ওয়ারেন লিস

ওয়ারেন লিস

এমবিই
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ওয়ারেন কেনেথ লিস
জন্ম (1952-03-19) ১৯ মার্চ ১৯৫২ (বয়স ৭২)
ডুনেডিন, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৩৫)
৯ অক্টোবর ১৯৭৬ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৫ আগস্ট ১৯৮৩ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৩২)
৯ জুন ১৯৭৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই২০ জুন ১৯৮৩ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ৩১ ১৪৬ ৮১
রানের সংখ্যা ৭৭৮ ২১৫ ৪,৯৩২ ১,০৭১
ব্যাটিং গড় ২৩.৫৭ ১১.৩১ ২৪.৬৬ ১৮.৭৮
১০০/৫০ ১/১ ০/০ ৫/১৮ ০/৪
সর্বোচ্চ রান ১৫২ ২৬ ১৫২ ৭৩*
বল করেছে ২৪৭
উইকেট
বোলিং গড় ৫৪.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৩৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫২/৭ ২৮/২ ৩০৪/৪৪ ৮২/১০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ওয়ারেন কেনেথ লিস, এমবিই (ইংরেজি: Warren Lees; জন্ম: ১৯ মার্চ, ১৯৫২) ডুনেডিন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন ওয়ারেন লিস। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ব্ল্যাক ক্যাপসদের কোচের দায়িত্বে ছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম পর্যন্ত ওয়ারেন লিসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৭০ সালে ওতাগোর সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ওয়ারেন লিসের। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। এ সময়কালে ১৪৬টি খেলায় অংশ নিয়ে ২৪.৬৬ গড়ে ৪৯৩২ রান ও ৩৪৮টি উইকেট লাভে সহায়তা করেন। ৩০৪টি ক্যাচ ও ৪৮টি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে দুইটি উইকেট পান।

১৯৭১ সালে ওতাগোর সদস্যরূপে লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৮১ খেলায় অংশ নিয়ে ১৮.৭৮ গড়ে ১০৭১ রান করেন। উইকেটের পিছনে অবস্থান করে ৮২ ক্যাচ ও ১০টি স্ট্যাম্পিং করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একুশটি টেস্ট ও একত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন। ৯ অক্টোবর, ১৯৭৬ তারিখে লাহোরে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৫ অক্টোবর, ১৯৮৩ তারিখে নটিংহামে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

কেন ওয়াডসওয়ার্থকে অনুসরণ করে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্য হন। অতিশীঘ্রই উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়াস চালান। ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে পাকিস্তান গমন করার সুযোগ ঘটে ওয়ারেন লিসের। করাচীতে অনুষ্ঠিত সিরিজের নিজস্ব তৃতীয় টেস্টে গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত অবস্থায় ১৫২ রান তুলেন। এটিই তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস হিসেবে চিত্রিত হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রান তুলে দলকে ড্রয়ের পথে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৮ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। অথচ, তুলনামূলকভাবে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া জক এডওয়ার্ডসের চেয়েও তার উইকেট-রক্ষণ ও ব্যাটিংয়ের মান শ্রেয়তর ছিল। কোন এক সাংবাদিকের দৃষ্টিকোণে তার দেখা সর্বনিকৃষ্ট উইকেট-রক্ষক ছিলেন জক এডওয়ার্ডস।[]

পরের বছর তিনি নিউজিল্যান্ড দলে ফিরে আসেন। ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশ নেন ও দলকে সেমি-ফাইনালে উপনীত করেন। কিন্তু ইয়ান স্মিথের ন্যায় উদীয়মান ক্রিকেটারের উত্থানে তার খেলার সুযোগ সীমিত হয়ে আসে। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে ওয়েলিংটন টেস্টে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে ইনিংসে পাঁচ ক্যাচসহ খেলায় আট ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

কোচিং

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৮৯ সালে কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন তিনি। ১৯৯০ সালে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে মনোনয়ন লাভের পূর্ব-পর্যন্ত প্রায় তিন বছর ওতাগো দলকে পরিচালনা করেছিলেন।[] দলকে নিয়ে প্রথম বিদেশ সফরে বেশ প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হন। পাকিস্তানের বিপক্ষে বেশ বড় ধরনের ব্যবধানে তিন টেস্ট ও তিনটি ওডিআইয়ে পরাজয়বরণ করে নিউজিল্যান্ড দল। ভ্রমণপথও বিশেষ সুবিধের হয়নি। যাত্রাপথে হারারেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কেবল স্বান্তনাসূচক একটি খেলায় জয় পায় তার দল।

১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেই স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিক্রমণ করেছিলেন তিনি।[] ঐ প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ড দল সেমি-ফাইনালে পরবর্তীতে শিরোপা লাভকারী পাকিস্তানের কাছে পরাজয়বরণ করে। নিউজিল্যান্ড দলে ভালো খেলোয়াড়ের সন্ধান পেলেও ভালোমানের খেলোয়াড় পাননি তিনি। মার্টিন ক্রো’র অধিনায়কত্বে দলটিতে গেভিন লারসেন, রড ল্যাথামউইলি ওয়াটসনের ন্যায় খেলোয়াড়ের উপস্থিতি ছিল।

ডিসেম্বর, ১৯৯২ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার আশঙ্কায় খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে সফর স্থগিত রাখা হয়। এ বিদেশ সফর বাতিল হবার পরপরই জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব থেকে তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। ২০১৪ সালে বেশ কয়েক বছর ব্ল্যাক ক্যাপসদের সাথে থাকার পর হোয়াইট ফার্নস নামে পরিচিত নিউজিল্যান্ড মহিলা দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে তাকে নিযুক্ত করা হয়।[] ঐ বছর তার দল ২০১৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুখোমুখি হয়। ডার্বির কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত খেলায় তার দল সাত উইকেটে জয় পেয়েছিল।[] ২০১৭ সালে ওয়ারেন লিস তার অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

১৯৮৯ সালের রাণীর জন্মদিনের সম্মাননায় ওয়ারেন লিসকে ক্রিকেট খেলায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ওবিই পদবীতে ভূষিত করা হয়।[]

সেন্ট্রাল ওতাগোর ক্লাইড এলাকায় ওয়ারেন লিস বসবাস করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। জাড নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন।[] কোচিং প্রদানকালীন সময়কে ‘কান্ট্রি কিডস’ নামে অভিহিত করতেন। বড় শহরগুলোয় দলের প্রতিপক্ষের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তা প্রয়োগ করতে পারেনি তার দল।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Lewis, Paul। "Keeper decision is Wright"। NZ Herald। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০১৫ 
  2. "Warren Lees named interim Coach of White Ferns"। NZC। ১৪ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  3. Genty, Mark (৩০ জানুয়ারি ২০১৫)। "Former coach Warren Lees hopes Black Caps can go one better at World Cup"Stuff.co.nz। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  4. Seconi, Adrian (২১ জুন ২০১৭)। "Great opportunity for White Ferns - Lees"Otago Daily Times। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  5. Seconi, Adrian (১৩ জুন ২০১৭)। "Lees decides it's time to step down as Sparks coach"Otago Daily Times। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  6. London Gazette (supplement), No. 51774, 16 June 1989. Retrieved 21 January 2019.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]