কোকা | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
বিভাগ: | Magnoliophyta |
শ্রেণী: | Magnoliopsida |
বর্গ: | Malpighiales |
পরিবার: | Erythroxylaceae |
গণ: | Erythroxylum |
প্রজাতি: | E. coca |
দ্বিপদী নাম | |
Erythroxylum coca Lam. |
কোকা (বৈজ্ঞানিক নাম: Erythroxylum coca, ইংরেজি: Coca) দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পশ্চিমে ইরাইথ্রোজাইল্যাসিয়া পরিবারের উদ্ভিদবিশেষ। আন্দিয়ান সংস্কৃতির অংশ হিসেবে সিয়েরা নেভাদা দ্য সান্তা মার্তার অধিবাসীদের কাছে এ গাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোকা পাতায় উপ-ক্ষার কোকেন রয়েছে যা দিয়ে কোকেন নামীয় অত্যন্ত শক্তিশালী মাদকদ্রব্য তৈরী করা হয়। চার ধরনের চাষযোগ্য কোকা উদ্ভিদ রয়েছে।
গুল্মজাতীয় এ উদ্ভিদটি পেরু, বলিভিয়া এবং কলম্বিয়ায় উৎপাদিত হয়। তন্মধ্যে, বলিভিয়া এবং পেরুর প্রধান অর্থকরী ফসলরূপে কোকা উদ্ভিদ বিবেচিত হয়ে আসছে।[১]
কোকা প্রুনাস স্পিনোসা বা ব্ল্যাকথর্নের ন্যায় ঝোপজাতীয় উদ্ভিদ। এর উচ্চতা ২-৩ মিটার (৭-১০ ফুট) হয়ে থাকে। ডালপালা বা শাখাগুলো সরলাকৃতির এবং পাতাগুলো পাতলা, গোলাকৃতি এবং সামনের দিকে সরু প্রকৃতির। ফুলগুলো ছোট ধরনের। পুষ্পদণ্ডে পাঁচটি হলুদ-সাদার মিশ্রণে ফুলের পাঁপড়ি থাকে। পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় ফুলগুলো লাল রসাল ফলে রূপান্তরিত হয়।
কখনো কখনো কোকার পাতা ইলোরিয়া নয়েসি পতঙ্গের লার্ভার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চাষযোগ্য কোকার দুইটি প্রজাতি রয়েছে। এগুলোর প্রত্যেকটিরই আরো দু'টি করে মোট চারটি উপ-প্রজাতি রয়েছে।
প্রাক-কলম্বিয়া যুগে উপরের চারটি উপ-প্রজাতিই চাষাবাদ করা হতো। লক্ষ্যণীয় যে চারটি উপ-প্রজাতিই একে-অপরের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে যা অন্যান্য প্রজাতির উদ্ভিদে দেখা যায় না।[১]
সুপারকোকা বা লা মিলিয়নারিয়া নামে পরিচিত বলিভিয়ানা নেগ্রা নতুন ধরনের কোকা যার পাতা রাউন্ডআপ কোম্পানীর তৈরী আগাছা উৎপাটনকারী কীটনাশক ঔষধকে প্রতিরোধ করতে পারে। কোকা উদ্ভিদ নেশায় আসক্ত উৎপাদনকারী ও উত্তেজক কোকেইন উপাদানের প্রধান উৎসস্থল। এ উপাদানটি বিশ্বের সর্বত্র অবৈধ মাদকদ্রব্য হিসেবে স্বীকৃত এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধী সংগঠনের বড় আকারের অর্থের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। রাউন্ডআপ প্রধান উপকরণ হিসেবে মাল্টিবিলিয়ন-ডলারের কোকা উৎপাটনের প্রচারণায় প্ল্যান কলম্বিয়ার অধীনে কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক ও সামরিক সমর্থনে কলম্বিয়া সরকারকে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায় সহায়তা করছে।[২]
প্রাচীনকাল থেকেই কোকার পাতা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ভেনেজুয়েলা, পেরু এবং আর্জেন্টিনার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আন্দিয়ান জনগোষ্ঠী এর প্রধান ভোক্তা।
ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে কোকার বীজ ছোট প্লটে বপণ করা হয়। সূর্যের রোদ থেকে রক্ষা করে ৪০-৬০ সে.মি. উচ্চতাকালীন সময়ে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। একটি কোকা গাছ দেড় বছর থেকে শুরু করে চল্লিশ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।