কে. বি. সুন্দরম্বল | |
---|---|
জন্ম | কুদুমুদি বালাম্বল সুন্দরম্বল ১০ অক্টোবর ১৯০৮ |
মৃত্যু | ১৫ অক্টোবর ১৯৮০ | (বয়স ৭২)
দাম্পত্য সঙ্গী | এস. জি. কিট্টাপ্পা (বি. ১৯২৭–১৯৩৩) |
কুডুমুডি বালাম্বল সুন্দরম্বল[১] (১০ অক্টোবর ১৯০৮-১৫ অক্টোবর ১৯৮০) ছিলেন একজন ভারতীয় মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী। তিনি তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন এবং তাঁকে "ভারতীয় মঞ্চের রানী" হিসেবে অভিহিত করা হত।[২] ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী সুন্দরম্বল ছিলেন ভারতের রাজ্য আইনি ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত হওয়া প্রথম চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।[৩]
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ভারত সরকার ১৯৭০ সালে তাঁকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করে। তিনি একবার শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং একবার তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
সুন্দরম্বল ১৯০৮ সালের ১০ই অক্টোবর তামিলনাড়ু রাজ্যের এরোড জেলায় কাবেরী নদীর তীরে কুডুমুডি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি রেলগাড়িতে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করতেন।[৪]
কিছু সূত্র অনুসারে,[৪] রেলগাড়িতে গান গাওয়ার সময় ১৯ বছর বয়সী সুন্দরম্বল অপেশাদার মঞ্চ অভিনেতা, নির্দেশক ও প্রতিভা-অন্বেষণকারী এফ. জি. নতেসা আইয়ারের নজর কাড়েন। আবার কিছু সূত্র অনুসারে,[৫] কৃষ্ণস্বামী আইয়ার নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা ১৯ বছর বয়সী সুন্দরম্বলের প্রতিভার সন্ধান পান এবং তাঁকে সেই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় নাট্যকার পি. এস. ভেলু নায়ারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
এই দুটির যেভাবেই হোক ১৯২৭ সালে সফররত মঞ্চ দলের অংশ হিসেবে সুন্দরম্বলের তামিল মঞ্চে অভিষেক ঘটে। তিনি তাঁর কণ্ঠের মাধ্যমে ছোট চরিত্রেও দর্শকদের আকৃষ্ট করতে ও বিনোদন প্রদান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। শীঘ্রই তিনি মঞ্চে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর প্রারম্ভিক মঞ্চনাটকগুলি - বাল্লি তিরুমানম, পাবালাকোডি ও হরিশ্চন্দ্র জনপ্রিয় হয়। বিশেষ করে এস. জি. কিট্টাপ্পার সাথে বাল্লি তিরুমানম ব্যাপক সফলতা অর্জন করে।
সুন্দরম্বল একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে মণিমেখালাই, আউবাইয়ার, তিরুবিলায়াদাল, কারাইকাল আম্মাইয়ার ও কন্দন কারুনাই। তিনি তিরুবিলায়াদাল ও কন্দন কারুনাই চলচ্চিত্রে তামিল কবি চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি কয়েকটি সামাজিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে উইর মেল আসাই, তুনাইবান ও জ্ঞায়িরু তিঙ্গল। শেষোক্ত চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠও দিয়েছেন। তিনি সঙ্গীত পরিচালক মায়াবরম বেনু, এম. ডি. পার্থসারথি, পারুর এস. অনন্তরামন, আর. সুধারসনম, কে. ভি. মহাদেবন, এস. এম. সুব্বাইয়া নাইডু, টি. কে. রামমূর্তি, এম. এস. বিশ্বনাথন ও কুন্নাকুডি বৈদ্যনাথনের সুরায়োজনে গান গেয়েছেন। তুনাইবান (১৯৬৯) চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার[৬] ও তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
মঞ্চে অভিনয় করা কালীন সুন্দরম্বলের এস. জি. কিট্টাপ্পার সাথে পরিচয় হয়। তাঁরা ১৯২৭ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিট্টাপ্পা ১৯৩৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর সুন্দরম্বল মঞ্চ ত্যাগ করেন এবং সঙ্গীতানুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তিনি ১৯৮০ সালের ১৫ই অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।