![]() ২০১৫ সালে ইহেয়ানাচো ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলছেন | |||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কেলেচি প্রোমিস ইহেয়ানাচো | ||
জন্ম | ৩ অক্টোবর ১৯৯৬ | ||
জন্ম স্থান | ইমো, নাইজেরিয়া | ||
উচ্চতা | ১.৮৭ মিটার (৬ ফুট ১+১⁄২ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান | স্ট্রাইকার | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | ম্যানচেস্টার সিটি | ||
জার্সি নম্বর | ৭২ | ||
যুব পর্যায় | |||
২০১১-২০১৪ | টায়ে একাডেমী | ||
২০১৪-২০১৫ | ম্যানচেস্টার সিটি একাডেমী | ||
২০১৪- | → কলাম্বাস ক্রিউ (লোন) | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০১৫– | ম্যানচেস্টার সিটি | ৩৫ | (১১) |
– | লেস্টার সিটি | ৯ | (০) |
জাতীয় দল | |||
২০১৩ | নাইজেরিয়া অনূর্ধ্ব-১৭ | ৭ | (৯) |
২০১৫- | নাইজেরিয়া অনূর্ধ্ব-২০ | ২ | (০) |
২০১৫- | নাইজেরিয়া | ৭ | (৪) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
কেলেচি প্রোমাইস ইহেয়ানাচো (জন্ম: ৩ অক্টোবর ১৯৯৬) একজন নাইজেরিয়ান পেশাদার ফুটবলার[১], যিনি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লেস্টার সিটি এবং নাইজেরিয়া জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেন। তিনি পূর্বে ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব দলের হয়ে খেলেছেন।
ইহেয়ানাচো নাইজেরিয়ার ইমো রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানে স্থানীয় টায়ে ফুটবল একাডেমীতে খেলা শুরু করেন।
ইহেয়ানাচো ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারিতে ম্যানচেস্টার সিটি একাডেমিতে যোগ দেন। ২০১৪-১৫ মৌসুমের আগে ম্যানচেস্টার সিটির যুবদল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তখন তিনি প্রথমবার দলে সুযোগ পায়। স্পোর্টিং কানসাস সিটি'র বিপক্ষে সেবার অভিষেক হয়ে কেলেচির, সেই ম্যাচে তার দেয়া একটি গোলের সুবাদে ৪-১ গোলের বিশাল জয় পায় ম্যানচেস্টার সিটি। উয়েফা যুব লিগে ম্যানচেস্টার সিটি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে তিনি খেলেন, তবে প্রথম ম্যাচেই মাত্র ১১ মিনিট সময়ে তিনি ইনজুরি হন।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে নতুন মৌসুমের প্রস্তুতির জন্য ম্যানচেস্টার সিটি অস্ট্রেলিয়ার খেলতে যায়, সেখানে সিনিয়র দলে ডাক পান[২]। সেখানে ২০১৫ ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়েন্স কাপে রোমার বিপক্ষে ১ টি গোল দেন।
২০১৫ সালের ১০ আগস্ট কেলেচি প্রিমিয়ার লিগের ১ম ম্যাচের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হন। সেই ম্যাচে ওয়েস্ট ব্রোমের বিপক্ষে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামে, ম্যাচটি ৩-০ গোলে জয়লাভ করে ম্যানচেস্টার সিটি।[৩] এর ১৯ দিন পর রাহিম স্টারর্লিং এর বদলে প্রথমবারের মত একাদশে জায়গা পায়, ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে ওয়ার্টফোর্টের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়লাভ করে ম্যানচেস্টার সিটি। ১২ সেপ্টেম্বরে উইলফ্রেড বনির বদলি হিসেবে নেমে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে শেষ মুহুর্তে দলের একমাত্র গোলটি করেন।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এফএ কাপের ৪র্থ পর্বে অ্যাস্টন ভিলা ম্যাচে কেলেচি তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন। সেই মাসে সামির নাসরির ইনজুরির কারণে উয়েফা চ্যাম্পিয়েন্স লিগে দলে সুযোগ পান।
২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল স্টোক সিটির বিপক্ষে তার দেয়া জোড়া গোলের সুবাদে ৪-০ গোলে জয়লাভ করে ম্যান সিটি। ২৬ এপ্রিল উয়েফা চ্যাম্পিয়েন্স লিগে সেমিফাইনালে বদলি হিসেবে নামেন। এর ৫ দিন পর
সাউথহ্যাম্পটনের বিপক্ষে জোড়া গোল দেন, সেই ম্যাচটি ৪-২ গোলে জায় পায় ম্যানচেস্টার সিটি[৪]। কেলেচি ইহেয়ানাচো প্রিমিয়ার লিগে ৮ টি গোল দিয়ে ২০১৫-১৬ মৌসুম শেষ করেন। সেবার প্রতি ৯৩.৯ মিনিটে ১ টি করে গোল দেন কেলেচি, যা লিগের সেরা। ২০১৫-১৬ মৌসুমের সব ম্যাচ মিলিয়ে ১৪ টি গোল এবং ৫ টি এসিস্ট করেন, যা তাকে ম্যানচেস্টার সিটির ৩য় সর্বোচ্চ গোলদাতা খেতাব এনে দেয়।
২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কেলেচি ইহেয়ানাচোর দেয়া মৌসুমের প্রথম গোল এবং এসিস্টের সাহায্যে ম্যানচেস্টার ডার্বি জিতে নেয় ম্যানচেস্টার সিটি। এর চারদিন পর উয়েফা চ্যাম্পিয়েন্স লিগে বুরুশিয়া মঞ্চেনগ্লাডবাচের বিপক্ষে বদলি হিসেবে নামা কেলেচির একটি গোলের সাহায্যে ৪-০ গোলে জয়লাভ করে সিটি[৫], যা কোন ইউরোপিয়ান লিগে দেয়া তার প্রথম গোল। ৪-০ গোলে জয়ের দুইদিনপর প্রিমিয়ার লিগে বোর্ন্মাউথের বিপক্ষে আবারো গোল দিন এবং এসিস্ট করেন, এই গোলের সাহায্যে প্রিমিয়ার লিগে নিজের ১০ম গোল করেন, সেই ম্যাচে ৪-০ গোলে বিজয়ী হয় ম্যানচেস্টার সিটি[৬]। প্রিমিয়ার লিগে রায়ান গিগস, ওয়েইন রুনি, মাইকেল ওয়েন, রোমেলু লুকাকু ও নিকোলাস আনেলকার পর ষষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ২০ বছরের কম বয়সে ১০ টি গোল দেয়ার রেকর্ড করেন[৭]। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর প্রিমিয়ার লিগে সাউথহ্যাম্পটনের বিপক্ষে নিজের ৪র্থ গোল দেন, ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়।
২০১৬ সালের অক্টোবরে কেলেচি ইহেয়ানাচো ফিফা গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন, যা পরে বায়ার্ন মিউনিখ মিডফিল্ডার রেনাটো সানচেজ জিতে। এর আগে এই পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে তার ক্লাব সতীর্থ রাহিম স্টারলিং ও সার্হিও আগুয়েরো এবং পাঁচবারের ব্যালন-ডি-অর জয়ী লিওনেল মেসি অন্যতম।
২০১৭ সালের ৩ আগস্টে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লেস্টার সিটি £২৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কেলেচিকে ৫ বছরের চুক্তিতে দলবদ্ধ করে। ১১ আগস্ট আর্সেনালের বিপক্ষে অভিষেক হয়, ম্যাচটি ৪-৩ গোলে হারে লেস্টার সিটি।
কেলেচি নাইজেরিয়া অনূর্ধ্ব-১৩ দল থেকে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন। মরক্কোয় অনুষ্ঠিত '২০১৩ আফ্রিকান অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়েন্সিপ' খেলার মাধ্যমে প্রথমবারের মত বড় আসরে খেলেন। বতসোয়ানার বিপক্ষে হ্যাট্রিকের মাধ্যমে কেলেচি আলোচনায় আসে[৮]। তার এই হ্যাট্রিক তিনি উৎসর্গ করেন তার মা'কে, যিনি টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার ২ মাস আগে মারা যান[৯]। নাইজেরিয়া সেই আসরে ফাইনালে ওঠে এবং আইভরি কোস্টের বিপক্ষে ট্রাইব্রেকারে হেরে শিরোপা অর্জনে ব্যর্থ হয়।
২০১৩ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে কেলেচি ইহেয়ানাচো গোল্ডেন বল জিতেন[১০]। টুর্নামেন্টে নাইজেরিয়া শিরোপা জিতে"Nigeria win Under-17 World Cup" . BBC. 8 November 2013. Retrieved 20 June 2015., যেখানে কেলেচি ফাইনালে দেয়া একটি গোলসহ মোট ৬ টি গোল এবং ৭ টি এসিস্ট করেন। এর কিছুদিন পর ২০১৪ আফ্রিকান নেশন কাপে জন্য নাইজেরিয়া জাতীয় দলের সাথে অনুশীলন করেন, তবে শেষ পর্যন্ত স্কোয়াডে সুযোগ পাননি। ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে ২ টি ম্যাচ খেলেন।
২০১৬ অলিম্পিকের জন্য নাইজেরিয়ার ৩৫ সদস্যর প্রাথমিক দলে সুযোগ পান, তবে তা ১৮ তে আনার পর বাদ পড়েন[১১]।
২০১৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সোয়াজিল্যান্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র হওয়া ম্যাচে অভিষেক হয়, তবে তিনি সেই ম্যাচে বদলি হিসেবে নামেন। ২০১৬ সালের ২৫ মার্চে আফ্রিকান নেশন কাপের বাছাইপর্বে মিশরের বিপক্ষে প্রথম একাদশে সুযোগ পান, ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়।[১২]
২০১৬ সালে মালি এবং লুক্সেমবুর্গের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য নাইজেরিয়া জাতীয় দলে ডাক পান। লুক্সেমবুর্গের বিপক্ষে কেলেচি ২ টি গোল এবং একটি এসিস্ট করেন।