ওয়াজিরিস্তান পাকিস্তানের একটি পার্বত্য অঞ্চল, যা পূর্বে ফাটা এজেন্সি অংশ ছিল এবং বর্তমানে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান হিসেবে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুটি জেলা।[১][২] ওয়াজিরিস্তানের আয়তন ১১,৫৮৫ বর্গকিলোমিটার (৪৫০০ বর্গমাইল)। অঞ্চলটিতে জাতিগত পশতুনদের বাস। এর নামকরণ করা হয়েছে উজির গোত্রের নামানুসারে।[৩] ওয়াজিরিস্তানের মানুষের কথিত ভাষা পশতু, যা মূলত ওয়াজিরিস্তানী উপভাষা। এই অঞ্চলটি পাকিস্তানের ফেডারেল প্রশাসনিক উপজাতীয় অঞ্চলের দক্ষিণ অংশ গঠন করেছিল, যা এখন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত।[৪]
বায়েজিদ পীর রোশন ছিলেন ষোড়শ শতাব্দীর পশতুন বিপ্লবী নেতা এবং যোদ্ধা ও কবি, তিনি পশতু ভাষায় প্রাচীনতম গ্রন্থটি লিখেছিলেন, তিনি ওয়াজিরিস্তানের কানিগরমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ব্রিটিশরা আফগানিস্তানের সাথে সীমানা নির্ধারণ করার পরে ১৮৯৪ সালে ওয়াজিরিস্তানে প্রবেশ করেছিল।[৫] তারা ওয়াজিরিস্তানকে দুটি এজেন্সি, উত্তর ওয়াজিরিস্তান এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে বিভক্ত করেছিল; তারা তোচি উপত্যকার সবচেয়ে উর্বর অংশের জন্য ভূমি রেকর্ড এবং রাজস্ব প্রশাসনের নিয়মিত ব্যবস্থা চালু করেছিল। ব্রিটিশ সামরিক অভিযানের পরে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জন্য একজন রাজনৈতিক প্রতিনিধি স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তার সদর দফতর ওয়ানায় ছিল; অপর একজন মিরামশাহে সদর দফতর সহ উত্তর ওয়াজিরিস্তানের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল।
ওয়াজিরিস্তান কুরাম ও গোয়াল নদীর মধ্যস্থলে অবস্থিত, এর উত্তর দিকে কুরাম নদী এবং দক্ষিণে গোমাল নদী প্রবাহিত হয়েছে। এটি সীমানা ভাগ করেছে পূর্বে বানু ও ট্যাঙ্ক জেলা এবং উত্তর পূর্বে ফেডারেল ডিআই খান ও খুররম এজেন্সি, দক্ষিণে বেলুচিস্তানের শেরানি ও মুসাখেল জেলা, উত্তর ও পশ্চিমে আফগানিস্তানের খোস্ত, পাকতিয়া ও পাকতিয়া প্রদেশের সাথে।
ওয়াজিরিস্তানকে দুইটি এজেন্সিতে বিভক্ত করা হয়েছিল, যা এখন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের জেলা, উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান।
২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী উত্তর ওয়াজিরিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ৫৪৩,২৫৪ জন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ৬৭৪,০৬৫ জন। দুই অংশে বেশ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যদিও উভয় অংশে ওয়াজির গোত্রের বাস। তাদের দৃঢ় যোদ্ধা হিসাবে একটি খ্যাতি আছে।