কাঠময়ূর Polyplectron bicalcaratum | |
---|---|
পুরুষ কাঠময়ূর Polyplectron bicalcaratum | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Galliformes |
পরিবার: | Phasianidae |
উপপরিবার: | Argusianinae |
গণ: | Polyplectron |
প্রজাতি: | P. bicalcaratum |
দ্বিপদী নাম | |
Polyplectron bicalcaratum (লিনিয়াস, ১৭৫৮) | |
বৈচিত্র্য | |
[[#Systematics|৪টি উপপ্রজাতি]] | |
প্রতিশব্দ | |
Pavo bicalcaratus লিনিয়াস, ১৭৫৮ |
কাঠময়ূর, কাট-মোর, মেটে কাঠমৌর বা কাঠমৌর (বৈজ্ঞানিক নাম: Polyplectron bicalcaratum) (ইংরেজি: Grey Peacock-Pheasant), হচ্ছে Phasianidae (ফ্যাজিয়ানিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Polyplectron (পলিপ্লেক্ট্রন) গণের এক প্রজাতির বাহারি লেজের ভূচর পাখি।[১][২] কাঠময়ূরের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ নখরধারী কাঠময়ূর (গ্রিক: polu = বহু, plectron = গজালের মত খাড়া নখ; ল্যাটিন: bicalcaratum = গজালের মত খাড়া দুইটি নখর)।[২] গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমে গেলেও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছায় নি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যুনতম বিপদযুক্ত বলে ঘোষণা করেছে।[৩] বাংলাদেশে এরা মহাবিপন্ন বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের ১৯৭৪[২] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৪]
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস ও চীনের আবাসিক পাখি। এসব অঞ্চলের আর্দ্র ঘন চিরসবুজ বনাঞ্চল এদের প্রধান আবাস।[৩]
কাঠময়ূরের মোট চারটি উপপ্রজাতি শনাক্ত করা গেছে।[৫] উপপ্রজাতিগুলো হলঃ
অপর আরেকটি উপপ্রজাতি P. b. katsumataeকে (হাইনান কাঠময়ূর) জেনেটিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রজাতির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।[৬]
কাঠময়ূর বড় আকারের ধূসর পাখি। এদের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ৫৬ সেন্টিমিটার, ডানা ২১ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২.১ সেন্টিমিটার, পা ৭.২ সেন্টিমিটার, লেজ ৩১ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৭৩০ গ্রাম।[২] পুরুষ ময়ূরের চেহারা ও আকার স্ত্রী পাখির থেকে কিছুটা আলাদা। পুরুষ ময়ূরের মাথা ও ঘাড় বাদামি-পীতাভ। মাথার চূড়ার পালক ছোট ও খাড়া। পিঠে ধূসর-বাদামি ফোঁটা দেখা যায়। কোমর ও লেজের উপরের পালকে সাদা ডোরা দেখা যায়। ডানার পালকে ও লেজের প্রান্তে বেগুনী ও সবুজ রঙের চক্র আছে। থুতনি ও গলা সাদাটে। দেহতলের বাকি অংশে সাদা ডোরা থাকে। স্ত্রী ময়ূর পুরুষ ময়ূরের তুলনায় ছোট ও অনুজ্জ্বল। মাথায় খাটো চূড়া দেখা যায়। ডানা ও লেজের চক্র অস্পষ্ট। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় পাখির চোখ সাদা, মুখের চামড়া হলুদাভ, ঠোঁট হালকা পীত বর্ণের। ঠোঁটের আগা ও মধ্যভাগ কালো। পা ও পায়ের পাতা মলিন স্লেট-রঙ বা কালচে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ময়ূর স্ত্রী ময়ূরের মত।[১][২]
কাঠময়ূর চিরসবুজ বনতলের ঘন ঝোপঝাড়ে ও বনের প্রান্তে বিচরণ করে। সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। এরা ঝোপের মাঝে বা খোলা মাঠে চুপিসারে খাবার খুঁজে বেড়ায়। খাদ্যতালিকায় আছে বীজ, শস্যদানা, ফল, পোকামাকড়, শামুক বা ক্ষুদ্র প্রাণী। ক্বচিৎ ডেকে ওঠে: অক্-কক্-কক্-কক্-কক্।
মার্চ-জুন এদের প্রজনন কাল। এ সময় পুরুষ কাঠময়ূর ঘন ঘন ডাকে। ঝোপের নিচে মাটির প্রাকৃতিক গর্তে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সংখ্যায় ২-৫টি হয়। ডিমগুলোর বর্ণ পীতাভ থেকে চকটলেট-পীতাভ, ডিমের উপর সাদা ছিটে থাকে। ডিমগুলোর মাপ ৪.৬ × ৩.৬ সেন্টিমিটার।[২] কেবল স্ত্রী ময়ূর ডিমে তা দেয়। পুরুষ কাঠময়ূর এসময় আশেপাশেই থাকে আর বাসা পাহারা দেয়। ২১ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। ফোটার সাথে সাথেই ছানারা বাসা ছাড়ে ও মায়ের পিছুপিছু খাবার খুঁজতে শুরু করে।[২]