ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ওয়েন মার্ক রুনি[১] | ||
জন্ম | ২৪ অক্টোবর ১৯৮৫ | ||
জন্ম স্থান | ক্রক্সটেথ, ইংল্যান্ড | ||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার)[২] | ||
মাঠে অবস্থান |
মধ্যমাঠের খেলোয়াড় আক্রমণভাগের খেলোয়াড়[৩] | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | ডার্বি কাউন্টি | ||
জার্সি নম্বর | ৩২ | ||
যুব পর্যায় | |||
লিভারপুল স্কুলবয়েজ | |||
কোপলহাউজ বয়েজ | |||
১৯৯৬–২০০২ | এভার্টন | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০০২–২০০৪ | এভার্টন | ৬৭ | (১৫) |
২০০৪–২০১৭ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৩৯৩ | (১৮৩) |
২০১৭–২০১৮ | এভার্টন | ৩১ | (১০) |
২০১৮–২০২০ | ডিসি ইউনাইটেড | ৪৮ | (২৩) |
২০২০– | ডার্বি কাউন্টি | ১৭ | (৫) |
জাতীয় দল | |||
২০০০–২০০১ | ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৫ | ৪ | (২) |
২০০১–২০০২ | ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ | ১২ | (৭) |
২০০২–২০০৩ | ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ | ১ | (০) |
২০০৩–২০১৮ | ইংল্যান্ড | ১২০ | (৫৩) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১২:২৯, ২৩ জুলাই ২০২০ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। |
ওয়েন মার্ক রুনি (ইংরেজি: Wayne Rooney; জন্ম: ২৪ অক্টোবর ১৯৮৫; শুধুমাত্র ওয়েন রুনি নামে সুপরিচিত) হলেন একজন ইংরেজ পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে ইংল্যান্ডের পেশাদার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তর ইএফএল চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব ডার্বি কাউন্টির হয়ে একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় জুড়ে একজন আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় অথবা কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবেও খেলেছেন। তার প্রজন্মের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত রুনি ইংল্যান্ড জাতীয় দল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড উভয়ের দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন।[৪]
রুনি মাত্র ৯ বছর বয়সে এভার্টনের যুব দলে যোগদান করেছিলেন এবং ২০০২ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে এই ক্লাবের সাথে তার প্রথম পেশাদার চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ২০০৪ সালের গ্রীষ্মে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ২৫.৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে যোগদান করার পূর্বে, তিনি এই মার্সিসাইড ক্লাবটিতে দুই মৌসুম অতিবাহিত করেছিলেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে তিনি ১৬টি শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন; একই সাথে তিনি সতীর্থ মাইকেল ক্যারিকের পাশাপাশি প্রথম ইংরেজ ফুটবলার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, লিগ কাপ, উয়েফা ইউরোপা লিগ এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জয়লাভ করেছেন।[৫][৬][৭] তিনি সকল প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫৩টি গোল করেছেন, যার মধ্যে শুধুমাত্র প্রিমিয়ার লিগেই করেছেন ১৮৩টি গোল; এর মাধ্যমে তিনি প্রিমিয়ার লিগে একটি নির্দিষ্ট ক্লাবের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। অন্যদিকে, রুনির করা প্রিমিয়ার লিগে ২০৮টি গোল তাকে প্রিমিয়ার লিগে সর্বকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতায় পরিণত করেছে; প্রথম স্থানে রয়েছেন অ্যালান শেয়ারার, যিনি ২৬০টি গোল করেছেন। একই সাথে তিনি প্রিমিয়ার লিগে ১০৩টি অ্যাসিস্ট করেছেন; যা এই লিগে তৃতীয় সর্বোচ্চ।[৮]
রুনি ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের হয়ে জ্যেষ্ঠ পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন, অতঃপর তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বকনিষ্ঠতম গোলদাতায় পরিণত হন।[৯] তিনি উয়েফা ইউরো ২০০৪-এ ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন; যেখানে তিনি চারটি গোল করেছেন, একই সাথে তিনি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করেছিলেন। রুনি ২০০৬, ২০১০ এবং ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং তার দেশের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন।[১০][১১] তিনি ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, এবং ২০১৫ সালে সর্বমোট ৪ বার ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা খেলোয়াড় পুরস্কার জয়লাভ করেছেন। ইংল্যান্ডের ১২০ ম্যাচে ৫৩টি গোল করার মাধ্যমে রুনি ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন; প্রথম স্থানে রয়েছেন পিটার শিল্টন, যিনি ১২৫টি ম্যাচ খেলেছেন।
২০০৯–১০ মৌসুম, রুনি পিএফএ খেলোয়াড়ের বর্ষসেরা খেলোয়াড় এবং এফডব্লিউএ বর্ষসেরা ফুটবলার পুরস্কার জয়লাভ করেছেন এবং তিনি তার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে সর্বমোট ৫ বার প্রিমিয়ার লিগ মাসের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়লাভ করেছেন; এই পুরস্কারটি শুধুমাত্র স্টিভেন জেরার্ড এবং হ্যারি কেন তার থেকে অধিকবার জয়লাভ করেছে। ২০১০-এর দশকের শুরুতে রুনির দুর্দান্ত খেলা তাকে ২০১১ সালে ফিফা বালোঁ দরে পঞ্চম স্থান অর্জন করতে সাহায্য করেছিল। একই সাথে তিনি একই বছরে ফিফা ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি তিনবার বিবিসির ম্যাচ অফ দ্য ডে জরিপের মাধ্যমে প্রদানকৃত মৌসুমের সেরা গোল পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তার বাইসাইকেল কিক হতে গোলটি প্রিমিয়ার লিগ ২০ মৌসুমের সেরা গোলের পুরস্কার জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।[১২]
ওয়েন মার্ক রুনি ১৯৮৫ সালের ২৪শে অক্টোবর তারিখে ইংল্যান্ডের লিভারপুলের ক্রক্সটেথে বসবাসরত জ্যানেট মেরি (ওরফে মোরি) এবং টমাস ওয়েন রুনির ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন।[১৩] তিনি আইরিশ বংশোদ্ভূত[১৪][১৫] এবং একজন রোমান ক্যাথলিক[১৬][১৭] হিসেবে তার ছোট ভাই গ্রাহাম এবং জনের সাথে তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।[১৮] তারা তিনজনই আওয়ার লেডি আনফ সেন্ট সুইথিন'স প্রাইমারি স্কুল[১৯] এবং দে লা সায়ে একাডেমিতে পড়াশুনা সম্পন্ন করেছেন।[২০] তিনি ছোটবেলা থেকেই এভার্টনের একজন সমর্থক ছিলেন এবং তাদের খেলা দেখেই শৈশবের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন।[২১] তিনি ব্রাজিলীয় ফুটবলার রোনালদোর একজন ভক্ত, যার সম্পর্কে তিনি বলেছেন, "আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনি [রোনালদো] সম্ভবত সেরা ছিলেন।"[২২]
লিভারপুল স্কুলবয়েজ ও ডাইনামো ব্রাউনিংসে সাফল্য লাভের পর রুনি তার ১১তম জন্মদিনের কয়েকদিন আগে এভারটনের সাথে চুক্তি সম্পাদন করেন।[২৩] ২০০২ সালের ১৯শে অক্টোবরে এভারটনের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ১৬ বছর ৩৬০ দিন বয়সে গোল করে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পান। পরে অবশ্য এ রেকর্ড দুইবার ভেঙ্গেছে। তৎকালীন শিরোপাধারী আর্সেনালের বিপক্ষে তার গোল দলটির টানা ৩০ খেলায় অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।[২৪] ২০০২ সালের শেষে তিনি বিবিসি বর্ষসেরা তরুণ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হন।
১৭ বছর এবং পেশাদার খেলার যোগ্যতা অর্জনের আগে তিনি সপ্তাহে ৮০ পাউন্ডের বিনিময়ে কাউন্সিল এস্টেটে খেলতেন। এই বেতন পরবর্তীকালে কয়েকবার বেড়েছে এবং রুনি বর্তমানে সপ্তাহে প্রায় ৫১,৭৫৫ পাউন্ড বেতন পান। ইউরো ২০০৪ এ দক্ষতা প্রদর্শনের পর তিনি গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এভারটন দাবি করে তারা ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের কমে রুনিকে বিক্রি করবে না। এভারটন রুনিকে সপ্তাহে ১২,০০০ পাউন্ডের বেতন সহ তিন বছর মেয়াদী চুক্তির প্রস্তাব দেয়। তবে ২০০৪ সালের ২৭শে আগস্ট রুনির এজেন্ট এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ফলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নিউক্যাসল ইউনাইটেড রুনিকে পেতে ময়দানে অবতীর্ণ হয়।
দ্য টাইমস পত্রিকা, ১৮.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে নিউক্যাসলের সাথে রুনির চুক্তি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে একটি খবর প্রকাশ করে, রুনির এজেন্ট যার সত্যতা পরে স্বীকার করেন। শেষপর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড রুনিকে দলে ভেড়াতে সক্ষম হয়। ২০০৪ সালের ৩১শে আগস্ট রুনি এভারটনে দলবদলের আবেদন করেন এবং ম্যানচেস্টারের সাথে ৩১ মিলিয়ন পাউন্ড (৪৯ মিলিয়ন পাউন্ড বেতন সহ) মূল্যের একটি চুক্তিতে এভারটন রাজী হয়। দলবদলের সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
এভারটনকে প্রাথমিক খরচ ২৩ মিলিয়ন পাউন্ডে দুই বছরে শোধ করা হয়; বাকী অর্থ নির্ভর করবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং/অথবা ইংল্যান্ডের হয়ে তার সফলতার উপর। পরবর্তী তিন বছরে তার ফী সর্বোচ্চ সীমা ৩১ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌছাবে বলে ধারণা করা হয়। ২০০৪-০৫ মৌসুমে ২০০৫, ৩০শে জুনের হিসাব অনুযায়ী রুনি বাবদ দলের খরচ হয়েছে ২৫.০৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড, ১৪ মিলিয়ন পাউন্ড যোগ করে খরচসহ তার সর্বোচ্চ ফী দাঁড়ায় ৩৬.০৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড।[২৫]
ব্রিটিশ খেলোয়াড় হিসেবে রুনির চুক্তি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, যা কেবল ইউনাইটেডে তার সহকর্মী রিও ফার্ডিনান্ডের চুক্তি থেকেই পিছিয়ে আছে। তবে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়ের রেকর্ড রুনির দখলে। যখন তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগদান করেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮।[২৬]
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পক্ষে রুনির অভিষেক ঘটে ২০০৪ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের একটি খেলায় ফেনেরবাচের(Fenerbahçe) বিরুদ্ধে, যে খেলায় তিনি হ্যাট্রিক করেন ও আরেকটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৬-২ গোলে বিজয়ী হয়।[২৭] ২০০৫-০৬ মৌসুমে রুনি প্রথমদিকে তার আসল অবস্থান মধ্যমাঠ ছেড়ে সারা মাঠেই খেলতে শুরু করেন। বিশেষজ্ঞ ও সমর্থকেরা মনে করেছিলেন রুনি তার অবস্থানে তেমন দক্ষতা দেখাতে পারছেন না। মৌসুমের শুরুতে ইউনাইটেডের খারাপ সূচনার পর স্যার এলেক্স ফার্গুসন রুনিকে তার প্রিয় অবস্থানে ফেরত আনেন এবং তিনি রুড ভ্যান নিস্তেলরয়ের সাথে দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে শুরু করেন। ২০০৬ সালে তিনি প্রথম পেশাদার মেডেল জিতেন লিগ কাপ জিতে নিয়ে। ২০০৬ লিগ কাপের ফাইনাল খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। এখেলায় রুনির দু'গোল সহ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড উইগানের বিপক্ষে ৪-০ গোলে বিজয়ী হয়। ২০০৫ সালে এফ.এ. কাপে আর্সেনালের মুখোমুখি হওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দলের সদস্য ছিলেন, যাতে ম্যানচেস্টার হেরে যায়। ২০০৬ সালের ১৭ই অক্টোবর তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগের একটি খেলায় কোপেনহেগেনের বিরুদ্ধে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অধিনায়ক হিসেবে দলের নেতৃত্ব দেন। তিনিই সম্ভবত ম্যানচেস্টারের ইতিহাসে কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।[২৮] ২০০৬ সালের ২৬শে নভেম্বর তিনি ইউনাইটেডের সাথে তার চুক্তির মেয়াদ আরো দুই বছর বৃদ্ধি করেন, যার কমপক্ষে ২০১২ সাল পর্যন্ত তাকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে দেখা যাবে। এই চুক্তি সম্পাদন হতে সময় লাগে মাত্র একমাস। এ থেকেই বোঝা যায় রুনি ও ইউনাইটেডের সম্পর্ক কত গভীর।
গোলদাতা এভারটন ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রুনির ভূমিকা ছিল খুবই ফলপ্রসূ। গোলদাতা হিসেবে তিনি অন্যান্য বিশ্বমানের স্ট্রাইকার যেমন সাবেক ইউনাইটেড সতীর্থ রুড ভ্যান নিস্তেলরয়ের সমান দক্ষ। এছাড়া তিনি নিয়মিত গোলদানে সহায়তাও করে থাকেন। ২০০৫-০৬ মৌসুমে তিনি নিজে ১৬টি গোল করেছেন এবং ১৪টি গোল করায় সহায়তা করেছেন, যা তার সহযোগী গোলদাতা লুইস সাহার গোলসংখ্যা থেকে কম কিন্তু সহায়তার সংখ্যা বিচারে রুনিই এগিয়ে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০০৬-০৭ মৌসুমের প্রথমার্ধে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করার আগে টানা ১০ খেলায় রুনি কোন গোল পাননি। তার শারীরিক যোগ্যতা ও মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল কেননা মাঠে তাকে আগের তুলনায় কিছুটা নিস্ক্রিয় দেখা গেছে। এছাড়া দলের আরেক সতীর্থ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ধারাবাহিক সাফল্যে রুনির উপস্থিতি প্রায় চাপা পড়ে ছিল। একজন উইঙ্গার হওয়া সত্ত্বেও রোনালদোর গোলের হার ছিল রুনির চেয়ে বেশি। তা সত্ত্বেও ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনিই প্রিমিয়ারশিপের শীর্ষ ইংরেজ গোলদাতা ছিলেন এবং পূর্ববর্তী মৌসুমের তুলনায় অনেক কম কার্ড পেয়েছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এফ.এ. কাপে পোর্টসমাউথের বিপক্ষে একটি খেলায় রুনিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামানো হলে তিনি দুটি গোল করেন, যার একটি গোল ছিল ২৫-গজ দূর থেকে করা সুন্দর চিপ শটে। বোল্টনের বিরুদ্ধে ইউনাইটেডের চারটি গোলের দুটি তার কাছ থেকে আসে। ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল, দীর্ঘ আড়াই বছর পর রুনি কোন ইউরোপীয় দলের বিরুদ্ধে গোল করেন রোমার বিরুদ্ধে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের খেলায়, যাতে ইউনাইটেড ২-১ গোলে হেরে যায়। কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগেও তিনি গোল করেন এবং সেমি-ফাইনালে এ.সি. মিলানের বিপক্ষে প্রথম লেগের ৩-২ ব্যবধানে জয়ে তিনি দুই গোল করেন।[২৯] এপ্রিলের শেষে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রুনি দলের হয়ে ২৩ গোল করেন, যা তার সতীর্থ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়ে বেশি।
জাতীয় দলেও রুনির ভূমিকা অপরিহার্য। ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক খেলায় রুনি তার দক্ষতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। ২০০৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি খেলায় ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে রুনির অভিষেক হয়, যখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর ১১১ দিন। পরে অবশ্য এই রেকর্ড ভাঙ্গেন থিও ওয়ালকট, যিনি হাঙ্গেরির বিপক্ষে প্রীতি খেলায় পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে ২০০৬ সালের ৩০শে মে ইংল্যান্ডের হয়ে মাঠে নামেন। রুনির আগে ইংল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন জেমস এফ. এম. প্রিন্সেপ,[১] যিনি প্রায় সোয়া শতাব্দি আগে ১৮৭৯ সালের ৫ এপ্রিল ১৭ বছর ২৫৩ দিন বয়সে এ রেকর্ড গড়েছিলেন। রুনি ইংল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা, যা তিনি করেছেন ১৭ বছর ৩১৭ দিন বয়সে।
পর্তুগালে অনুষ্ঠিত ইউরো ২০০৪ প্রতিযোগিতায় তিনি তার দক্ষতা প্রদর্শন করেন, এবং উদীয়মান তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। [২][৩] ২০০৪ সালের ১৭ জুন এই প্রতিযোগিতায় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করে তিনি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড গড়েন। এ খেলায় তিনি দুই গোল করেন। তার এ রেকর্ড বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। রেকর্ডের চারদিন পর আরেক সুইজারল্যান্ডীয় খেলোয়াড় জোহান ভোনলান্থেন ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল করে ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতায় পরিনত হন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পর্তুগালের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের খেলায় তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং ইংল্যান্ড টাইব্রেকারে পরাজিত হয়ে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নেয়।
২০০২ সালে দুটি গ্রুপ রুনির দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়ার জন্য দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। পরে আদালতে এ নিয়ে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হয়। আদালতে বলা হয় একটি গ্রুপ দ্বন্দ্ব নিরসনে লন্ডনের অখ্যাত রংবাজ টমি এডামসের সাহায্য চেয়েছিল। [৪]
উচ্ছৃঙ্খল আচরণ রুনির ক্যারিয়ারকে বেশ কয়েকবার কলঙ্কিত করেছে।[৩০] ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলায় সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক ডেভিড বেকহ্যামের সাথে খেলার মধ্যেই তিনি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন,[৩১] তবে এরপর থেকে দুজনই কোন সমস্যা ছাড়াই দলে খেলেছেন।
অসদাচরনের কারণে চ্যাম্পিয়নস লিগে ভিলারিয়েলের সাথে একটি খেলায় তাকে মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়, যাতে ইউনাইটেড ০-০ গোলে ড্র করে। তাকে, তার মতে অযৌক্তিক হলুদ কার্ড দেখানো হলে, তিনি রেফারি কিম মিল্টন নীলসেনের উদ্দেশ্যে ব্যাঙ্গোক্তি করেন, ফলে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়।[৩২]
রুনি তার মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতিজ্ঞা করেছেন এবং দল ও আন্তর্জাতিক ম্যানেজারগণ রুনির পক্ষ নিয়ে বলেছেন তার এই উচ্ছৃঙ্খল আচরণের মূল কারণ তার যৌবন। রুনির মেজাজের সমস্যা সুপরিচিত এবং অন্য দলের খেলোয়াড়গণ এই স্বভাবকে রুনির বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছেন। খেলার মাঝে রুনিকে খোঁচা মেরে তাকে উত্তেজিত হতে উৎসাহিত করা একটি সাধারণ ব্যাপারে পরিনত হয়েছিল।[৩৩] ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে রুনি তার মেজাজ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন যার প্রমাণ ২০০৫-০৬ মৌসুমে তার হলুদ ও লাল কার্ডের সংখ্যা অনেক কম। ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে খেলার ৬২ মিনিটে রুনিকে অসদাচরনের জন্য লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়। তিনি তৃতীয় ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপে লাল কার্ড দেখেছেন। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রুনি এবং রিকার্দো কারভালহো ও পেতিতের মধ্যে লড়াই চলাকালে রুনির পা কারভালহোর কুঁচকির উপর পড়ে। ঘটনাটি ঘটে ঠিক আর্জেন্টিনার রেফারি হোরাশিও এলিজোন্দোর সামনে। খেলার থামার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রুনির সতীর্থ পর্তুগিজ খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রেফারির সামনে প্রতিবাদ করেন। রুনি তখন রোনালদোকে ধাক্কা দেন এবং রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান। তখন মনে করা হয়েছিল লাল কার্ডটি ঘটনাটি কারভালহো ও রোনালদো উভয়ের সাথে রুনির ব্যবহারের জন্য।[৩৪] তবে ৪ জুলাই দ্য টাইমস পত্রিকায় রেফারি এলিজোন্দো বলেন, লাল কার্ড দেখানো হয়েছিক কারভালহোকে পদাঘাত করার কারণে, পরবর্তী দ্বন্দ্বের কারণে নয়। তিনি বলেন "এটা ছিল উগ্র খেলা এবং এ কারণে সে লাল কার্ড পেয়েছে। জনগণ যা খুশি বলতে পারে (রোনালদো সম্পর্কে) কিন্তু আসলে এর কোন প্রভাবই ছিলনা। আমার কাছে এটা ছিল পরিষ্কার লাল কার্ড, তাই আমি পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের কাছে প্রতিক্রিয়া দেখাই নি।"[৩৫]
ইংল্যান্ড টাইব্রেকারে হেরে যাওয়ার পর গ্যারি লিনেকারের নেতৃত্বে বিবিসির বিশেষজ্ঞ দল একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে যা তাদের কাছে রুনির লাল কার্ডের কারণে চিত্তাকর্ষক মনে হয়েছে। খেলার আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রুনির সতীর্থ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পিছন থেকে তার কাছে আসেন এবং রুনির কানে সরাসরি কিছু বলার আগে তার মাথা রুনির দিকে আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে আনেন।[৩৬] রুনির তখনকার প্রতিক্রিয়া ও রোনালদোর চেহারা দেখে মোটেও ক্রীড়াসুলভ মনে হয়নি। রুনির মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর রোনালদো পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে চোখ টেপেন।[৩৬] খেলার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বলেন, তিনি রেফারিকে লাল কার্ড দেখাতে জোরাজুরি করেননি, শুধু এটা একটা ফাউল বলার জন্যই রেফারির শরনাপন্ন হয়েছিলেন।
৩ জুলাই রুনি একটি বিবৃতি দেন, যাতে তিনি বলেন, "ক্রিস্টিয়ানোর প্রতি আমার কোণ খারাপ মনোভাব নেই তবে আমি ব্যাথিত এইজন্য যে সে ঘটনার সাথে জড়িত হতে চেয়েছে। আমি মনে করি সেই ঘটনার সময় আমার স্মরণ করা উচিত ছিল আমরা তখন সতীর্থ নই।" তিনি আরো দাবি করেন এই ঘটনা কেবলই একটি দুর্ঘটনা। তিনি বিবৃতিতে তার প্রতিক্রিয়ার পক্ষে বলেন: "আমি বলতে চাই আমি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার পা রিকার্ডো কারভালহোর উপর ফেলিনি। সে আমার পিছন থেকে পিছলে যায় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন অবস্থানে উপনীত হয় যেখানে নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য আমার পা সেই অবস্থায় যায়। এই হচ্ছে অবস্থা। যখন রেফারি আমাকে লাল কার্ড দেন তখন আমি খুবই অবাক হয়েছি।"[৩৭]
ফিফার শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কমিটি কোয়ার্টার-ফাইনালে ওয়েন রুনির লাল কার্ড পাওয়ার ঘটনা তদন্ত করে এবং দুটি প্রতিযোগিতামূলক খেলায় রুনিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ৫,০০০ সুইস ফ্রাঙ্ক জরিমানা করে।[৩৮]
২০০৬ সালের ৪ আগস্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে এফসি পোর্তোর বিরুদ্ধে খেলায় রুনি অবৈধভাবে কনুই ব্যবহার করার কারণে আবার লাল কার্ড পান,[৩৯] এবং পরবর্তীতে এফএ কর্তৃক তিন-খেলার জন্য নিষিদ্ধ হন, যখন রেফারি রুড বোসেন ২৩ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্টে কেন রুনিকে সে খেলায় লাল কার্ড দেখানো জরুরি ছিল তা প্রকাশ করেন। [৪০] এই ঘটনা সবাইকে আশ্চর্যান্বিত করেছে কারণ অন্য যে খেলোয়াড়েরা মৌসুমপূর্ব প্রীতি খেলায় লাল কার্ড দেখেছেন তাদের বেলায় কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি। রুনি এফএতে এ বিষয়ে লেখেন এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে এফএকে দেয়া তার ছবি ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাহার করার হুমকি দেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তবে এফএর এ বিষয়ক কোন নিয়ম নেই। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
খেলার সমইয়ে না ঘটলেও, ২০০৬ সালের ২ সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্ল্যাকবার্ন রোভারস দলের মাইকেল গ্রেকে ঘুষি মারার অভিযোগ উঠে। ঘটনা সম্পর্কে বলা হয় ম্যানচেস্টারের একটি রেস্তোরায় রুনির বাগদত্তা কলিন ম্যাকলৌহলিন সম্পর্কে গ্রে কটূক্তি করেন ফলে রুনি গ্রেকে ঘুষি মারেন। পুলিশকে ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।[৪১]
২০০৬ সালের ২৪ নভেম্বরে ম্যানচেস্টার নাইটক্লাবের বাইরে মারামারি সম্পর্কে ওয়েন রুনিকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়। এই ঘটনা ঘটেছে সম্ভবত কোন ফটোগ্রাফার যখন রুনির সাথে বাদানুবাদে লিপ্ত হন। ফটোগ্রাফারের কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ওয়েন সিনিয়র ও জেনেট রুনির তিন সন্তানের একজন রুনি। তার অন্য দুভাই গ্রাহাম ও জন।[৪২] তিনি একটিও জিসিএসই (GCSE) অর্জন করেননি।[৪৩]
২০০২ সালের অক্টোবরে আর্সেনালের বিপক্ষে সেই গোলের পর তিনি সর্বদাই গণমাধ্যমে পাদপ্রদীপের আলোয় থেকেছেন। বান্ধবী কলিন ম্যাকলৌহলিনের সাথে সম্পর্কের জন্য তিনি গণমাধ্যমে সমালোচিত হয়েছেন। কলিনকে বিভিন্ন ট্যাবলয়েড পত্রিকা তা কেনাকাটার অভ্যাসের জন্য সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] রুনি বর্তমানে চেশায়ারের প্রেস্টবারি গ্রামের ৪.২৫ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি প্রাসাদে বসবাস করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যাওয়ার পর তাকে চেশায়ার এলাকার বাসা খুঁজতে বলা হয়। একদিন একটি পাবের পাশে যাওয়ার সময় তার মনে হয় পাবটির নাম "অ্যাডমিরাল রুনি" এবং এটি তার ভবিষ্যত বাড়ীর উপযুক্ত বলে মনে করেন। আসলে পাবটির নাম ছিল "অ্যাডমিরাল রডনি", কিন্তু রুনি প্রেস্টপবারি গ্রামটি পছন্দ করেন (kicker, এপ্রিল ১৮, ২০০৬, পৃষ্ঠা ৭৯-৮০)। এছাড়া ফ্লোরিডার পোর্ট চার্লটের হারবার পয়েন্ট এবং মারবেলাতেও তার সম্পত্তি রয়েছে।[৪৪]
রুনির সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন নাইকি, নোকিয়া, ফোর্ড, অ্যাসডা এবং কোকা-কোলার সাথে আকর্ষনীয় চুক্তি রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বর্তমানে তার বাজারমূল্য প্রায় ৪৬ মিলিয়ন ইউরো, যা তাকে রোনালদিনহো ও ডেভিড বেকহ্যামের পর তৃতীয় সেরা ধনী ফুটবল খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]ফিফা ০৬ ও ফিফা ০৭ দুটি ভিডিও গেমের যুক্তরাজ্য এলাকার প্রচ্ছদে রুনিকে দেখানো হয়েছে[৪৫] এবং ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে ৫০০ মিলিয়ন কোকা-কোলা ক্যানের সাথে তাকে দেখানো হয়েছে। রুনির প্রিয় র্যা প সঙ্গীত তারকা হচ্ছেন এমিনেম ও ৫০ সেন্ট।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তার প্রিয় চলচ্চিত্র হচ্ছে গ্রীজ, এবং তার প্রিয় টিভি সিরিজ হচ্ছে অনলি ফুলস এন্ড হর্সেস।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এছাড়া তিনি হ্যারি পটার সিরিজের সকল বইয়ের অন্ধভক্ত। তিনি বক্সিং ভালবাসেন এবং তার আদর্শ পুরুষের তালিকায় আছেন মাইক টাইসন (kicker, এপ্রিল ১৮, ২০০৬, পৃ. ৭৯-৮০)।
অবসর সময়ে রুনি ভিডিও গেম খেলতে ভালবাসেন। তার প্রিয় খেলা হচ্ছে ফিফা ০৭ যা তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ ওয়েস ব্রাউন, জন ও'শি এবং রিও ফার্ডিনান্ডের সাথে খেলে থাকেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০০৬ সালের এপ্রিলে বিভিন্ন পত্রিকা জুয়ায় রুনির ৭০০,০০০ পাউন্ড দেনা আছে জানিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে,[৪৬] এবং তার সম্ভাব্য ব্যবসায়িক সহযোগী হিসবে মাইকেল ওয়েনের নাম প্রকাশ করে।[৪৭] কিছুদিন পরে তিনি দ্য সান ও নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড পত্রিকা থেকে মিথ্যা সংবাদ উপস্থাপন করায় মানহানির ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০০,০০০ পাউন্ড পান (যা তিনি দাতব্য সংস্থায় দান করেন)। পত্রিকা দুটি দাবি করেছিল তিনি তার বাগদত্তাকে নাইটক্লাবে প্রহার করেছেন।[৪৮]
২০০৬ সেপ্টেম্বরে আবার রুনি আলোচনায় আসেন যখন ব্ল্যাকবার্নের মাইকেল গ্রের প্ররোচনায় উত্তেজিত হয়ে তার চোখে রুনি ঘুষি মারেন।
২০০৬ সালের ৯ মার্চ রুনি হার্পারকলিন্স নামের প্রকাশকের সাথে প্রকাশনা সংস্থার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ক্রীড়া বিষয়ক বইয়ের চুক্তি করেন।[৪৯] তিনি গ্রন্থস্বত্ত্ব ছাড়াও ৫ মিলিয়ন পাউন্ড অগ্রিম পাবেন, ৫টি বইয়ের জন্য যা ১২ বছরের মধ্যে প্রকাশিত হবে। তার প্রথম বই, My Story So Far, যা বেনামী লেখকের লেখা আত্মজীবনী, প্রকাশের কথা ছিল বিশ্বকাপের পর। ২০০৬ সালের ১লা সেপ্টেম্বর এভরটন ম্যানেজার ডেভিড ময়েস ডেইলি মেইল এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যারা রুনির বইটির কিছু অংশ উল্লেখ করেছিল যাতে রুনির এভারটন ত্যাগের ঘটনার বর্ণনা ছিল। রুনির বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেয়া হয়। [৫০]
২০০৬ সালের জুলাই মাসে রুনির আইনজীবিরা ইন্টারনেটে "waynerooney.com" ও "waynerooney.co.uk" দুটি ডোমেইনের মালিকানা বিষয়ে নিস্পত্তির জন্য জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন (WIPO) প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হন, যেটির জন্য নিবন্ধন করেছিলেন ওয়েলশ টেলিভিশন অভিনেতা হিউ মার্শাল ২০০২ সালে।[৫১] ২০০৬ সালের অক্টোবরে ডব্লিউআইপিও( WIPO) রায় দেয় যে "waynerooney.com" ডোমেইনের মালিকানা রুনির কাছে হস্তান্তর করা উচিত।[৫২]
২০০২সালের অক্টোবরে তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ারশীপে সবচেয়ে কম বয়সে (১৬ বছর ৩৬০ দিন)গোল করেন।
২০০৩সালের ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে (১৭ বছর ১১১ দিন)তার অভিষেক হয়।
২০০৪সালের জুনে ইউরোপিয়ান কাপে সবচেয়ে কম বয়সে (১৮ বছর ২৩৭ দিন)গোল করেন।
(উপরের ৩টি রেকর্ড পরবর্তীকালে তার হাতছাড়া হয়)
ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি সবচেয়ে কম বয়সে (১৭ বছর ৩১৭ দিন)গোল করেন।
ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি তরুণ খেলোয়াড় (১৮ বছর বয়সে ৩০মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তাকে দলে পায়)।
ক্লাব | মৌসুম | লিগ | এফ এ কাপ | লিগ কাপ | ইউরোপ | অন্যান্য | সর্বমোট | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ডিভিশন | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | ||
এভারটন | ২০০২-০৩ | প্রিমিয়ার লিগ | ৩৩ | ৬ | ১ | ০ | ৩ | ২ | – | – | ৩৭ | ৮ | ||
২০০৩-০৪ | ৩৪ | ৯ | ৩ | ০ | ৩ | ০ | – | – | ৪০ | ৯ | ||||
সর্বমোট | ৬৭ | ১৫ | ৪ | ০ | ৬ | ২ | – | – | ৭৭ | ১৭ | ||||
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ২০০৪-০৫ | প্রিমিয়ার লিগ | ২৯ | ১১ | ৬ | ৩ | ২ | ০ | ৬ | ৩ | ০ | ০ | ৪৩ | ১৭ |
২০০৫-০৬ | ৩৬ | ১৬ | ৩ | ০ | ৪ | ২ | ৫ | ১ | – | ৪৮ | ১৯ | |||
২০০৬-০৭ | ৩৫ | ১৪ | ৭ | ৫ | ১ | ০ | ১২ | ৪ | – | ৫৫ | ২৩ | |||
২০০৭-০৮ | ২৭ | ১২ | ৪ | ২ | ০ | ০ | ১১ | ৪ | ১ | ০ | ৪৩ | ১৮ | ||
২০০৮-০৯ | ৩০ | ১২ | ২ | ১ | ১ | ০ | ১৪ | ৪ | ১ | ৩ | ৪৮ | ২০ | ||
২০০৯-১০ | ৩২ | ২৬ | ১ | ০ | ৩ | ২ | ৭ | ৫ | ১ | ১ | ৪৪ | ৩৪ | ||
২০১০-১১ | ২৮ | ১১ | ২ | ১ | 0 | 0 | ৯ | ১ | ১ | 0 | ৪০ | ১৬ | ||
২০১১-১২ | ৩৪ | ২৭ | ১ | ২ | ০ | ০ | ৭ | ৫ | ১ | 0 | ৪৩ | ৩৪ | ||
২০১২-১৩ | ২৭ | ১২ | ৩ | ৩ | ১ | ০ | ৬ | ১ | – | ৩৭ | ১৬ | |||
২০১৩-১৪ | ২৯ | ১৭ | ০ | ০ | ২ | ০ | ৯ | ২ | ০ | ০ | ৪০ | ১৯ | ||
সর্বমোট | ৩০৭ | ১৫৮ | ২৯ | ১৭ | ১৪ | ৪ | ৮৫ | ৩৩ | ৭ | ৪ | ৪৪২ | ২১৬ | ||
ক্যারিয়ার সর্বমোট | ৩৭৪ | ১৭৩ | ৩৩ | ১৭ | ২০ | ৬ | ৮৫ | ৩৩ | ৭ | ৪ | ৫১৭ | ২৩২ |
ইংল্যান্ড জাতীয় দল | ||
---|---|---|
বছর | উপস্থিতি | গোল |
২০০৩ | ৯ | ৩ |
২০০৪ | ১১ | ৬ |
২০০৫ | ৮ | ২ |
২০০৬ | ৮ | ১ |
২০০৭ | ৪ | ২ |
২০০৮ | ৮ | ৫ |
২০০৯ | ৯ | ৬ |
২০১০ | ১১ | ১ |
২০১১ | ৫ | ২ |
২০১২ | ৫ | ৪ |
২০১৩ | ১০ | ৬ |
সর্বমোট | ৮৮ | ৩৮ |
১৯ নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত[৫৩]
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
পূর্বসূরী স্কট পার্কার |
পিএফএ বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় ২০০৫, ২০০৬ |
উত্তরসূরী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো |
পূর্বসূরী নেই |
ফিফপ্রো বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় ২০০৫ |
উত্তরসূরী লিওনেল মেসি |
পূর্বসূরী ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড |
পিএফএ সমর্থক রায়ে বর্ষসেরা খেলোয়াড় ২০০৬ |
উত্তরসূরী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো |