কার্লোস আলবার্তো তোরেস

কার্লোস আলবার্তো তোরেস
২০১১ সালে কার্লোস আলবার্তো তোরেস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম কার্লোস আলবার্তো তোরেস
জন্ম (১৯৪৪-০৭-১৭)১৭ জুলাই ১৯৪৪
জন্ম স্থান রিও দি জেনেরিও, ব্রাজিল
মৃত্যু ২৫ অক্টোবর ২০১৬(2016-10-25) (বয়স ৭২)
মৃত্যুর স্থান রিও দি জেনেরিও, ব্রাজিল
উচ্চতা ১.৮০ মিটার (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি)
মাঠে অবস্থান রাইট ব্যাক
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
১৯৬৩-১৯৬৬ ফ্লুমিনিজ ৯৮ (৯)
১৯৬৬-১৯৭৪ সান্তোস ৪৪৫ (৪০)
১৯৭৪-১৯৭৭ ফ্লুমিনিজ ৫৩ (৪)
১৯৭৭ ফ্লেমিঙ্গো ২৮ (৩)
১৯৭৭-১৯৮০ নিউ ইয়র্ক কসমস ৮০ (৬)
১৯৮১ কালিফোর্নিয়া সার্ফ ১৯ (২)
১৯৮২ নিউ ইয়র্ক কসমস ২০ (০)
মোট ৭৪৩ (৬৪)
জাতীয় দল
১৯৬৪-১৯৭৭ ব্রাজিল ৫৩ (৮)
পরিচালিত দল
১৯৮৩-১৯৮৫ ফ্লেমিঙ্গো
১৯৮৫-১৯৮৬ করিন্থিয়ান্স
১৯৮৭-১৯৮৮ নটিকো
১৯৮৮ মিয়ামি শার্কস
১৯৮৯-১৯৯০ ওয়ান্স কল্দাস
১৯৯১-১৯৯২ মোন্তেররেই
১৯৯২ তিজুয়ানা
১৯৯৩-১৯৯৭ বোতাফোগো
১৯৯৪ ফ্লুমিনিজ
১৯৯৮ অ্যাটলেটিকো মিনেইরো
১৯৯৮-১৯৯৯ কুইরেতারো
২০০০-২০০১ ইউনিয়ন মাগদালেনা
২০০০-২০০১ ওমান
২০০১-২০০২ ফ্লেমিঙ্গো
২০০২ বোতাফোগো
২০০৪-২০০৫ পেসান্দু
২০০৫ আজারবাইজান
অর্জন ও সম্মাননা
পুরুষদের ফুটবল
 ব্রাজিল-এর প্রতিনিধিত্বকারী
ফিফা বিশ্বকাপ
বিজয়ী ১৯৭০ মেক্সিকো
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে

কার্লোস আলবার্তো ‘কাপিতা’ তোরেস (পর্তুগিজ: Carlos Alberto Torres; জন্ম: ১৭ জুলাই, ১৯৪৪ - মৃত্যু: ২৫ অক্টোবর, ২০১৬) প্রথিতযশা ব্রাজিলীয় ফুটবলার। তাকে সর্বকালের অন্যতম সেরা রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রূপে বৈশ্বিকভাবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল ফুটবল দলের অধিনায়কত্ব করেন। চূড়ান্ত খেলায় দলের চতুর্থ গোলটি করেছিলেন কার্লোস আলবার্তো তোরেস যা প্রতিযোগিতার ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

কার্লোস আলবার্তো ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাজিলের রিও দি জেনেরিওতে জন্মগ্রহণ করেন। তার সন্তান কার্লোস আলেজান্দ্রে তোরেসও ফুটবলার হিসেবে খেলছেন।

১৯ বছর বয়সে ফ্লুমেনিজে যোগদান করেন। প্রথম মৌসুমেই নিজের সহজাত ক্রীড়াপ্রতিভা সকলের সামনে তুলে ধরেন। ১৯৬৬ সালে সান্তোসে চলে যান। ঐ দলেই সতীর্থ পেলেকে পান। ১৯৭৪ সালে ফ্লুমেনিজে প্রত্যাবর্তন করেন ও ধারাবাহিকভাবে দুইবার ক্যাম্পিওনাতো কারিওকা চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ সহায়তা করেন। ১৯৭৭ সালে আবারও ফ্লুমেনিজের চীরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লেমিঙ্গোতে চলে যান।

আন্তর্জাতিক ফুটবল

[সম্পাদনা]

১৯৬৪ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে ৫৩টি আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেন ও ৮বার প্রতিপক্ষীয় জালে বল প্রবেশ করান। ১৯৬৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের জন্য ৪৪ সদস্যের প্রশিক্ষণ শিবিরে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ২২জনের তালিকায় ঠাঁই হয়নি তার। তবে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ঐ প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ব্রাজিল দলকে।

জোয়াও সালদানহা’র তত্ত্বাবধানে সেলেকাওদের পুণর্গঠনে এগিয়ে আসেন। তিনি সান্তোসের কার্লোস আলবার্তোর দিকে নজর রাখছিলেন ও তাকে জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করেন। মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিত ১৯৭০ সালের ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলায় ইতালিকে হারিয়ে চীরতরে জুলে রিমের শিরোপা হাতে নিয়ে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। ঐদলে তার সাথে ক্লোদোয়াল্দো, গারসন, জার্জিনহো, রবার্তো রিভেলিনো, তোস্তাওপেলের ন্যায় প্রথিতযশা খেলোয়াড়গণ ছিলেন। চূড়ান্ত খেলায় তার পা থেকে আসা গোলটি প্রতিযোগিতার ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হয়।[] ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যের জনগণ গোলটিকে সেরা ১০০ খেলোয়াড়ী মুহূর্তের তালিকায় ৩৬তম অবস্থানে রাখে।[] ১৯৭৪ সালে হাঁটুর আঘাতপ্রাপ্তির ফলে বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারেননি।

১৯৭৭ সালে ক্লদিও কুটিনহোর পরিচালনায় দলে অধিনায়কের দায়িত্বভার ফিরে পান। ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম তিন খেলায় দলকে নেতৃত্ব দেন।

৩৩ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেন তিনি। এরপূর্বেই এনএএসএলে নিউইয়র্ক কসমসে যোগ দেন। অদ্যাবধি তিনি ব্রাজিলের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে বৈশ্বিকভাবে বিবেচিত হয় আসছেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালে ফ্লেমিঙ্গোতে ফুটবল ম্যানেজার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়াও করিন্থিয়ান্স, নটিকো, ওয়ান্স কল্দাস, মন্তেরে, তিজুয়ানা, ফ্লুমেনিজ, বোতাফোগো, ইউনিয়ন মাগদালেনা, পেসান্দু, কুয়েরেতারো দল পরিচালনায় করেছেন তিনি।

এছাড়াও আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গনে নাইজেরিয়াওমানের জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ তারিখে আজারবাইজান জাতীয় দলের ম্যানেজার নিযুক্ত হন। কিন্তু ৪ জুন, ২০০৫ তারিখ পোল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজিত হবার পর তিনি পদত্যাগ করেন। খেলা চলাকালীন তিনি টেকনিক্যাল রেফারিকে লাঞ্ছিত করেন এ মাঠে রেফারির সাথে বাদানুবাদে লিপ্ত হন।

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

আলবার্তো ২০শ শতাব্দীর বিশ্বদলের সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সালে পেলে কর্তৃক ঘোষিত শতাব্দীর সেরা জীবিত খেলোয়াড়কে নিয়ে গঠিত ফিফা ১০০ তালিকায় স্থান পান।[] ব্রাজিলিয়ান ফুটবল মিউজিয়াম হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় ফুটবল হল অব ফেমের সদস্য ছিলেন তিনি।

জানুয়ারি, ২০১৩ সালে আলবার্তোকে ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ছয় দূতের একজনরূপে মনোনীত করা হয়। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ঐ প্রতিযোগিতায় তার সাথে ছিলেন রোনালদো, বেবেতো, মারিও জাগালো, আমারিল্ডো ও মার্তা

দেহাবসান

[সম্পাদনা]

২৫ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে রিও দি জেনেরিওতে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের সংক্রমণে তার দেহাবসান ঘটে।[] মৃত্যুর মাত্র দুইদিন পূর্বে তিনি ব্রাজিলীয় টেলিভিশন স্পোর্টটিভিতে ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঠিক একমাস পূর্বে তার যমজ ভ্রাতারও দেহাবসান ঘটে।[][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Benson, Andrew (২ জুন ২০০৬)। "The perfect goal"BBC SportBritish Broadcasting Corporation। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  2. 100 Greatest sporting moments – results Channel 4
  3. "Pele's list of the greatest"BBC Sport। ৪ মার্চ ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৩ 
  4. Brazilian football loses the biggest of its captains: Carlos Alberto Torres passes away (পর্তুগিজ)
  5. "Pelé and Franz Beckenbauer lead tributes to 'brother' Carlos Alberto"Guardian। ২৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৬ 
  6. "Carlos Alberto: Brazil legend dies aged 72 after heart attack"BBC Sport। ২৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]