কুর্ট আলডার (জার্মান: [ˈaldɐ] ১০ই জুলাই ১৯০২ – ২০শে জুন ১৯৫৮) ছিলেন একজন জার্মান রসায়নবিদ এবং নোবেল বিজয়ী।
আলডার সিলেশিয়ার কনিগশুত্তে(আধুনিক কোরজো, আপার সিলেসিয়া, পোল্যান্ড) শিল্প এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। আলডার এলাকা ছেড়ে চলে যান যখন কনিগশুত্তে ১৯২২ সালে পোল্যান্ডের অংশ হয়ে ওঠে। তিনি ১৯২২ সাল থেকে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন অধ্যয়ন করেন। পরে কিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯২৬ সালে ডাইলস এর তত্ত্বাবধানে গবেষনার জন্য তাঁকে পিএইচডি প্রদান করা হয়।
কুর্ট আলডার ডক্টরেট পাওয়ার পর কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অটো ডিলস ল্যাবরেটরিতে গবেষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৩০ সালে আলডার কিল বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের জন্য পাঠক হিসেবে নিযুক্ত হন, এবং ১৯৩৪ সালে প্রভাষক পদে উন্নীত হন। ১৯৩৬ সালে তিনি কিল ছেড়ে লেভারকুসেনে আই জি ফারবেন ইনডাস্ট্রিতে যোগ দেন, সেখানে তিনি কৃত্রিম রাবারের গবেষনার কাজ করতেন। এরপর ১৯৪০ সালে তিনি কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষামূলক রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তির অধ্যাপক এবং সেখানকার রসায়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। এই সময় জুড়ে এবং সে সময় ইউরোপে মূল গবেষণায় অনেক বাধা সত্ত্বেও, তিনি জৈব যৌগ সংশ্লেষণে তার বিশেষ আগ্রহের একটি পদ্ধতিগত অনুসন্ধান অব্যাহত রাখেন। সব মিলিয়ে তিনি এই ক্ষেত্রে ১৫১টিরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।
১৯৪৫ সালে তিনি ইডিটিএ এর আবিষ্কারক ফার্ডিনান্ড মুঞ্জের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন।[১] ১৯৪৯ সালে তারা ডিয়েন সংশ্লেষণ এবং সংযোজনের উপর একটি গবেষণাপত্র যৌথভাবে প্রকাশ করেন।[২]
আলডার ১৯৫৮ সালের জুন মাসে ৫৫ বছর বয়সে মারা যান।[৩] তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি, তবে দুই সপ্তাহ পর জার্মানির কোলোনে তার এপার্টমেন্টে তার লাশ পাওয়া যায়। তার ভাতিজা, যিনি মৃতদেহটি খুঁজে পেয়েছেন, তিনি বলেন যে পচা মাংসের গন্ধ এতটাই খারাপ ছিল যে, তিনি বাইরের রাস্তা থেকে এর গন্ধ পাচ্ছিলেন। গেরট্রুড আলডার জানিয়েছেন যে, তার স্বামী তাকে শেষ বার দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন এবং প্রায়ই "Les Jardins du Souvenir"(দ্যা মেমরি গার্ডেন) বাক্যটি বিড়বিড় করতেন যখন তিনি তার গবেষণার নোট লিখছিলেন।
কুর্ট আলডার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার পিতামাতা উভয়কেই হারান কারণ তারা ইহুদি ছিলেন বলে গেস্টাপো তাদেরকে বন্দী করে রেখেছিল। তিনি ১৯৪৮ সালে আইরিন হাওথোর্নকে বিয়ে করেন। পরে তিনি ক্রিস্টিয়ানা টোক্কোকে বিয়ে করেন।[৪]
আলডার বেশ কয়েকটি সম্মানসূচক ডিগ্রী এবং অন্যান্য পুরস্কার লাভ করেন, সবচেয়ে বিখ্যাত ১৯৫০ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কার যা তিনি তার শিক্ষক ডিয়েলসের সাথে শেয়ার করেন যা বর্তমানে ডিলস-আলডার প্রতিক্রিয়া নামে পরিচিত। ১৯৩৮ সালে কুর্ট আলডার জার্মান কেমিস্টস এসোসিয়েশন কর্তৃক এমিল ফিশার মেমোরিয়াল মেডেল লাভ করেন। তিনি ১৯৫০ সালে কোলোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়াও ১৯৫৪ সালে তিনি সালামাঙ্কা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।[৫] চন্দ্র গর্ত আলডার তার সম্মানার্থে নামকরণ করা হয়। কীটনাশক অলড্রিন, যা ডিয়েলস-আলডার বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি, যা বিজ্ঞানীর নামে নামকরণ করা হয়।