কুরুশ ইয়াঘমই کورش یغمایی | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
উপনাম | ইরানি সাইকিডেলিক রকের গডফাদার, রক সম্রাট |
জন্ম | মধ্য জেলা, শাহ্রুড, সেম্নন, ইরান | ৩ ডিসেম্বর ১৯৪৬
ধরন | |
পেশা |
|
বাদ্যযন্ত্র | |
কার্যকাল | ১৯৭৩-বর্তমান |
লেবেল | |
ওয়েবসাইট | kourosh-yaghmaei |
কুরুশ ইয়াঘমই (ফার্সি: کورش یغمایی, জন্ম ৩ ডিসেম্বর ১৯৪৬) একজন ইরানি গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং রেকর্ড প্রযোজক; যিনি ১৯৭০-এর দশকে সঙ্গীত কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তিনি ইরানি রক সঙ্গীত ইতিহাসের অন্যতম ফার্সি সাইকেডেলিক রক সঙ্গীতজ্ঞ, যিনি "ইরানি সাইকিডেলিক রকের গডফাদার" ("দ্য গডফাদার অব ইরানিয়ান সাইকেডেলিক রক")[১][২] বা "রক সম্রাট" ("দ্য কিং অব রক") হিসাবে পরিচিত।[৩]
১৯৪৩ সালে ইরানের শাহ্রুড শহরে ফার্সি বাবা-মার ঘরে জন্ম নেয়া ইয়াঘমই, পরবর্তীতে তেহরানে বেড়ে উঠেছেন। তার লেখা বেশিরভাগ গানে পারস্যের ধ্রুপদী এবং সমসাময়িক কবিতার সংমিশ্রণ রয়েছে। তার সঙ্গীতে ফার্সি ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতের পাশাপাশি লেড জেপেলিন এবং পিংক ফ্লয়েড-এর মতো ১৯৭০-এর রক শৈলীর মিশ্রণ ঘটেছে।[৪] ইরানি লোক সঙ্গীতে ব্লুজ এবং রক ধারার মিশ্রণ সৃষ্টিকারীদের মধ্যে তিনি অগ্যগামী। ১৯৭০-এর দশকে ইরানি রক সঙ্গীতের সূচনালগ্নে অনন্য উপস্থাপনার তিনি জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম একক সঙ্গীত গোলে ইয়াখ প্রকাশিত হয়, যেটি দেশীয় বাজারে ৫ মিলিয়ন কপির অধিক বিক্রি হয়।[৫] একই বছর গানটি সহ গোলে ইয়াখ অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমে তিনি একক কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তার গানগুলি ইরানে সুপরিচিত, এবং কয়েকটি হিট গানের মধ্যে রয়েছে "গোলে ইয়াখ" ("বরফের ফুল"), "হাভার হাভার", "খার" ("কণ্টক"), "লেইলা", "পিয়াজ" ("শরৎ"), "রেহান" প্রভৃতি। ২০১১ সালে নাও অ্যাগেইন রেকর্ডস থেকে তার প্রথম সংকলন অ্যালবাম ব্যাক ফ্রম দা ব্রিঙ্ক: প্রি-রিভল্যুশনারি সাইকেডেলিক রক ফ্রম ইরান: ১৯৭৩-১৯৭৯ প্রকাশ হয়। ভোগ ইয়াঘমইকে "চেতনা শিল্পী, আড়ম্বরপূর্ণ, গোঁফধারী এবং আবেগময়" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।[৬]
কুরুশ ইয়াঘমই ১৯৪৩ সালের ৩ ডিসেম্বর ইরানের সেম্নন প্রদেশের শাহ্রুড শহরের মধ্য জেলার এক সচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার কুরুশ (প্রাচীন ফার্সি: 𐎤𐎢𐎽𐎢𐏁 Kūrauš [৭]; কুরুশ;[৮] নব ফার্সি: کوروش Kuruš; হিব্রু: כורש, আধুনিক: Kōréš, টিবেরীয়: Kōréš) নাম, পারস্য সম্রাট মহান কুরুশ (আনু. ৬০০ – ৫৩০ খ্রিপূ) থেকে উদ্ভূত।[৯] তিনি ইয়াঘমই বংশের দ্বিতীয় পুত্র। তার জৈষ্ঠ্য ভাই কামরান ইয়াঘমই এবং কনিষ্ঠ ভাই কাম্বিজ ইয়াঘমই দুজনই ইরানের সঙ্গীতশিল্পী। তার পিতামহ ছিলেন একজন ভূস্বামী এবং তার দূরবর্তী পূর্বপুরুষদের একজন ছিলেন ইরানের জনপ্রিয় কবি।[১০] পরবর্তীতে তিনি তেহরানে স্থানান্তরিত হন এবং সেখানে শহিদ বেহেস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।[৯]
দশ বছর বয়সে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি হয়। বাবার কিনে দেওয়া প্রাচ্যের বাদ্যযন্ত্র সান্টুর শিখতে শুরু করেন। শীঘ্রই তিনি বাজাতে শিখেছিলেন এবং প্রাথমিকভাবে ঐতিহ্যবাহী ইরানি সঙ্গীতে তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে তিনি তার ১৫ বছর বয়সে[১১] গিটার বাজানো শুরু করেন।[১২] এবং পশ্চিমা সঙ্গীতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
তরুণ বয়সে তিনি বন্ধুদের সাথে প্রথম ব্যান্ড তৈরি করেছিলেন। সে সময তারা সার্ফ-রকার দ্য ভেনচার্সের মতো ব্যান্ডের ভিনাইল শুনতেন। ইয়াঘমই দ্য র্যাপচার্স নামে একটি ব্যান্ডে যোগ দিয়েছিলেন, যারা দ্য ভেনচার্স, দ্য কিঙ্কস, দ্য বিটল্স এবং দ্য মানকিজের কভার করতো। ১৯৬৭ সালে দলটির সদস্যদের (লাইনআপ) মধ্যে ছিলেন ইয়াঘমই (কণ্ঠ, গিটার), বাহরাম সাদি (ইলেককট্রিক গিটার), কামরান খাশেহ (অর্গান), জাহাঙ্গির (বেস) এবং ভিগুয়েন (ড্রাম)। এরপর তিনি কিছুকাল রেবেল্স নামে আরেকটি দলে বাজিয়েছিলেন, পরে যারা ধীরে ধীরে ইরানি রক ধারার সঙ্গীতে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছিল।[৯]
১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে, ২০ বছর বয়সে ইয়াঘমই তার জৈষ্ঠ্যে ভাই কামরান ইয়াঘমই এবং কনিষ্ঠ ভাই কাম্বিজ ইয়াঘমইয়ের সাথে আরেকটি ব্যান্ড গঠন করেছিলেন।[১০] সে সময় দলে তিনি গিটার বাজাতেন এবং গান গাইতেন।[৯] তার সঙ্গীতে ইরানি সুর, যন্ত্রসঙ্গীত, স্বন এবং কণ্ঠে পশ্চিমা ঐকতান, স্বরগ্রাম এবং ভাবমূর্তির সংমিশ্রণ রয়েছে।
১৯৭৩ সালে, তেহরানের শহীদ বেহেস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় ইয়াঘমইয়ের অভিষেক একক গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। "গোলে ইয়াখ" গানটি লিখেছিলেন সেসময় তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু মেহেদি আখভান ল্যাঙ্গরোদি, যিনি পরবর্তীতে আধুনিক ফার্সি সাহিত্যের অন্যতম কবি হিসাাবে বিবেচিত।[৫][৯] "গোলে ইয়াখ" ইরানের রাইরেও জনপ্রিয়তা পায়, যার ফলে ইরানের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর বহু পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।[১৩][১৪] গানটি তার সঙ্গীত জীবনের শুরুতেই দুর্দান্ত খ্যাতি এনেছিল এবং যা পরে বিভিন্ন ভাষার বিভিন্ন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে।[৯] সে বরছই স্টোন্স থ্রো রেকর্ডসের অঙ্গসংস্থা লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক আমেরিকান স্বাধীন রেকর্ড লেবেল নাউ-এগেইন রেকর্ডস থেকে তার প্রথম একক অ্যালবাম গোলে ইয়াখ মুক্তি পায়।[১৫]
যখন তুমি পাশে থাকো, একাকিত্ব বয়ে যায় বাতাসে
হৃদয়ে শীতের ফুল ফোটে— মেহেদি আখভান ল্যাঙ্গরোদি, "গোলে ইয়াখ", ১৯৭৩, [১০]
ইয়াঘমইয়ের চুক্তিবদ্ধ রেকর্ড সংস্থা অহেঞ্জ রুজ তার ৪টি একক প্রকাশ করে। ১৯৭৩ সালে "গোলে ইয়াখ" / "দেল দারেহ পির মিশেহ" ও "লায়লা" / "পাইজ", ১৯৭৪ সালে "হাজমে খালি" / "আখম নাকন" এবং ১৯৭৫ সালে "সারাবে তো" / "দার এন্তেহা" মুক্তি পায়। এই রেকর্ডগুলির উচ্চ বিক্রয় সত্ত্বেও তিনি কেবলমাত্র রয়্যালটি অর্জন পেয়েছিলেন।[৯] ইরানে তিনি নিষিদ্ধ হওয়ার আগে তার দুটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন, যেগুলি ইরানের রক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে বিবেচিত। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে ইয়াঘমই ২৪টি গানের রেকর্ড করেছেন। এর মধ্যে ১৭টি গান হাজমে খালি (১৯৭৫) এবং সারাব-ই তো (১৯৭৭) অ্যালবামে ক্যাসেট সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছিল। বাকী গান ১৯৭৮ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে বিপ্লব-পূর্ব দাঙ্গাকালীন সময়ে রেকর্ড করা হয়েছিল।[৯]
ইয়াঘমই ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত ইরানের বেতার ও টেলিভিশনে পরিবেশন করেছিলেন।[১০] ১৯৭৯-এর ইসলামি বিপ্লব চলাকালীন, ইরানের তৎকালীন মৌলবাদী সরকার ইয়াঘমইয়ের সঙ্গীত না শোনার নিষেধাজ্ঞা জারি করে।[১৬] ইয়াঘমইয়ের প্রকাশ্যে গান পরিবেশন নিষিদ্ধ করা হয়।[১৫] সঙ্গীত পরিবেশনায় এই নিষেধাজ্ঞা তার কর্মজীবনকে প্রভাবিত করেছিল। ১৯৯৩ সালে সুইডেন এবং নরওয়েতে কয়েকটি কনসার্ট বাদে তিনি ইরানের বাইরে আর খুব একটা পরিবেশন করেননি। কর্তৃপক্ষ দ্রুত তার সঙ্গীত বন্ধ করে দেয় এবং রেকর্ড প্রকাশ এবং সরাসরি পরিবেশন থেকে তাকে বাধা দেয়।[১০]
বিপ্লবের পরপর, ইয়াঘমই এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সল-ই ১ (১৯৭৯)- যেটি সিডি সংস্করণে পারান্দে মোহজের নামে লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক রেকর্ড লেবেল ক্যালটেক্স রেকর্ডস থেকে ১৯৯৬ সালে পুনরায় প্রকাশিত, সল-ই ২ (১৯৮০, ফেরেদুন ফৌরহির সাথে রেকর্ডকৃত) এবং সল-ই ৩- যেটি পরে আরাইশ-ই খোরশিদ নামে ২০০০ সালে মুক্তি পায়।[৩] কারণ অ্যালবামটির প্রকাশকালীন সময়ে ইরানে সঙ্গীতের উপর তৎকালীন শাসকের চাপ পূর্বের তুলনায় আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে।[৯] ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক কেভান হ্যারিসের মতে, ইসলামি বিপ্লবের পরে সরকার পশ্চিমা এবং ইউরোপিয় সংস্কৃতির প্রভাব বন্ধ করতে অত্যধিক অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছিল; ফলে তারা কুরুশের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের হ্রাস করতে দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়েছিল।[৯] ইরানের তৎকালীন অধিকাংশ সঙ্গীতশিল্পী সে সময়ে ইরান ত্যাগ করে লস অ্যাঞ্জেলেস, মন্ট্রিল, প্যারিস এবং অন্যান্য ইউরোপিয় দেশগুলিতে যেখানে নির্বাসিত সম্প্রদায়ের বসতি স্থাপন করা হয়েছিল সেখানে নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়েছিলেন। যদিও ইয়াঘমই তার আদর্শের দিক বিবেচনায় ইরান ছাড়েন নি। তার মতে:
"আমার বিশ্বাস, যদি আমার কর্মজীবন পরিবর্তন করতাম তবে তা আমার সঙ্গীত এবং নিজের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ হতো এবং এটির অর্থ সাংস্কৃতিক শিকড়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাও বটে। যখন আমার বিগত ৩৭ বছরের দিকে ফিরে তাকাই তখন যা করেছি তা নিয়ে আমি গর্বিত বোধ করি। এই যুদ্ধের অংশে একই শক্তিতে মোটামুটিভাবে না থাকলেও আমি প্রতিরোধ করতে পছন্দ করি।"[১০]
ইয়াঘমই, ফ্রম ন্যাশনাল স্টার টু এনিমি অব দ্য স্টেট, ভাইস, মে ২০১৬
ইসলামি বিপ্লবের পরে সতেরো বছর ধরে ইরানে ইয়াঘমই নিষিদ্ধ ছিলেন। এই সময়ে তিনি বাচ্চাদের পক্ষে কাজ করেছিলেন এবং বই এবং ক্যাসেট প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৮৭ সালে, রেকর্ডিংয়ের সময় বেস, গিটার এবং ড্রামের মতো প্রাশ্চাত্য বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার না করার জন্য ইরান সরকারের নিষেধাজ্ঞাধীন থাকাকালে তার চতুর্থ একক যন্ত্রসঙ্গীত অ্যালবাম দ্বার প্রকাশিত হয়। তবে, তিনি অ্যালবামটিতে ইয়াঘমইয়ের আয়োজিত মহান জাতীয় অর্কেস্ট্রায় বাজানো লোক সঙ্গীতের ব্যবহার ছিল।
১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে, কিছু বিধিনিষেধ স্বত্ত্বে ইয়াঘমই অ্যালবাম প্রকাশে ইরান সরকারের অনুমতি পায়। ১৯৯০ সালে তিনি গোর্গ হায়ে ঘোরোসনেহ অ্যালবাম মুক্তি দেন। ক্যালটেক্স রেকর্ডস ১৯৯১ সালে গোলে ইয়াখ শিরোনামে তার "১৯৭০ সালের সেরা" গানের সংকলন প্রকাশ করে। ১৯৯৩ সালের দিকে এইসকল বিধিনিষেধের অধীনে তিনি নরওয়ে এবং সুইডেনে কনসার্টে পরিবেশনের অনুমতি পেয়েছিল। ১৯৯৪ সালে, তার সিব-এ নোঘরেই (রূপালি আপেল) প্রকাশিত হয়। সে সময়ে ইরানি সরকার প্রচ্ছদশিল্পে তার আত্ম-আলোকচিত্র প্রকাশে তাকে বাধা দেয়, ফলে কেবল গ্রাফিক শিল্পের প্রচ্ছদে অ্যালবামটি মুক্তি পেয়েছিল। বিপ্লবের পরবর্তী সময়ের সল-ই ১ (১৯৭৯) প্রকাশিত গানগুলি নিয়ে ১৯৯৬ সালে ক্যালটেক্স রেকর্ডস থেকে পারান্দে মোহজের পুনরায় প্রকাশিত হয়। ১৯৯৬ সালে মাহ ভা পালং এবং ১৯৯৭ সালে কাবস অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।
২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে, তিনি দুটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন, যার একটি আরেশ-ই খোরশিদ, যেটি প্রাথমিকভাবে সল-ই ৩ হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল এবং ২০০০ সালে মুক্তির আগে একটি ট্র্যাক সেন্সর করা হয়েছিল। ২০০১ সালে প্রকাশিত তোফাং-ই দাস্তে নোঘরে ছিল ইরানে আইনত প্রকাশিত ইয়াঘমইয়ের সর্বশেষ অ্যালবাম।
২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ইয়াঘমই তার সর্বশেষ স্টুডিও অ্যালবাম মালেক জামশিদ-এর রেকর্ডের কাজ করেছিলেন।[১৭][১৮] সংস্কৃতি ও ইসলামি নির্দেশনা মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার জন্য ১২ বছর চেষ্টা করার পরে কর্তৃপক্ষ ইরানে অ্যালবামটি প্রকাশে আপতবতি জানায়। পরে ২০১৬ সালে, অ্যাকোস্টিক সিস্টেম, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, পেশাদার মাইক্রোফোন, অ্যামপ্লিফায়ার, রোল্যান্ড কিবোর্ড, ইলেকট্রিক গিটার, ৮ ট্র্যাক রেকর্ডার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির[১৭][১০] ব্যবহার না করার নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও অ্যালবামটি নাও অ্যাগেইন রেকর্ডস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হওয়ার পর ইরানে তা নিষিদ্ধ করা হয়।[৯][১৭]
২০১১ সালে নাও অ্যাগেইন রেকর্ডস থেকে তার সংকলন অ্যালবাম ব্যাক ফ্রম দা ব্রিঙ্ক: প্রি-রিভল্যুশনারি সাইকেডেলিক রক ফ্রম ইরান: ১৯৭৩-১৯৭৯ প্রকাশ হয়।[১৯][২০] এটি ইসলামি বিপ্লবের পূর্বে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে রেকর্ডকৃত ইয়াঘমইয়ের সর্বাধিক পরিচিত গানগুলির একটি সংকলন।[২১]
তার বাদ্যশৈলী ইরানি সাইকেডেলিক রক এবং ব্লুস-রক ধারায় অনন্য সঙ্গীত অবদান। তিনি ইরানি রক সঙ্গীতে প্রচুর নতুন উদ্ভাবন নিয়ে এসেছিলেন,[২২][২৩] গিটারের সুরে গানের তাল হিসাবে কিবোর্ডের ব্যবহার এই উদ্ভাবনের অংশ।[২৪][২৫] যেমন তার বিষাদগ্রস্ত চিত্রের বর্ণনা, ব্লুস রিফ, স্ট্রিং এবং এনালগ সিনথেসাইজার শব্দগুলি হৃদয়কে স্থির করে তোলে এমন অনুভূতি তৈরি করতে সক্ষম। তার আনুমানিক ৬ থেকে ৮ মিনিট স্থিতিকালের গানগুলি প্রোগ্রেসিভ ধারার সঙ্গীতের অংশ হয়ে ওঠেছে।[৯] ইরানি লেখক ইব্রাহিম নববির মতে, "ইরানি সাইকিডেলিক রক ধারায় ইয়াঘমইয়ের গভীর প্রভাব রয়েছে।"[২৬] ইয়াঘমই ইরানি রক সঙ্গীতে তার গভীর প্রভাবের কারণে ইরানি রক সঙ্গীতের জনক হিসাবেও বিবেচিত।[২৭][২৮][২৯][৩০] ব্রিটিশ-ইরানি সুরকার আশঙ্কান কুশানেজাদের মতে, "গ্রহণযোগ্য উপায়ে পশ্চিমা-প্রাচ্য হাইব্রিড সঙ্গীতে অবদানকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন।"[১০]
ইয়াঘমইয়ের তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। কাভে ইয়াঘমই, যিনি কানাডার ভ্যানকুভার বসবাসকারী[১০] একজন সঙ্গীতশিল্পী;[৩১] সাতগিন ইয়াঘমই এবং কামিল ইয়াঘমই। ইরানে তার রেকর্ডের কঠোর সেন্সরশিপের অধীনে থাকার কারণে, ইয়াঘমই বর্তমানে তেহরানে একটি বেসরকারি সঙ্গীত বিদ্যালয়ে এবং স্টুডিও পরিচালনা করছেন।[৩২]
১৯৮৯ সালে কেতন দেসাই পরিচালিত তুফান বলিউড চলচ্চিত্রে অনুরাধা পাড়োয়াল এবং অমিত কুমার অভিনীত "হা ভাই হা মাই হু জওয়ান" গানটি ইয়াঘমইয়ের "হাওয়ার হাওয়ার" গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
চলচ্চিত্র | বছর | ভূমিকা | টীকা |
---|---|---|---|
গোরঘায়ে গোরোসনেহ | ১৯৯১ | সঙ্গীত পরিচালক | সিরোস মোগাদ্দাম পরিচালিত[৩৩] |
ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেন্স | ২০০৯ | সঙ্গীত পরিবেশনকারী, পর্ব ১: "অরুসি পার্সিয়ান ওয়েডিং" | টেলিভিশন ধারাবাহিক (১৯৯৯– )[৩৪] |
অ্যাপ্রোপ্রিয়েট বিহেভিয়র | ২০১৪ | গীতিকার | ডেসিরি আখেভান পরিচালিত[৩৫] |
নিট চেরি | ২০১৮ | সঙ্গীত পরিচালক | লিয়া বার্টেলস পরিচালিত |
ইয়াঘমইয়ের গানের সংস্করণ বিভিন্ন শিল্পীর বেশ কয়েকটি অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে। তার ১৯৭৪ সালের একক "গোল-ই ইয়খ" ("এডাম অ্যান্ড ইভ"),[৩৬] যেটি যৌবনের অদৃশ্য উপস্থিতি বিষয়ে রচিত, ২০১৮ সালের মার্কিন র্যাপার নাসের নাসির অ্যালবামে কভার করা হয়েছে।[৩৭][১৪]