কোটা कोटा (কোটা) | |
---|---|
শহর | |
রাজস্থান, ভারতে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°১১′ উত্তর ৭৫°৫০′ পূর্ব / ২৫.১৮° উত্তর ৭৫.৮৩° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | রাজস্থান |
জেলা | কোটা |
উচ্চতা | ২৭১ মিটার (৮৮৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ৬,৯৫,৮৯৯ |
ভাষা | |
• অফিসিয়াল | হিন্দি |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
কোটা (ইংরেজি: Kota) ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটা জেলার একটি শহর ও পৌরসংস্থা এলাকা।
শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৫°১১′ উত্তর ৭৫°৫০′ পূর্ব / ২৫.১৮° উত্তর ৭৫.৮৩° পূর্ব।[১] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ২৭১ মিটার (৮৮৯ ফুট)।
ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে কোটা শহরের জনসংখ্যা হল ৬৯৫,৮৯৯ জন।[২] এর মধ্যে পুরুষ ৫৩% এবং নারী ৪৭%।
এখানে সাক্ষরতার হার ৭০%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৮% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬২%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে কোটা এর সাক্ষরতার হার বেশি।
এই শহরের জনসংখ্যার ১৩% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।
এই শহরে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারত সরকারের মানব সম্পদ বিভাগের অন্তর্গত রাজ্যের একমাত্র ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থান, কোটা অবস্থিত।
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটার পরিচিতি দেশজুড়ে।
ভারতের রাজস্থানের কোটাকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের ‘শিক্ষার কাশী (পবিত্র শহর)’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। শহরটিকে ভারতের ‘শিক্ষার কাশীধাম’ও বলা হয়। এ শহর কোচিংয়ের কারণে ব্যাপক পরিচিত। কোচিং–বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ১২০ বিলিয়ন রুপি।[৩]
কোটা সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ‘কোচিং ক্যাপিটাল’ বা ‘কোচিংয়ের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। সেখানে বারোটিরও বেশি ইনস্টিটিউট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে অত্যন্ত কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেন।
প্রতিবছর তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী সেখানে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এ শহরে দিনে ১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করা সাধারণ ব্যাপার এবং সেখানে পরীক্ষার নম্বরই যেন সবকিছু। এখান থেকেই কেউ কেউ ভারতের পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসক ও প্রকৌশলী হয়ে উঠবেন। এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর বয়স ১৭ থেকে ২০–এর মধ্যে। পাঠ্যক্রমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তাঁরা সপ্তাহে ৭ দিনই প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তাঁরা ছয় ঘণ্টার ক্লাসে অংশ নেওয়ার আগে ভোর চারটায় পড়া শুরু করে। প্রতি ব্যাচে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী থাকেন। তাঁদের প্রতি দুই সপ্তাহে একটি করে পরীক্ষা দিতে হয়। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী সর্বজনীনভাবে র্যাঙ্ক করা হয়।
২০২৩ সালে মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার আসনের বিপরীতে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা জাতীয় যোগ্যতা ও প্রবেশিকা পরীক্ষা (স্নাতক-পূর্ব) বা NEET (National Eligibility cum Entrance Test) এ অংশ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান বা IIT (Indian Institutes of Technology) নামে পরিচিত শীর্ষ প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০ হাজার আসনে ভর্তি হওয়ার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (মেইনস) বা JEE-Mains পরীক্ষা দিয়েছিলেন ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। [৪]
কোটার একটি অন্ধকার দিকও আছে। কোটায় কোচিংয়ের সংস্কৃতি এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক, পারিবারিক ও সামাজিক চাপ তাঁদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এ জন্য ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত (অক্টোবর) নগরীর কোচিং স্কুলে অধ্যয়নরত ২৭ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। শিক্ষার্থীরা এখানে এতো বেশি মানসিক চাপে থাকে যে, অ্যালেনের মতো বড় বড় কোচিং স্কুল তাদের ক্যাম্পাসে ৫০ জনের বেশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শদাতা ছাড়াও ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু রাখেন। [৫]
কোটার কোচিং স্কুলগুলোর বছরের ফি প্রায় দেড় লাখ রুপি। এর সঙ্গে খাবার ও থাকার জন্য মাসে প্রায় ৩০ হাজার রুপি খরচ হয়, যা বছরে ৩ লাখ ৬০ হাজার রুপি। আনুমানিক ১ বছরের খরচ চালাতে ভারতীয় টাকা প্রায় ৫.৫ লাখ রুপি খরচ হয় যা বাংলাদেশী টাকাতে এর পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৭ লাখ টাকা। ফলে অনেক অভিভাবককে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়।