ত্বাবধানে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর পিএইচডি (রসায়ন) সম্পন্ন করেছিলেন।[৭][৮][৯]
হুসেন ১৯৯৭ সালে ফয়সালাবাদের জাতীয় জৈব প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (এনআইবিজিই) একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে, যোগদান করেছিলেন। ২০০১ সালে বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে তাঁর পদোন্নতি হয়।[৯] ২০০২-২০০৮ সময়বর্ষে, এনআইবিজিই, ফয়সালাবাদে, ন্যানোবায়োটেকনোলজি গবেষণা শুরু করার জন্য তিনি ~ $২.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস (এলইউএমএস) এর অধীন এসবিএ স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের রসায়ন বিভাগে যোগদান করেছিলেন এবং ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত রসায়ন বিভাগের অধ্যক্ষ হিসাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[২] ২০১৭ সালে এলইউএমএস থেকে বেতনভোগী ছুটিতে যাওয়ার সময়, হুসেন ইউএস-পাকিস্তান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন এনার্জি (ইউএসপিসিএএস-ই) বিভাগে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রণালীর অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি পেশোয়ারের (পাকিস্তান) ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউইটি) অধ্যাপক হিসাবে এবং চীনের উহানে হুয়াঝং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এইচইউএসটি) অধীন স্কুল অফ কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিদেশী অধ্যাপক (২৫শে অক্টোবর - ২৪শে নভেম্বর, ২০১৭) হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
হুসেনের গবেষণা গোষ্ঠীর কেন্দ্রবিন্দু ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ধাতু / ধাতব অক্সাইড ন্যানোকণা / ন্যানোগুচ্ছ সংশ্লেষণ। এছাড়াও জৈব-ঔষধ বিজ্ঞান, শক্তি প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং অনুঘটকও তাঁদের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল। [১০] তিনি গবেষণা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন মোটামুটি একরূপ ধাতব ন্যানোকণা / ন্যানোগুচ্ছ সংশ্লেষণের জন্য নিয়ন্ত্রিত আকার, আকৃতি এবং পৃষ্ঠতলের রসায়ন সহ পুনরুৎপাদনযোগ্য পদ্ধতির বিকাশ করে। তিনি এগুলিকে ব্যবহার করেছিলেন অনন্য রাসায়নিক এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত নতুন ন্যানোকাঠামোর উপাদানের বিকাশে। এই নতুন উপাদানগুলি তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন জৈব-ঔষধ বিজ্ঞান, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং অনুঘটকের প্রয়োগগুলির জন্য।[১১] তিনি বিভিন্ন বিশিষ্ট জার্নালে ৮০টিরও বেশি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন, এগুলির মধ্যে আছে নেচার মেটিরিয়ালস, সায়েন্স অ্যাডভান্সেস, অ্যাঞ্জওয়ান্টে চেমি - আইএনটি. ইডি., অ্যাডভান্সড মেটিরিয়ালস, জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি, স্মল, কেমকমান, ল্যাংমুইর এবং ন্যানোস্কেল ইত্যাদি।[১২]