ওন্নারা, ওন্নারা মুন্ডু, থার বা থাট্টু হল মহিলাদের অন্তর্বাসের একটি ঐতিহ্যগত রূপ[১][২] এটি কেরালার (সর্বদক্ষিণের ভারতীয় রাজ্য) সব বয়সী হিন্দু মহিলারা পরিধান করেন। ওন্নারা হল এক ধরনের ধুতি (সারং)। এটি এমনভাবে বাঁধা হয় যে আঁটসাঁট থাকে, এবং দুর্ঘটনাবশত হঠাৎ করে খুলে যায় না। এমনকি প্রসব পরবর্তী যত্নের অংশ হিসাবে কিছু পরিবর্তন করে প্রসবের পরেও ওন্নারা পরিধান করা হয়।[৩]
৬ মুজহাম × ৩ মুজহাম (১ মুজহাম = ১.৫ ফুট প্রায়) আকারের একটি সুতি (হ্যান্ডলুম) কাপড় কোমরের চারপাশে ঘিরে বাঁধা হয়। এটি একটি নির্দিষ্ট শৈলীতে বাইরের পোশাকের (লেহেঙ্গা, শাড়ি, বা মুন্ডু) নিচে পরা হয়। এটি নাভির মাঝখানে থেকে কোমর পর্যন্ত জড়ানো হয়, তারপরে একটি ভাগ নিচের দিকে চলে গিয়ে লজ্জাস্থানসমূহকে ঢেকে দেয় এবং পিছনের দিকে গিয়ে একত্র ভিতরে গুঁজে দেওয়া হয়।[৩]
রাজ্যের কিছু অংশে ওন্নারাকে থারও বলা হয়, কেরালার দক্ষিণাঞ্চলে এই শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয়। ওন্নারা শব্দের ব্যবহার বেশিরভাগই হয় কেরালার উত্তর অংশে। তবে, ওন্নারার তুলনায় থার পরার ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য রয়েছে। থার পরার শৈলী ওন্নারার চেয়ে সহজ এবং বিভিন্ন ধরনের থার রয়েছে।
পুরানো দিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী সকালে ও সন্ধ্যায় সকলে মন্দির পরিদর্শন করে। সেই সময় ওন্নারা পরিধান করা উচিত। দেব দর্শনের আগে অবগাহন করে ভেজা কাপড়ে মন্দিরে আসা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কারণ তাতে শরীরের অঙ্গগুলি অন্যদের কাছে প্রদর্শিত হয়ে পড়ে। পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই এটি পরতেন, তবে বিশেষত মহিলারা এটি বাড়িতে এবং বাইরে যাওয়ার সময় ভিতরের পোশাক হিসাবে পরতেন।[৪]
আজকাল এটি ক্রমবর্ধমানভাবে সমাজের সকল শ্রেণীর মহিলাদের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে।
ওন্নারা শরীরের অঙ্গগুলিকে যথেষ্ট সহায়তা প্রদান করে এবং যোনিমুখ সম্পূর্ণরূপে ঢেকে দেয়। এটি শারীরিক নিঃসরণ শোষণে সাহায্য করে এবং একই সময়ে বায়ু সঞ্চালন করে গুপ্ত অঙ্গগুলি স্বাস্থ্যকর রাখে। এমনকি ঋতুকালীন সময়ে, এটি নিঃসরণ ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা করে এবং এর যথেষ্ট প্রস্থের কারণে অস্বস্তির অনুভূতি রোধ করে।[৩]
প্রসবের পরে, প্রসবোত্তর যত্নের অংশ হিসাবে কিছু পরিবর্তন করে নিয়ে, কখনও কখনও ওন্নারা পরা হয়।[৩]