ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কার্লো আনচেলত্তি[১] | ||
জন্ম | ১০ জুন ১৯৫৯ | ||
জন্ম স্থান | রেজ্জোলো, ইতালি | ||
উচ্চতা | ১.৭৯ মিটার (৫ ফুট ১০+১⁄২ ইঞ্চি)[২] | ||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | রিয়াল মাদ্রিদ (ম্যানেজার) | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৭৩–১৯৭৫ | রেজ্জোলো | ||
১৯৭৫–১৯৭৬ | পারমা | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯৭৬–১৯৭৯ | পারমা | ৫৫ | (১৩) |
১৯৭৯–১৯৮৭ | রোমা | ১৭১ | (১২) |
১৯৮৭–১৯৯২ | এসি মিলান | ১১২ | (১০) |
মোট | ৩৩৮ | (৩৫) | |
জাতীয় দল | |||
১৯৮০ | ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ | ৩ | (০) |
১৯৮০ | ইতালি অনূর্ধ্ব-২৩ | ১১ | (১) |
১৯৮১–১৯৯১ | ইতালি | ২৬ | (১) |
পরিচালিত দল | |||
১৯৯৫–১৯৯৬ | রেজ্জানা | ||
১৯৯৬–১৯৯৮ | পারমা | ||
১৯৯৯–২০০১ | ইয়ুভেন্তুস | ||
২০০১–২০০৯ | এসি মিলান | ||
২০০৯–২০১১ | চেলসি | ||
২০১১–২০১৩ | পারি সাঁ-জেরমাঁ | ||
২০১৩–২০১৫ | রিয়াল মাদ্রিদ | ||
২০১৬–২০১৭ | বায়ার্ন মিউনিখ | ||
২০১৮–২০১৯ | নাপোলি | ||
২০১৯–২০২১ | এভার্টন | ||
২০২১– | রিয়াল মাদ্রিদ | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
কার্লো আনচেলত্তি (ইতালীয়: Carlo Ancelotti, ইতালীয় উচ্চারণ: [ˈkarlo antʃeˈlɔtti]; জন্ম: ১০ জুন ১৯৫৯; কার্লো আনচেলত্তি নামে সুপরিচিত) হলেন একজন ইতালীয় সাবেক পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার।[৩] তিনি বর্তমানে স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন।[৪][৫][৬][৭] ভক্তদের কাছে কার্লেত্তো ডাকনামে পরিচিত আনচেলত্তি তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় রোমা এবং এসি মিলানের হয়ে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি মূলত কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে রক্ষণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন।
১৯৭৩–৭৪ মৌসুমে, ইতালীয় ফুটবল ক্লাব রেজ্জোলোর যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে আনচেলত্তি ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে পারমার যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছিলেন। ১৯৭৬–৭৭ মৌসুমে, ইতালীয় ক্লাব পারমার হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলেন, যেখানে তিনি ৩ মৌসুম অতিবাহিত করেছিলেন; পারমার হয়ে তিনি ৫৫ ম্যাচে ১৩টি গোল করেছিলেন। অতঃপর ১৯৭৯–৮০ মৌসুমে তিনি রোমায় যোগদান করেছিলেন, রোমার হয়ে তিনি নিলস লিন্ডহোমের অধীনে ১টি সেরিয়ে আ শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন। রোমায় ৮ মৌসুম অতিবাহিত করার পর ১৯৮৭–৮৮ মৌসুমে, তিনি রোমা হতে এসি মিলানে যোগদান করেছিলেন; এসি মিলানের হয়ে ৫ মৌসুম খেলার পর তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৭৯ সালে, আনচেলত্তি ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে ইতালির বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় ১ বছর যাবত ইতালির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ১৯৮১ সালে তিনি ইতালির হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন; ইতালির জার্সি গায়ে তিনি সর্বমোট ২৬ ম্যাচে মাত্র ১টি গোল করেছিলেন। তিনি ইতালির হয়ে সর্বমোট ২টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৮৬ এবং ১৯৯০) এবং ১টি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (১৯৮৮) অংশগ্রহণ করেছিলেন, যার মধ্যে ১৯৯০ সালে আজেইয়ো ভিচিনির অধীনে ফিফা বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন।
খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর ১৯৯৫ সালে, আনচেলত্তি ইতালীয় ফুটবল ক্লাব রেজ্জানার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে ম্যানেজার হিসেবে ফুটবল জগতে অভিষেক করেন। রেজ্জানার হয়ে মাত্র ১ মৌসুম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার পর তিনি সেরিয়ে আ-এর ক্লাব পারমায় ম্যানেজার হিসেবে পুনরায় যোগদান করেন; পারমার হয়ে তিনি প্রথম মৌসুমে তিনি লিগে ২য় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৯৯–২০০০ মৌসুমে, তিনি ইয়ুভেন্তুসের ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি সেরিয়ে আ-এর ক্লাব এসি মিলানের ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন; যেখানে তিনি ম্যানেজার হিসেবে দীর্ঘ সময় (প্রায় ৮ মৌসুম) অতিবাহিত করেছেন। অতঃপর তিনি ২ মৌসুমের জন্য চেলসি এবং ২ মৌসুমের জন্য পারি সাঁ-জেরমাঁর ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩–১৫ মৌসুমে, তিনি রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন; রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হিসেবে তিনি সেরা সময় অতিবাহিত করেছেন, যেখানে তিনি প্রায় ৭৫ শতাংশ ম্যাচ জয়লাভ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি বায়ার্ন মিউনিখ, নাপোলি এবং এভার্টনের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি ২০২১ সালের ২রা জুন তারিখে জিনেদিন জিদান বরখাস্ত হওয়ার পর, তিনি দ্বিতীয়বারের মতো রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজারের পদে নিযুক্ত হয়েছেন।[৮]
ব্যক্তিগতভাবে, আনচেলত্তি বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে টানা ২ মৌসুম পানচিনি দরো এবং ২০১৪–১৫ মৌসুমে মিগেল মুনিয়োস ট্রফি জয় অন্যতম। দলগতভাবে, খেলোয়াড় হিসেবে আনচেলত্তি সর্বমোট ১২টি শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন, যার মধ্যে ৫টি রোমার হয়ে এবং ৭টি এসি মিলানের হয়ে জয়লাভ করেছিলেন। অন্যদিকে, ম্যানেজার হিসেবে, এপর্যন্ত ২০টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ৩টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয় উল্লেখযোগ্য।
কার্লো আনচেলত্তি ১৯৫৯ সালের ১০ই জুন তারিখে ইতালির রেজ্জোলোয় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।
আনচেলত্তি ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ এবং ইতালি অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে ইতালির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮০ সালের ২৩শে জানুয়ারি তারিখে তিনি ১৯৮০ উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে লুক্সেমবুর্গ অনূর্ধ্ব-২১ দলের বিরুদ্ধে ম্যাচে ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন।[৯] ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে তিনি ১৯৮০ উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেছেন, তবে তার দল উক্ত প্রতিযোগিতায় শুধুমাত্র কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি ২ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইতালির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় ১ বছরে ১৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১টি গোল করেছেন।
১৯৮১ সালের ১লা জুন তারিখে, মাত্র ২১ বছর ৬ মাস ২৭ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী আনচেলত্তি নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত ১৯৮০ মুন্দিয়ালিতোর ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইতালির হয়ে অভিষেক করেছিলেন।[১০] উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে তিনি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছিল। ইতালির হয়ে অভিষেকের বছরে আনচেলত্তি সর্বমোট ৪ ম্যাচে ১টি গোল করেছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ম্যাচেই ইতালির জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেছিলেন; নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেছিলেন।[১০]
আনচেলত্তি মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত ১৯৮৬ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য এনৎসো বেয়ারৎসতের অধীনে ঘোষিত ইতালি দলে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।[১১][১২] উক্ত বিশ্বকাপের দলে তিনি অন্তর্ভুক্ত থাকলেও একটি ম্যাচেও অংশগ্রহণ করেননি। অতঃপর আনচেলত্তি ১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য প্রকাশিত ইতালির ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।[১৩][১৪] ১৯৯০ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর তারিখে, তিনি অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ফিফা বিশ্বকাপে অভিষেক করেছিলেন।[১৫] উক্ত বিশ্বকাপের দলে তিনি ৩ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১৬] আনচেলত্তি তার খেলোয়াড়ি জীবনে সর্বমোট ২টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে তিনি ৩টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৯৯১ সালের ১৩ই নভেম্বর তারিখে আনচেলত্তি ৩২ বছর বয়সে ইতালির হয়ে তার সর্বশেষ ম্যাচটি খেলে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। ইতালির জেনোয়ার স্তাদিও লুইগি ফেররারিসে অনুষ্ঠিত নরওয়ের বিরুদ্ধে উক্ত ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছিল, ম্যাচটিতে তিনি পূর্ণ ৯০ মিনিট খেলেছিলেন।[১৭] আন্তর্জাতিক ফুটবলে, তার ১১ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে তিনি সর্বমোট ২৬ ম্যাচে ১টি গোল করেছিলেন।
দল | সাল | ম্যাচ | গোল |
---|---|---|---|
ইতালি | ১৯৮১ | ৪ | ১ |
১৯৮২ | ০ | ০ | |
১৯৮৩ | ৪ | ০ | |
১৯৮৪ | ০ | ০ | |
১৯৮৫ | ০ | ০ | |
১৯৮৬ | ৫ | ০ | |
১৯৮৭ | ৩ | ০ | |
১৯৮৮ | ৫ | ০ | |
১৯৮৯ | ০ | ০ | |
১৯৯০ | ৪ | ০ | |
১৯৯১ | ১ | ০ | |
সর্বমোট | ২৬ | ১ |
গোল | তারিখ | মাঠ | প্রতিপক্ষ | স্কোর | ফলাফল | প্রতিযোগিতা | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | ৬ জানুয়ারি ১৯৮১ | এস্তাদিও সেন্সেনারিও, মোন্তেবিদেও, উরুগুয়ে | নেদারল্যান্ডস | ১–০ | ১–১ | ১৯৮০ মুন্দিয়ালিতো | [১০] |