সংক্ষেপে | আকু |
---|---|
নীতিবাক্য | সদস্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমুহের আন্ত-আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি |
গঠিত | ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ |
ধরন | আঞ্চলিক সংস্থা |
আইনি অবস্থা | চুক্তি |
সদরদপ্তর | তেহরান, ইরান |
সদস্যপদ | ৯টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক |
চেয়ারম্যান | দাশো পেনজোর |
মহাসচিব | লিডা বোরহান-আজাদ |
ওয়েবসাইট | আকু |
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (ইংরেজি: Asian Clearing Union) বা আকু হচ্ছে একটি আন্ত-আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিকারী সংস্থা। এটি এর সদস্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমুহ এবং উক্ত অঞ্চলের আন্ত-আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি করে থাকে।[১] জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশন (ইসক্যাপ)-এর উদ্যোগে ডিসেম্বর ৯, ১৯৭৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটির সদরদপ্তর ইরানের, তেহরানে অবস্থিত।
জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশন (ইসক্যাপ)-এর উদ্যোগে ডিসেম্বর ৯, ১৯৭৪ সালে আকু প্রতিষ্ঠিত লাভ করে। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অনুষ্ঠিত ইসক্যাপ-এর চতুর্থ মন্ত্রিসভা সম্মেলনে আকু প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।[২] ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে ইসক্যাপ-এর সদরদপ্তর ব্যাংককে ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং এই দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিরা একটি খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করে এবং সেইসাথে দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে ওই বছরই বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এই চুক্তির ষষ্ঠ ও সপ্তম স্বাক্ষরকারী হিসেবে সদস্য হয়। ১৯৯৯ সালে ভুটান এবং ২০০৯ সালে মালদ্বীপ আকু চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।[৩][৪][৫]
আকুর বর্তমান (২০২০) সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সদস্য দেশগুলির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আকুর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের জন্য বিস্তারিত নির্দেশনা এবং পদ্ধতি জারি করেছে। আকুর সদস্যপদ জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশন (ইসক্যাপ)-এর ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত সকল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির জন্য উন্মুক্ত।[৩]
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন-এর সদস্যসমুহ | ||
---|---|---|
রাষ্ট্র | কেন্দ্রীয় ব্যাংক | বছর |
বাংলাদেশ | বাংলাদেশ ব্যাংক | ১৯৭৪ |
ভুটান | ভুটানের রাজকীয় আর্থিক কর্তৃপক্ষ | ১৯৯৯ |
ভারত | ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক | ১৯৭৪ |
ইরান | ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক | ১৯৭৪ |
মালদ্বীপ | মালদ্বীপ আর্থিক কর্তৃপক্ষ | ২০০৯ |
মায়ানমার | মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক | ১৯৭৭ |
নেপাল | নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক | ১৯৭৪ |
পাকিস্তান | স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান | ১৯৭৪ |
শ্রীলঙ্কা | শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক | ১৯৭৪ |
আকুর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনার জন্য সদস্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক কর্তৃপক্ষ একজন পরিচালক এবং একজন বিকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়। সাধারনত পরিচালক হিসেবে সদস্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরগন দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং গভর্নরদের সমন্বয়ে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়। উক্ত পর্ষদের প্রধান হচ্ছে চেয়ারম্যান যিনি পর্ষদের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হয়। বছরে কমপক্ষে একবার পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিচালনা পর্ষদ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য একজন মহাসচিব নিয়োগ করে। সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংকের গভর্নর দাশো পেনজোর এবং মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লিডা বোরহান-আজাদ।[৬]
২০০৮ সালে মায়ানমারে অনুষ্ঠিত আকুর ৩৭তম সভায়[৭] লেনদেনের একক হিসেবে আকু ডলার এবং আকু ইউরো[৮] সমন্বিত "এশিয়ান মানিটারি ইউনিট (এএমইউ)" বা এশিয়ান মুদ্রা ইউনিট গৃহীত হয়। সেই থেকে, অংশগ্রহণকারী সদস্যরা লেনদেন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এএমইউ পদ্ধতিতে মার্কিন ডলার বা ইউরোতে লেনদেন নিষ্পত্তির করছে।[৯][১০]
সদস্য দেশগুলির মধ্যে সকল উপযুক্ত লেনদেন এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য আর্থিক লেনদেনগুলির মধ্যে রয়েছে:[১১]
যেসকল লেনদেন এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য নয় সেগুলো হচ্ছেঃ-
ক) নেপাল ও ভারতের মধ্যে এবং ভুটান ও ভারতের মধ্যে লেনদেন নিষ্পন্ন করা যাবে না, তবে ব্যতিক্রম হিসেবে নেপালে বসবাসকারী কোনও আমদানিকারক ভারত থেকে মালামাল আমদানি করে এবং তাকে নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক বিদেশি মুদ্রায় অর্থ প্রদান করতে অনুমতি দেয় তবে উক্ত লেনদেন আকুর মাধ্যম নিষ্পত্তি করা যাবে;
খ) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল দ্বারা নির্ধারিত আর্টিকল অফ এগ্রীমেন্ট-এ বর্ণিত হয়নি এমন আন্তর্জাতিক লেনদেন নিষ্পন্ন করা যাবে না। তবে অংশগ্রহণকারীর পারস্পরিক বোঝাপড়া হওয়া অর্থের লেনদেন নিষ্পন্ন করা যাবে;
গ) অন্য সেইসব লেনদেন যেগুলি বিভিন্ন সময়ে আকু দ্বারা ক্লিয়ারিং সুবিধার অযোগ্য বলে ঘোষিত হয়েছে।