ক্রিকেট তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২২ জুন ২০১৮ |
ওয়াল্টার ব্রিয়ারলি (ইংরেজি: Walter Brearley; জন্ম: ১১ মার্চ, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ৩০ জানুয়ারি, ১৯৩৭) ল্যাঙ্কাশায়ারের বোল্টনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন তিনি।
ওয়াল্টার ব্রিয়ারলি মূলতঃ ফাস্ট বোলার ছিলেন। উইজডেনের ভাষায় তিনি ঘূর্ণায়মান অগ্নিকুণ্ড ছিলেন। তিনি পূর্ণাঙ্গ শক্তিমত্তা ও যথার্থ ওজন নিয়ে পেস ও সুইং বোলিং করতেন। ২৬ বছর বয়সে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। বলকে খুবই দ্রুততার সাথে ঘুরাতে সক্ষমতা দেখান। পরের বছর ওল্ড ট্রাফোর্ডের উইকেটে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তবে অনুপযোগী পিচে উইকেট লাভে ব্যর্থ হবার প্রেক্ষিতে দলের বাইরে চলে যেতে হয়।
পরের বছর তার বোলিং ল্যাঙ্কাশায়ারের পার করা চমৎকার মৌসুমের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। ষোল জয়ের বিপরীতে কোন পরাজয় ছিল না। তবে, উইজডেন মৌসুমের শেষদিকে তার বোলিং অকার্যকরতার কথা তুলে ধরে। পরের বছর তার বোলিং এতোটাই কার্যকর ছিল যে মরা পিচেও সফলতা পান। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সমারসেটের বিপক্ষে পেস ও নিখুঁত বোলিংয়ের অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখান।
কাউন্টি ক্রিকেটে চমৎকার ফলাফলের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে তাকে দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। উভয় ইনিংসেই চারটি করে উইকেট পান। ওভালের চূড়ান্ত টেস্টে ১৪ উইকেটের ছয়টিই ছিল তার। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ৫/১১০ লাভ করেন। ঐ মৌসুমের অংশগ্রহণকৃত সকল খেলায় মোট ছয়বার ভিক্টর ট্রাম্পার তার শিকারে পরিণত হন। ১৯.২৫ গড়ে ১৮১ উইকেট নিয়ে শীর্ষস্থান দখল করেন। দম রেখে ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে দ্রুততম পেস বোলিং করতেন ওয়াল্টার ব্রিয়ারলি। এ প্রেক্ষিতে ১৯০৬ সালে উইজডেন উল্লেখ করে যে, স্মরণীয় করে রাখার জন্যে আর কোন বাদ রাখেননি।
তবে, ঐ সময়ে বিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেও ঐ মৌসুম শেষে ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। অবশ্য এরপর নিজের মন পরিবর্তন করেন ও ১৯০৬ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে পাঁচ খেলায় অংশ নেন। লর্ডসে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে নেভিল নক্সের সাথে স্মরণীয় বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন তিনি। আবারও তিনি ১৯০৮ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দলটির পক্ষে খেলতে অস্বীকৃতিজ্ঞাপন করেন। ১৯০৭ সালে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে একটিমাত্র কার্যকরী প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। দলের উত্তরণে কয়েকবছর ব্যক্তিগতভাবে সময় দেন। তখনও তিনি যথেষ্ট কার্যকরী ছিলেন। কিন্তু, অল্পের জন্য সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লর্ডসে খেলতে পারেননি। ১৯০৮ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় তার। আগস্ট মাসের অধিকাংশ খেলা থেকে ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে বিরত থাকলেও চমৎকার বোলিং করতেন।
মাত্র সতেরো খেলায় ১৪৮ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।[১] ১৯০৯ সালে নিজেকে আরও মেলে ধরেন। কিন্তু একমাত্র টেস্টে তেমন কিছুই করতে পারেননি। পরের দুই বছর ব্যবসায়িক কারণে ও বড় ধরনের দূর্ঘটনার কারণে খেলায় অংশগ্রহণে সীমিতরূপ ধারণ করে। ল্যাঙ্কাশায়ারের আটান্নটি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় তিনি মাত্র চৌদ্দটিতে অংশ নিয়েছিলেন।
পরের বছর ব্রিয়ারলির সাথে ল্যাঙ্কাশায়ার কমিটির সম্পর্কের চিড় ধরে। ১৯১২ সালের শুরুতে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তিনি আর কাউন্টি ক্রিকেট খেলবেন না। তবে, ব্যবসাক্ষেত্রে সুযোগ আসার ফলে মাইনর কাউন্টিজ প্রতিযোগিতায় চেশায়ারের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। আরও একটি টেস্টে অংশ নিলেও উইকেট থেকে কিছুই সহায়তা পাননি।
মনেপ্রাণে ক্রিকেটের প্রতি আসক্তি ছিল তার। কিন্তু, ব্রিয়ারলি’র ব্যাটিং চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র তুলে ধরে। সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নিয়ে ৮৪৪ উইকেট লাভ করলেও মাত্র ৯০৮ রান তুলতে পেরেছিলেন তিনি। নেভিল কারদাস তার সম্পর্কে লিখেছিলেন যে, প্রত্যেক বলই ব্রিয়ারলিকে বেশ সমস্যায় ফেলতো।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর লর্ডসের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন। ১৯২৮-২৯ সময়কালে মাঠকর্মী হিসেবে বিল বোসের নিযুক্তি লাভের পর তাকে মূল্যবান প্রশিক্ষণ প্রদান করেছিলেন।[২]
খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পরও নিজের সক্ষমতার উপর তার আস্থা ছিল। শেষ বছরগুলোয় কোন নতুন ফাস্ট বোলারের বোলিংশৈলী পর্যবেক্ষণ করে প্রায়শঃই তাকে বলতে শোনা যেত, এখনও তিনি তার টুপিকে দ্রুতগতিতে ফেলে দিতে পারবেন।
৩০ জানুয়ারি, ১৯৩৭ তারিখে মেরিলেবোনের মিডলসেক্স হাসপাতালে ৬১ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।