কেগী দি কেগ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর হেনোভার, নিঊহ্যাম্পশায়ার শহরের আইভি লীগ এর অন্তর্গত ডার্টমাউথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের, একটি বেসরকারী মাসকট (সৌভাগ্যআনয়নকারী জন্তুবিশেষ)। কেগী হল একটি নরত্বারূপমূলক ছোটোখাটো পিপে, ২০০৩ সালে কলেজের ব্যাঙ্গরসান্তক সাময়িকী ডার্টমাউথ জ্যাক-ও-ল্যানটার্নএর সদস্যদের দ্বারা এটি তৈরী, এটি যেন অকার্যকর না হয় সেজন্য এটি বাতিলকৃত ১৯৭১ সালের দা ইন্ডিয়ান মাসকট কে অনুসরণ করে। এটির ধরনের কারণে এটি ডার্টমাউথ কলেজে বিতর্কিত ছিলো এবং বিভিন্ন জাতীয় মিডিয়ায় এটির উপর প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিলো। তারপরেও সময়ের সাথে সাথে এটি "ডার্টমাউথ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে"।[১]
ইন্ডিয়ান মাসকটটি বাতিল হওয়ার পর, ডার্টমাউথের আর কোন আধিকারিক মাসকট ছিল না।[২] এরপর থেকেই ডার্টমাউথ পরিচিত হতো তার ডাকনাম "দা বিগ গ্রিন" নামে, কিন্তু, মাসকট না থাকার দরুন সৃষ্ট উদ্ধৃত অস্পষ্টতা, স্থবিরতা এবং অস্পৃশ্যতার কারণে, ডার্টমাউথ ছাত্র পরিষদ ২০০৩ সালের স্প্রিং সেশনে নতুন একটি মাসকটের ব্যাপারে একটি নির্বাচনের আয়োজন করে। সেসময় ভোটে দা মোজ (আমেরিকান হরিণবিশেষ) এর নাম প্রথম হয়,[৩] অনেক ছাত্র-ছাত্রী এ অভিমতে নাখুশ থেকে যান, এবং দা মোজ একটি চূড়ান্ত নির্বাচনে "নো মাসকট" এর নিকট হেরে যায়। ব্যাঙ্গরসান্তক সাময়িকী জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন এর দুজন ছাত্র ক্রিস প্লিহাল এবং নিক ডাকোটি একটি নতুন মাসকট তৈরীতে আগ্রহ প্রকাশ করেন যেটি "বর্ণবাদী, পক্ষপাতমূলক কিংবা যৌন বিষয়ক হবে না, তখনো পর্যন্ত যেটি সম্পূর্ণরূপে অচিন্তনীয়।"[৪] কর্তৃপক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য করতে তারা ছোটোখাটো পিপের ন্যায় অত্যধিক আকর্ষণীয় নরত্বারোপমূলক এই কেগী মাসকটটি তৈরী করেন, যেটি "বেশিরভাগক্ষেত্রে ডার্টমাউথ এর যবসুরা পানের প্রাণীঘর গুলোর সমধর্মিতা সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।"[৫]
কেগীর প্রথম আন্তপ্রকাশের পর প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র: ছাত্র পরিষদের সভাপতি ব্যক্তিগতভাবে কেগীতে সমর্থন করলেও[৬] একই সময়ে কলেজের পত্রিকা দা ডার্টমাউথ ছাত্র-ছাত্রীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং বিরোধপূর্ণ মতবাদ জ্ঞাপন করে।[৪][৭][৮][৯]
পরবর্তীকালে কেগী কলেজের বাইরেও আইভি লীগের অন্যান্য পত্রিকাগুলোর এবং বিভিন্ন জাতীয় মিডিয়ার নজর কাড়েন।[১০][১১] মাইকেল উইলবন ইএসপিএন এর পারডন দা ইনটেরাপশন এ কেগীকে "একধরনের নির্বোধ যবসুরার সামগ্রী"[১২] বলে আখ্যায়িত করেন এবং "মাসকট টক ব্যাক" সিরিজ এর অংশ হিসেবে প্লেবয় সাময়িকী কেগীর উপরে একটি ফিচার প্রকাশ করে।[১৩] কলেজের ব্যাঙ্গরসান্তক সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি ছবি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে এটি জাতীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছিল।[১৪][১৫] ২০১২ সালের অগাস্টে ইয়াহু স্পোর্টস কেগী দা কেগ কে সবচেয়ে অনুপম মাসকট হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।[১৬]
২০০৩ সালে কেগীর আন্তপ্রকাশের কিছুপরে, একদল ছাত্র কেগীকে তার থাকার ঘর সিগমা নু নামক গ্রন্হাগার হতে চুরি করে এবং কেগীর বাধা এবং করুণ অবস্থার এক চোখ কালো করা ছবি সহ তার নির্মাতাদের নিকট ভীতিপ্রদর্শন মূলক পত্র প্রেরণ করে।[১৭] কেউ কেউ ভেবেছিল এটা নির্মাতাদের একধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারণা, কিন্তু মাসকটটি সত্যিই চুরি হয়েছিল। অবশেষে কেগী সামান্য ক্ষয়ক্ষতিসহ ফেরত এসেছিল।[১৮]
এরপর কেগী অনিয়মিত ভাবে ডার্টমাউথের খেলার অনুষ্ঠানগুলোয় হাজির হতে শুরু করল, এবং "ডার্টমাউথের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হল" [১] : ডার্টমাউথে ২০০৫ সালে শীতকালীন উৎসব উদযাপনের সময় ছাত্র-ছাত্রীরা তুষারে নির্মিত বিশাল একটি নৌকার ভাস্কর্য কে "ক্যাপ্টেন কেগী'স কার্নিভাল ক্রুইসার" নামকরণ করেন।[১৯] ২০০৬ এর শুরুর দিকে কলেজ কর্তারা একটি হকি খেলায় কেগীর প্রবেশাধিকার প্রত্যাখাত করে। এ ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করে দা ডার্টমাউথ জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন এর কলামে একটি সম্পাদকীয় প্রবন্ধ প্রকাশ করে,[২০] জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন তাদের ওয়েবসাইটে "বর্ণবাদ সম্পর্কিত" অভিযোগ তুলে। [২১] ২০০৬ সালের অক্টোবরে একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে যখন কেগী ঘরের মাঠের একটি খেলার মধ্যবিরতিতে মাঠে প্রবেশাধিকার পাইনি, একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে দা ডার্টমাউথ এবং জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন আবারো একই ধরনের মনোভাব জ্ঞাপন করে।[২২][২৩]
কেগী সেই বেশভূষা সহকারে ২০০৮ সালের ফল সেশনের পূর্বে বিলীন হয়ে যায় এবং আর কখনোই তাকে দেখা যায় নি কিংবা সে ফেরত আসে নি। দ্য জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন একটি নতুন প্রতিরূপ মাসকট নির্মাণ করে এবং ২০০৯ সালের শীতকালীন উৎসবে এটিকে উন্মোচন করে।[২৪]
In a BlitzMail message to The Dartmouth, the staff of Jack-O-Lantern claimed that Keggy 'was treated rudely and unfairly, simply because of his status as an anthropomorphic keg.'