ককবরক | |
---|---|
দেশোদ্ভব | ভারত এবং বাংলাদেশ |
অঞ্চল | ত্রিপুরা, অসম, মিজোরাম, বাংলাদেশ |
জাতি | ত্রিপুরি |
মাতৃভাষী | ১০,১১,২৯৪ (ভারত) (২০১১),[১] ৪,০০,০০+ (বাংলাদেশ) (২০১১)
|
বাংলা লিপি | |
সরকারি অবস্থা | |
সরকারি ভাষা | ভারত (ত্রিপুরা) |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | trp |
ককবরক ভাষা (তিপ্রাকক বা ত্রিপুরি ভাষা নামেও পরিচিত) ভারতের ত্রিপুরা অঙ্গরাজ্য এবং পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে বসবাসরত ত্রিপুরি জাতির লোকদের মাতৃভাষা। ককবরক শব্দটি দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত। কক অর্থ "ভাষা" আর বরক অর্থ "মানুষ", বিশেষিত অর্থে ত্রিপুরি জাতির মানুষ; অর্থাৎ ককবরক কথাটির অর্থ ত্রিপুরি মানুষের ভাষা।[২][৩]
ককবরক ভাষাটি বিভিন্ন রূপে ১ম শতাব্দী থেকেই এই অঞ্চলে প্রচলিত। ঐ শতকে ত্রিপুরার রাজাদের ইতিহাস লিখিত আকারে প্রথম সংরক্ষণ করা শুরু হয়। যে লিপিতে ককবরক ভাষাটি লেখা হত, তার নাম কোলোমা লিপি। ত্রিপুরার রাজাদের কাহিনী রাজরত্নকর নামের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা হয়। বইটি আদিতে দুর্লবেন্দ্র চোনতাই কোলোমা লিপি ব্যবহার করে ককবরক ভাষাতে রচনা করেছিলেন।
পরবর্তীতে শুক্রেশ্বর ও বাণেশ্বর নামের দুই ব্রাহ্মণ গ্রন্থটিকে প্রথমে সংস্কৃত ভাষায় ও পরে ১৪শ শতকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন। ককবরক ভাষায় লেখা আদিগ্রন্থটির আজ আর কোনও অস্তিত্ব নেই। ১৪শ শতক থেকে ২০শ শতক পর্যন্ত ককবরক ভাষাকে স্থানীয় মানুষের মুখের ভাষায় পর্যবসিত করা হয় এবং বাংলা ভাষাকে ত্রিপুরার রাজদরবারের ভাষা বানানো হয়।
১৯৭৯ সালে ককবরক ভাষাকে ভারতের ত্রিপুরা অঙ্গরাজ্যের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বর্তমানে এটিকে ভারতের একটি জাতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বাংলাদেশে ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলা বর্ণমালায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা ককবরক ভাষার প্রথম বই প্রকাশ করা হয় কুমিল্লায়। পূর্বে ইংরেজি বর্ণমালায় ককবরক ভাষার বই ছিল। বাংলা বর্ণমালায় এই প্রথম এ ভাষার বই প্রকাশিত হল।
নমুনা : 'আং বাংলাদেশ ন হামজাগু’ (আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি)।[৪]