ওমর ব্র্যাডলি | |
---|---|
১ম চেয়ারম্যান অব দ্যা জয়েন্ট চীফ্স অব স্টাফ | |
কাজের মেয়াদ আগস্ট ১৯, ১৯৪৯ – আগস্ট ১৫, ১৯৫৩ | |
রাষ্ট্রপতি | হ্যারি এস. ট্রুম্যান ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার |
পূর্বসূরী | উইলিয়াম লেহি (সর্বাধিনায়কের প্রধান স্টাফ কর্মকর্তা হিসেবে) |
উত্তরসূরী | আর্থার ডব্লিউ র্যাডফোর্ড |
যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর প্রধান স্টাফ কর্মকর্তা | |
কাজের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি ৭, ১৯৪৮ – আগস্ট ১৫, ১৯৪৯ | |
রাষ্ট্রপতি | হ্যারি এস. ট্রুম্যান |
পূর্বসূরী | ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার |
উত্তরসূরী | জে লটন কলিন্স |
যুদ্ধাহতদের পুনর্বাসন বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা | |
কাজের মেয়াদ আগস্ট ১৫, ১৯৪৫ – নভেম্বর ৩০, ১৯৪৭ | |
রাষ্ট্রপতি | হ্যারি এস. ট্রুম্যান |
পূর্বসূরী | ফ্রাঙ্ক হাইন্স |
উত্তরসূরী | কার্ল গ্রে |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ওমর নেলসন ব্র্যাডলি ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৩ ক্লার্ক, মিশৌরী, যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | ৮ এপ্রিল ১৯৮১ নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৮৮)
সমাধিস্থল | এ্যার্লিংটন জাতীয় কবরস্থান |
শিক্ষা | যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমী (ব্যাচলর অব সায়েন্স) |
স্বাক্ষর | |
সামরিক পরিষেবা | |
ডাকনাম | দাদা জেনারেল শীর্ষ জেনারেল |
আনুগত্য | যুক্তরাষ্ট্র |
শাখা | মার্কিন সেনাবাহিনী পদাতিক শাখা |
কাজের মেয়াদ | ১৯১৫-১৯৮১[১] |
পদ | জেনারেল অব দ্যা আর্মি |
কমান্ড | পদাতিক বাহিনী বিদ্যালয় ৮২তম ডিভিশন ২৮তম ডিভিশন দ্বিতীয় কোর ফার্স্ট আর্মি ১২তম আর্মি গ্রুপ সেনাবাহিনীর প্রধান স্টাফ কর্মকর্তা জয়েন্ট চীফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান |
যুদ্ধ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোরীয় যুদ্ধ |
পুরস্কার | ডিফেন্স ডিসটিংগুইশ্ড সার্ভিস ম্যাডেল আর্মি ডিসটিংগুইশ্ড সার্ভিস ম্যাডেল (৪) নেভি ডিসটিংগুইশ্ড সার্ভিস ম্যাডেল লেজিয়ন অব মেরিট (২) ব্রঞ্জ স্টার ম্যাডেল প্রেসিডেন্শিয়াল ম্যাডেল অব ফ্রীডম |
ওমর নেলসন ব্র্যাডলি (ফেব্রুয়ারি ১২, ১৮৯৩- ৮ এপ্রিল , ১৯৮১) যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন জেনারেল ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বিশেষ মেধার অবদান রাখেন। তিনি নবগঠিত পদ 'চেয়ারম্যান অব দ্যা জয়েন্ট চীফস অব স্টাফ কমিটি'র প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন এবং এপদে থাকাকালীন তিনি কোরীয় যুদ্ধের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।[২]
মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের র্যানডল্ফ জেলায় জন্মগ্রহণকারী ওমর যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমীতে ঢুকার আগে একটি হোটেলে পাচকের কাজ করতেন। ১৯১৫ সালে তিনি একাডেমী থেকে ২য় লেফটেন্যান্ট হিসেবে বের হন, তার ব্যাচমেট ছিলেন ১৯৫৩ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ওমর একজন সাধারণ পদাতিক সৈন্য ছিলেন। যুদ্ধের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমীতে পদাতিক বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। এরপর তাকে 'ওয়ার ডিপার্টমেন্ট'-এ একটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয় জেনারেল জর্জ মার্শালের অধীনে। ১৯৪১ সালে ওমর যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর পদাতিক বিদ্যালয়ের প্রধান অধিনায়ক হন।[৩]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ওমর মেজর-জেনারেল পদে ৮২তম ডিভিশনের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। তার দায়িত্ব ছিল উত্তর আফ্রিকায় 'অপারেশন টর্চ' পরিচালনা করা। এরপর ওমর লেঃ জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ২য় কোরের অধিনায়ক হন যেটাকে মধ্যপ্রাচ্যে নামানো হয়। পূর্ণ জেনারেল পদে তিনি 'ফার্স্ট আর্মি' এর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে তাকে দ্বাদশ সেনাবাহিনী (গ্রুপ) এর প্রধান অধিনায়ক করা হয়।[৪]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে জেনারেল ওমর যুদ্ধাহতদের পুনর্বাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান কর্মকর্তা হন, এবং ১৯৪৮ সালে তারই ব্যাচমেট জেনারেল ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ারের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর প্রধান স্টাফ কর্মকর্তার দায়িত্ব বুঝে নেন। পরের বছর নতুন তৈরি করা জয়েন্ট চীফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হন। ১৯৫০ সালে তাকে পাঁচ-তারকা পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং ১৯৮১ সালে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদে ছিলেন যদিও ১৯৫৩ সালে তিনি সকল সামরিক দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান।[৫]
ওমরের পিতার নাম জন স্মিথ ব্র্যাডলি (১৮৬৮-১৯০৮) এবং মাতারা নাম ম্যারি এলিজাবেথ হাবার্ড ছিলো। পিতা জন ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক এবং মাতা ম্যারি গৃহিণী। মিশৌরী অঙ্গরাজ্যের র্যানডল্ফ জেলায় তারা থাকতেন।[৬] ম্যারি ১৯৩১ সালে মারা যান যতদিনে ওমর সেনাবাহিনীতে মোটামুটি ভালো পদ পেয়ে গিয়েছিলেন। ওমরের পূর্বপুরুষ ১৭০০ সালের দিকে ব্রিটেন থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী হিসেবে আসেন এবং ১৭৭৬ সালে নাগরিকত্ব পেয়ে যান।[৭]
ওমর তার পিতার শিক্ষকতার বিদ্যালয়ে পড়েন, ১৯০৮ সালে জন মারা গেলে ওমর পাচক হিসেবে একটি হোটেলে কাজ নেন। ১৯১০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে পরীক্ষা দেন এবং উত্তীর্ণ হন, পরের বছরের জানুয়ারীতে তাকে যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষণের জন্য যোগ দিতে বলা হয় এবং ওমর যোগ দেন।
১৯১৫ সালে ওমরকে মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২য় লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন দেওয়া হয় ১৪তম পদাতিক রেজিমেন্টে, তিনি এই রেজিমেন্টের এক সাধারণ পদাতিক সৈনিক হিসেবে মেক্সিকো সীমান্তে নিয়োগ পান। ১৯১৭ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন সেনাবাহিনী পুরোদমে বিশ্বযুদ্ধে (প্রথম বিশ্বযুদ্ধ) লিপ্ত হলে ওমর ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পান এবং মন্টানা অঙ্গরাজ্যের বুট এলাকায় কপার মাইন ক্ষেত্রে সৈন্য তদারকির দায়িত্ব পান। ১৯১৮ সালের আগস্টে তাকে ১৯তম পদাতিক ডিভিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়। যুদ্ধ শেষ হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমীতে ইন্সট্রাক্টর হিসেবে যোগ দেন।
১৯২৪ সালে তিনি মেজর পদবী পান এবং জর্জিয়া সেনানিবাসে উচ্চতর পদাতিক যুদ্ধ বিষয়ক কৌশল শিখতে যান। এরপর হাওয়াই উপদ্বীপে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং হঠাৎ করে তিনি কানসাসের লেভেনওয়ার্থ সেনানিবাসের আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ স্কুলে পড়ার জন্য ডাক পান এখান থেকে পড়া শেষ করে তাকে পদাতিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য পাঠানো হয়।[৮] ১৯২৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমীতে পুনরায় প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৩৪ সালে আর্মি ওয়ার কলেজে পড়তে যান, এখান থেকে ১৯৩৬ সালে পাশ করে বেরোনোর সাথে সাথেই তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং তিনি ওয়ার ডিপার্টমেন্টে নিয়োগ পান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধচলাকালীন সময় ১৯৪১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওমর অস্থায়ী ব্রিগেডিয়ার-জেনারেল (মার্কিন সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার একটি জেনারেল পদ) পদে পদোন্নতি পান, তার এই পদ ১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্থায়ী করা হয়।[২] তিনি তার মিলিটারি একাডেমীর ব্যাচমেটদের মধ্যে তাড়াতাড়ি এবং সবার আগে জেনারেল হয়েছিলেন। ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি অস্থায়ী মেজর-জেনারেল হন এবং ৮২ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান, তার এই মেজর-জেনারেল পদ ১৯৪৪ সালের সেপ্টেম্বরে স্থায়ী করা হয় এবং এই বছরের জুনে তিনি ২৮ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ৮২ পদাতিক ডিভিশনকে ওমর একটি এয়ারবর্ন ডিভিশনে রূপান্তরিত করেছিলেন অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই। তার মিলিটারি একাডেমি ব্যাচমেটদের মধ্যে তিনি এবং ডোয়াইট সবার আগে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ওমর পূর্ণ জেনারেল পদ পেয়ে যান এবং ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে যুদ্ধাহত সৈনিকদের পুনর্বাসনের কাজে নিয়োজিত করা হয়।[৯] ১৯৪৮ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত হন যেটা আদতে মার্কিন সেনাবাহিনীর সবচেয়ে উঁচু পদ এবং পরোক্ষভাবে সেনাপ্রধান। ১৯৫৩ সালে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান যদিও তিনি ১৯৮১ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিধান করতেন মার্কিন সেনাবাহিনীর রীতি অনুযায়ী কারণ তিনি একজন পাঁচ তারকা জেনারেল ছিলেন।
জেনারেল ওমরের প্রথম স্ত্রীর নাম ছিলো কুয়াইলি যিনি ১৮৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৬৫ সালে মারা যান।
জেনারেল ওমর ১৯৮১ সালের এপ্রিল মাসের ৮ তারিখে নিউ ইয়র্কে মারা যান।