কেঠো মানিকজোড় Mycteria americana | |
---|---|
Pond, Tampa Bay, FL | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Ciconiiformes |
পরিবার: | Ciconiidae |
গণ: | Mycteria |
প্রজাতি: | M. americana |
দ্বিপদী নাম | |
Mycteria americana Linnaeus, 1758 |
কেঠো মানিকজোড় (বৈজ্ঞানিক নাম: Mycteria americana) Ciconiidae (সিকোনিডাই) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Mycteria (মাইক্টেরিয়া) গণের অন্তর্গত এক প্রজাতির বড় আকারের জলচর পাখি। পূর্বে প্রজাতিটিকে কেঠো কাস্তেচরা নামে ডাকা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা কাস্তেচরা নয়।
কেঠো মানিকজোড়ের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ আমেরিকার পেটরা পাখি (গ্রিক mukter = পেটরা; লাতিন: americanus = আমেরিকার)। পাখিটি প্রায় সমগ্র দক্ষিণ আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকার কিয়দংশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে ১ কোটি ৪০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এদের আবাস।[২] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[৩]
বিষূবীয় অঞ্চলের আশেপাশে কেঠো মানিকজোড়ের আবাস। দক্ষিণাংশ বাদে সমগ্র দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকার দক্ষিণাংশের উপকূল, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মধ্য আমেরিকা জুড়ে এদের বিস্তৃত।[৩]
কেঠো মানিকজোড় বেশ বড়সড় সাদা জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য ৮৩-১১৫ সেন্টিমিটার, ডানার বিস্তার ১৪০-১৮০ সেন্টিমিটার। পরুষ মানিকজোড়ের ওজন ২.৫-৩.৩ কেজি। স্ত্রী মানিকজোড়ের ওজন ২.০-২.৮ কেজি।[৪] বড় পুরুষ মানিকজোড় ওজনে ৪.৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।[৫] প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মুখ পালকহীন ও চামড়া কালচে। ঘাড় ও গলাও পালকহীন এবং বাদামি-পাটকিলে রঙের। পিঠ দুধসাদা। দেহতলও সাদা। ডানার প্রান্ত-পালক কালো। ডানার কালো পালক-ঢাকনিতে সাদা ডোরা দেখা যায়। লেজের পালক কালচে ও সাদা মেশানো। চোখের রঙ গাঢ় বাদামি। লম্বা ঠোঁটের কালচে, তাতে হলদেটে ভাব থাকে। নিম্নমুখী ঠোঁটের আগা পাটকিলে। পা কালচে-ধূসর। পায়ের পাতা গোলাপি। স্ত্রী ও পুরুষ মানিকজোড় দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি মলিন সাদা।
কেঠো মানিকজোড় নদীর পাড়, জলমগ্ন মাঠ, হ্রদ, কাদাচর, লবণ চাষের জমিতে ও নদীর মোহনায় বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় কিংবা ছোট দলে থাকে। অগভীর পানিতে হেঁটে ঠোঁট খুলে কাদায় ঢুকিয়ে এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়। ঠোঁটে মাছ বা অন্যান্য খাবারের অস্তিত্ব টের পেলেই এরা সাথে সাথে ঠোঁট বন্ধ করে ফেলে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে মাছ, ব্যাঙ, চিংড়ি, কাঁকড়া, জলজ পোকামাকড় ও ছোট সরীসৃপ। পানির ধারে এরা প্রায়ই একপায়ে ঠায় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম করে। ওড়ার সময় প্রলম্বিত পা ও গলা কিছুটা নিচের দিকে ঝুঁকে থাকে। বৃত্তাকারে ধীরলয়ে ওড়ে, ক্রমে ওপরে উঠে যায়। গলায় তেমন শব্দ নেই। ভয় পেলে, উত্তেজিত হলে, আনন্দিত হলে বা বিপদে পড়লে দু'ঠোঁটে বাড়ি মেরে ঠক ঠক শব্দ তোলে। প্রজনন ঋতুতে এক গাছে বা পাশাপাশি একাধিক গাছে অনেকগুলো পাখি মিলে কলোনি করে বাসা করে। এসব কলোনিতে পানকৌড়ি ও অন্যান্য বকও বাসা করে।