কুয়েত এয়ারওয়েজ (আরবি:الخطوط الجوية الكويتية , আল-খুতওয়াত আল-জাওইয়া আল-কুয়েতিয়াহ) হচ্ছে কুয়েতের জাতীয় বিমান সংস্থা৷[১] বিমান সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় আল ফারয়ানিয়াহ গভমোরেট এর কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত৷ কুয়েত এয়ারওয়েজ এর প্রধান কেন্দ্র কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ, ইউরোপ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায় এর বিমানসমূহ পরিচালনা করে থাকে৷ কুয়েত এয়ারওয়েজ আরব এয়ার ক্যারিয়ার্স অর্গানাইজেশন এর একজন সদস্য৷
বিমান সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৩ সালে,[এনবি১] যখন কুয়েতের কিছু ব্যবসায়ী মহলের উদ্যোগে কুয়েত ন্যাশনাল এয়ারওয়েজ প্রতিষ্ঠা লাভ করে৷ প্রাথমিকভাবে কুয়েত সরকার এতে ৫০ শতাংশ মূলধন বিনিয়োগ করে৷[২] ২১১[৩] ঐ বছরই বিমান সংস্থাটি ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স(বিআইএ)[৪] এর সাথে পাঁচ বছরের একটি ম্যানেজমেন্ট চুক্তি সম্পাদিত করে৷ এ সময় ব্রিটিশ ওভারসিজ এয়ারওয়েজ কর্পোরেশন এর একটি সাবসিডিয়ারি ঐ অঞ্চলে চার্টার ফ্লাইট এবং মেইনটেন্যান্স সার্ভিস পরিচালনা করত৷[৩][৫] সে সময়ে দুটি ডাকোটা ক্রয় করা হয়[২] ২১১ এবং ১৯৫৪ সালের ১৬ মার্চ হতে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয়৷[২][৫] প্রথম বছরে বিমান সংস্থাটি ৮,৯৬৬ জন যাত্রী পরিবহন করে৷[৬] ১৯৫৫ সালের জুলাই মাসে সংস্থাটির নাম কুয়েত এয়ারওয়েজ হিসাবে পরিবর্তিত হয়৷[৭][এনবি ২] ১৯৫৮ সালের মে মাসে [৮] কুয়েত এয়ারওয়েজ এর সাথে ব্রিটিশ ওভারসিজ এয়ারওয়েজ এর সাথে সরাসরি অপর আরেকটি চুক্তি সম্পাদিত হয়৷১৯৫৯ সালের এপ্রিল মাস হতে বিআইএ এর ফ্লাইট কার্যক্রমসমূহ কুয়েত এয়ারওয়েজ দ্বারা অধিগৃহীত হয়৷[৮][এনবি ৩] ১৯৬২ সালের ৮ আগস্ট[২] ২১০ কুয়েত এয়ারওয়েজ প্রথম বিদেশী ক্রেতা হিসাবে ট্রাইডেন্ট অর্ডার করে৷ এ সময় বিমান সংস্থটির বিমান বহরে দুটি ট্রাইডেন্ট যুক্ত হয় এবং অপর একটি ট্রাইডেন্ট যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়৷ এক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক খরচ হয় ৫.৫ মিলিয়ন পাউন্ড এবং এ চুক্তিতে একটি কমেট ৪সি এয়ারক্রাফটও যুক্ত ছিলো৷ সংস্থাটি ১৯৬৩ সালের জানুয়ারি মাসে এর প্রথম কমেট এয়ারক্রাফট ডেলিভারি নেয়৷[৯][১০] ১৯৬৩ সালের আগস্ট মাসে অপর একটি কমেট এয়ারক্রাফটের অর্ডার দেয়া হয়৷[১১][১২]
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী কুয়েত এয়ারওয়েজ এর সম্পূর্ণ মালিকানা কুয়েত সরকারের৷[১৩]
উপসাগরীয় যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিমান সংস্থাটিকে বেসরকারীকরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়৷ যুদ্ধকালীন সময়ে সংস্থাটি আর্থিকভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়৷[১৪] কোম্পানিটি ২০০৪ সালে একটি কর্পোরেশন হিসাবে রূপান্তরিত হয়৷[১৫]
২০১৭ সালের মে মাস অনুযায়ী কাতার এয়ারওয়েজ এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক হলেন আব্দুল্লাহ আল খুজাম৷ ঐ একই সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত কোম্পানিটির চেয়ারপার্সন ও প্রধান নির্বাহী পরিচালক হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন রাশা আল-রৌওমি৷[১৬][১৭]
কুয়েত এয়ারওয়েজ এর প্রধান কার্যালয় আল ফারয়ানিয়াহ গভমোরেট এর কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত৷ ৪২,০০০ বর্গ মিটার(৪,৫০,০০০ বর্গ ফুট) স্থান জুড়ে নির্মিত এ কার্যালয়টি নির্মান করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫.৮ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার(প্রায় ৫৩.৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার)৷
কুয়েত এয়ারওয়েজের বেশ কিছু সাবসিডিয়ারি রয়েছে, যেগুলো বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে৷ এগুলোর মধ্যে রয়েছে-
২০১৫ সালের জুন মাস অনুযায়ী কুয়েত এয়ারওয়েজ এর বিমানসমূহ কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার ২৪ টি দেশের ৩৮ টি গন্তব্যস্থলে চলাচল করে থাকে৷[১৮]
নিচের এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে কুয়েত এয়ারওয়েজের কোডশেয়ার চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে:[১৯]
২০১৭ সালের মে মাস অনুযায়ী কুয়েত এয়ারওয়েজ নিচের বিমানসমূহ পরিচালনা করে থাকে৷[২০] এয়ারবাস এ৩০০-৬০০আর, এয়ারবাস এ৩১০-৩০০, এয়ারবাস এ৩২০-২০০আর, এয়ারবাস এ৩২০নিও, এয়ারবাস এ৩৩০-২০০, এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০, এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০, বোয়িং ৭৪৭-৪০০, বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর, বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর৷