কায়া অভিন্নতা হচ্ছে এমন একটি গাণিতিক অভিন্নতা, যা উল্লেখ করে যে, গ্রিনহাউজ গ্যাস কার্বন ডাইঅক্সাইডের মোট নির্গমন স্তরকে চারটি কারণের গুণফল হিসেবে প্রকাশ করা যেতে পারেঃ মানব জনসংখ্যা, মাথাপিছু জিডিপি, শক্তির তীব্রতা (জিডিপির প্রতি ইউনিট) ও কার্বন তীব্রতা (শোষণকৃত শক্তির প্রতি ইউনিটে নির্গমন)।[১][২] এটি আই = পি এ টি সমীকরণের একটি সাকার রূপ,[৩] যদিও কায়া অভিন্নতার শর্তাবলী তাত্ত্বিকভাবে বাতিল হয়ে যাবে, তারপরও আরও সহজে উপলব্ধ ডেটা, যথা জনসংখ্যা, মাথাপিছু জিডিপি, প্রতি ইউনিট জিডিপিতে শক্তি, ও প্রতি ইউনিট শক্তিতে নির্গমনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্গমন হিসাব করার অভ্যাসে উপকারী। এটি অধিকন্তু বৈশ্বিক অর্থনীতির উপাদানগুলোর ওপর হাইলাইট করে, যেটি নির্গমন, লক্ষণীয়ভাবে প্রতি ইউনিট জিডিপিতে শক্তি তীব্রতা ও প্রতি ইউনিট শক্তিতে নির্গমন হ্রাসকল্পে কাজ করে।
জাপানি শক্তি অর্থনীতিবিদ ইয়োচি কায়া কায়া অভিন্নতা ধারণাটির সূচনা করেছিলেন।[১] এটি তাঁর বই এনভায়রনমেন্ট, এনার্জি, এন্ড ইকোনোমিঃ স্ট্র্যাটেজিস ফর সাসটেইনাবিলিটি এর একটি অধ্যায়, কেইচি ইয়োকোবোরির সাথে সহ-রচিত, যা বৈশ্বিক পরিবেশ, শক্তি, ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর সম্মেলনের (১৯৯৩ঃ টোকিও, জাপান) ফলাফল। এটি পল আর. এরলিচ ও জন হোলড্রেনের আই = পি এ টি সূত্রের গাণিতিকভাবে আরও সুসংগত প্রকরণ, যা পরিবেশগত প্রভাবের কারণগুলো বর্ণনা করে।
কায়া অভিন্নতাটিকে এরূপে প্রকাশ করা হয়ঃ
কোথায়:
এবং:
কায়া অভিন্নতাটি নির্গমন দৃশ্যকল্পসমূহের ওপর আইপিসিসির বিশেষ প্রতিবেদনে ভবিষ্যৎ নির্গমন দৃশ্যকল্পসমূহের উন্নয়নে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। দৃশ্যকল্পসমূহ চারটি ইনপুটের প্রতিটির ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য অনুমিত শর্তের একটি সীমা নির্ধারণ করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি অভিক্ষেপগুলো জনতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে স্বাধীনভাবে পাওয়া যায়; মাথাপিছু জিডিপি প্রবণতা অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান ও অর্থনীতি থেকে পাওয়া যায়; একইভাবে তা শক্তি তীব্রতা ও নির্গমন মাত্রার জন্যও প্রযোজ্য। প্রকল্পিত কার্বন নিঃসরণ ভবিষ্যৎ কার্বন ডাইঅক্সাইড ঘনমাত্রা ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের পূর্বাভাস দিতে কার্বন চক্র ও জলবায়ু মডেলকে চালনা করতে পারে।[৩]
কায়া অভিন্নতাটি ২০০২ সালের একটি গবেষণাপত্রে পর্যালোচনা করা হয়।[৫]
২০০৭ সালের একটি নিবন্ধ[৬] কার্বন নিঃসরণের সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলির বিশ্লেষণে কায়া অভিন্নতাটি ব্যবহার করে এবং এটি আবিষ্কার করে
...জনসংখ্যা ও মাথাপিছু জিডিপির ক্রমবর্ধমানতার সাথে স্থূল অভ্যন্তরীণ পণ্যের (জিডিপি)(শক্তি/জিডিপি) শক্তি তীব্রতা ও শক্তির কার্বন তীব্রতার (নির্গমন/শক্তি) পূর্ববর্তী ক্রমহ্রাসমান প্রবণতার অবসান বা বিপরীতকরণ। উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় অঞ্চলে সম্প্রতি শক্তির কার্বন তীব্রতায় প্রায় ধ্রুব বা সামান্য বর্ধমান প্রবণতা দেখা গেছে। কোনো অঞ্চলই এটির শক্তি সরবরাহকে ডিকার্বোনাইজ করছে না।
কায়া অভিন্নতাটি যে একটি পুনরুক্তি, তা চিহ্নিত করা হয়েছে, কারণ এটি অভিন্নতাটির একটি পুনর্লিখন ছাড়া আর কিছু নয়ঃ এফ = এফ, অর্থাৎ, "কার্বন কার্বনই"।[৮] এটি বোঝায় যে, নিট কার্বন নিঃসরণ হিসাবের জন্য অনেক বিকল্প সূত্র রয়েছে, যা নিঃসরণ হ্রাসকল্প (যেমনঃ ইকো-পর্যাপ্ততা) চিন্তার ব্যাপারে বিভিন্ন সম্ভাব্য উপায়গুলোকে হাইলাইট করে।