এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। (মে ২০২৩) |
Erythrina fusca | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Fabales |
পরিবার: | Fabaceae |
গণ: | Erythrina |
প্রজাতি: | E. fusca |
দ্বিপদী নাম | |
Erythrina fusca Lour. | |
প্রতিশব্দ | |
Erythrina caffra Blanco |
কাঁটা মান্দার হল বৃক্ষ জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ বিশেষ। এর (বৈজ্ঞানিক নাম: erythrina fusca)। এটি Fabaceae পরিবারের সদস্য। ইরিথ্রিনা গণভুক্ত উদ্ভিদ সমূহ একত্রে মান্দার বা মাদার নামে পরিচিত। বাংলাদেশে বেশ কয়েক প্রজাতির মান্দার গাছ দেখতে পাওয়া যায়। কাঁটা মান্দার গাছ পানিয়া মান্দার নামেও পরিচিত।[১] বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই প্রজাতির উদ্ভিদের নাম পারিজাত রাখেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বাংলা, গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল ও মায়ানমার এর আদি আবাস। বাংলাদেশে গাছটি বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও গঙ্গার নিম্ন এলাকায় বেশি দেখা যায়। দক্ষিণাঞ্চল ছাড়াও এটি বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের একটি পরিচিত উদ্ভিদ।[১]
এটি নরম কাণ্ডবিশিষ্ট বৃক্ষ। অসংখ্য কালো বর্ণের কাঁটা দ্বারা কাণ্ড পরিবেষ্টিত। শাখা-প্রশাখা ফ্যাকাশে ধূসর। বাকল গভীরভাবে ফাটা। পাতা সবুজ রঙের। দীর্ঘদিন পর হলদে হয়ে ঝরে পড়ে। শাখার আগায় ফুলের মঞ্জরি হয় এবং একটি মঞ্জরিতে একাধিক ফুল থাকে। বসন্তের শুরুতে ফাল্গুন মাসে গাছে ফুল আসে। ফুল টকটকে লাল (সিঁদুরে রঙ) এবং উজ্জ্বল বর্ণের, ৩.৪—৪.৩ সেন্টিমিটার লম্বা। ফল পড, পাকলে বহিত্বক ফেটে বীজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বীজ কালো, বৃক্কাকার ও মসৃণ।[১]
বাড়ির চারপাশে বেড়া দিতে, জ্বালানি কাঠ হিসেবে ও মাছের ঝাউ (পুকুর কিংবা নদীর অগভীর অংশে মাছ ধরার জন্য গাছের ডাল দিয়ে তৈরি আবাস) দেওয়ার কাজে এ গাছের ডাল ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও দেশলাই তৈরিতে এই গাছ ব্যবহৃত হয়। পাকা তেঁতুল, সরিষার তেল ও মান্দারের লাল ফুল চটকিয়ে এক প্রকার চাটনি তৈরি করা হয়, যা বরিশাল এলাকায় ‘তেঁতুল বানানি’ নামে পরিচিত। কাঁটা মান্দার ফুল গ্রামের কিশোর-কিশোরীদের কাছে অতি প্রিয়। ফাল্গুন মাসে গো শালিক পাখি বাসা তৈরির জন্য এ গাছটিকে বেছে নেয়। [১]
বীজের মাধ্যমে এই গাছের বংশবিস্তার হয়। এছাড়া কলমের মাধ্যমেও এর চারা তৈরি করা যায়। বুনো গাছ হওয়ার কারণে যত্ন করার প্রয়োজন হয় না। কাঁটা মান্দার স্বাদু পানি ও জোয়ার-ভাটা এলাকায় ভালো জন্মে। এরা জলের কাছের ঝোপঝাড়ে বেড়ে ওঠে এবং কেটে না ফেললে অনেক বছর বাঁচে।[১]
মেহগনি, শিশুসহ আগ্রাসী প্রজাতির গাছের কারণে এ গাছ ধীরে ধীরে গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ইটের ভাটায় কাঠের জোগান ও দেশলাই তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে পরিণত বয়সের কাঁটা মান্দার দেখা খুবই দুর্লভ।[১]