কৃতিস্বত্ব বা পেটেন্ট হল সরকার কর্তৃক একজন উদ্ভাবককে এক ধরনের অধিকার প্রদানের অনুমোদনপত্র, যে অধিকারবলে অন্য কোনও পক্ষ (সাধারণত সীমিত সময়ের জন্য) তার উদ্ভাবনের প্রস্তুতি, ব্যবহার বা বিক্রয় করতে পারে না। উদ্ভাবনটি হতে পারে যেকোনো পণ্য, বা হতে পারে এমন কোন পদ্ধতি যা মানুষের কাজে আসে। একটি কৃতিস্বত্বের মাধ্যমে এর মালিক বা উদ্ভাবক তার উদ্ভাবনের জন্য সুরক্ষা লাভ করেন।[১] সাধারণত আদালত কর্তৃক পেটেন্ট সম্পর্কিত অধিকারগুলো কার্যকর করা হয় এবং এই অধিকার সাধারণত ২০ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে।[২]
সাধারণত নতুন ও উপকারী যন্ত্রপাতি, শিল্পজাত দ্রব্য ও শিল্প প্রক্রিয়ার জন্য এবং বিদ্যমান যন্ত্রপাতি, দ্রব্য বা প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নসাধনের জন্য কৃতিস্বত্ব অনুমোদন করা হয়। এছাড়া নতুন রাসায়নিক যৌগ, খাদ্যদ্রব্য, ঔষধ ও এগুলির উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্যও কৃতিস্বত্ব প্রদান করা হয়। কিছু কিছু রাষ্ট্রে বংশগতি প্রকৌশলকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবিত নতুন প্রজাতির উদ্ভিদ বা প্রাণীর জন্যও কৃতিস্বত্ব অনুমোদন করা হতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO ডব্লুটিও) ট্রিপস (TRIPS) চুক্তির অধীনে, সংস্থার সদস্যদেশগুলিতে কোনও উদ্ভাবনের জন্য কৃতিস্বত্ব পাওয়া যায়।[৩] যদিও দেশভেদে এবং কৃতিস্বত্বের বিষয়ের অনুযয়ী এটি পরিবর্তিত হতে পারে। ট্রিপস চুক্তি অনুযায়ী একটি কৃতিস্বত্বের সময়সীমা কমপক্ষে ২০ বছর হওয়া উচিত।
বাংলাদেশে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ‘বাংলাদেশ পেটেন্ট বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। এই বিলে কৃতিস্বত্ব ১৬ বছর থেকে বাড়িয়ে ২০ বছর করা হয়েছে। [৪]
কৃতিস্বত্বের ইংরেজি পরিভাষা "পেটেন্ট" শব্দটি লাতিন শব্দ পেতেরে থেকে এসেছে, যার মানে "মুক্ত রাখা" (অর্থাৎ জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উপলব্ধ করা)। এটি ক্ষমতাপত্র বা চিঠি কৃতিস্বত্বের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ, যেটি ছিল কোন রাজা বা সরকার প্রদত্ত একটি উন্মুক্ত দলিল বা সাধনী, যা একজন ব্যক্তির একচেটিয়া অধিকার মঞ্জুর করত। যা ছিল আধুনিক কৃতিস্বত্ব পদ্ধতির পূর্বাভাস।
আধুনিক রীতিতে কৃতিস্বত্ব শব্দটি সাধারণত এমন কাউকে দেওয়া অধিকারকে বোঝায় যিনি নতুন, দরকারী এবং অ-স্পষ্টত কিছু আবিষ্কার করেন।