এস্কেইপ ফ্রম অ্যালকাট্র্যাজ (ইংরেজি ভাষায়: Escape from Alcatraz) ডন সিজেল পরিচালিত কোল্ড অ্যাট্মসফেয়ারিক থ্রিলার। সত্য কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মীত এই ছবিটি ১৯৭৯ সালে মুক্তি পায়। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকো শহরের নিকটবর্তী অ্যালকাট্র্যাজ দ্বীপের জেলখানা থেকে তিনজন কয়েদির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা অবলম্বনে এর কাহিনী রচিত হয়েছে। পালানোর প্রধান পরিকল্পনাকারী কয়েদী ফ্র্যাংক মরিস-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ক্লিন্ট ইস্টউড।
চলচ্চিত্রটি তৈরি করা হয়েছে এস্কেইপ ফ্রম অ্যালকাট্র্যাজ নামক নন-ফিকশন বই থেকে। জে ক্যাম্পবেল ব্রুস রচিত এই বইটি ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। অ্যালকাট্র্যাজ কারাগেরের ইতিহাস এবং সেখান থেকে পালানোর সফল ও ব্যর্থ প্রচেষ্টাগুলোই ছিল বইয়ের বিষয়বস্তু। বইয়ের একটি অংশে ফ্র্যাংক মরিস অন্য দুইজন কয়েদির পালানোর বর্ণনা আছে। এই অংশটুকু থেকেই সিনেমা করা হয়েছে। উল্লেখ্য এর আগে অ্যালকাট্র্যাজ থেকে কেউ পালাতে পারেনি, এর পরেও পারেনি। অ্যামেরিকার অন্যতম কুখ্যাত আসামীদের এখানে পাঠানো হতো। এখানে সবাইকে ব্যক্তিগত সেল দেয়া হতো এবং কঠোর তদারকিতে রাখা হতো। পালানো ছিল খুবই কষ্টকর। মরিস ও অন্য দুজন পালানোর পরপরই অ্যালকাট্র্যাজকে চিরতরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। জেলখানার কঠিন জীবন এবং বন্ধ হয়ে যাবার আগে এই কারাগারের অবস্থাই সিনেমাতে উঠে এসেছে।
সিনেমার শেষ অংশে কিছু সূত্র দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, তারা সফলভাবে পালাতে পেরেছে। কিন্তু, তারা আদৌ পেরেছিল কি-না তা জানা যায়নি, এখন পর্যন্ত রহস্যই রয়ে গেছে। ওয়ার্ডেন মনে করেছিলেন, তারা ডুবে মারা গেছে।
১৯৭৯ সালের ২৪শে জুন মুক্তি পাওয়ার ঐ সপ্তাহেই ছবিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫,৩০৬,৩৫৪ ডলার আয় করে। ৮১৫টি হলে তা দেখানো হয়েছিল। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এর আয় ছিল ৪৩,০০০,০০০ মার্কিন ডলার।
সমালোচকদের কাছেও ছবিটি প্রশংসিত হয়েছে। রটেন টম্যাটোস-এ এর রেটিং ৯৩%, অর্থাৎ তাদের সংগৃহীত রিভিউগুলোর শতকরা ৯৩টিতেই এ ছবির প্রশংসা করা হয়েছে। রিভিউ অবশ্য বেশি না,মাত্র ১৪টি। উচ্ছসিত প্রশংসা না করলেও অধিকাংশই একে সাধারণের চেয়ে ভাল প্রিজন ব্রেক চলচ্চিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ছবির শুরুতেই মাউন্ট সাট্রো টাওয়ার দেখানো হয় এবং পাশে লেখা দেখা যায়, ছবির সময়কাল ১৯৬০ সাল। অথচ এই টাওয়ারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ১৯৭১ সালে এবং শেষ হয়েছে ১৯৭২ সালে। মরিস যখন কাঠের সাথে ধাতু দিয়ে তৈরি খণ্ডটি মেটাল ডিটেক্টরের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়, তখন পাশে একটি ওসিলোস্কোপ দেখা যায়। এ ধরনের ওসিলোস্কোপ ১৯৭০-এর দশকে বাজারে এসেছে। মনিসকে যখন নৌকায় করে অ্যালকাট্র্যাজ জেলে নিয়ে আসা হচ্ছিল তখন নৌকার উপর একটি রাডার ঘুরতে দেখা যায়। এ ধরনের রাডারও ১৯৭০-এর দশকে নির্মীত হয়েছে।