এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
ক্নিদিয়সের এউদক্সস (জন্ম আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৫-৩৯০, নিদোস, এশিয়া মাইনর [বর্তমানে তুরস্ক]— আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৩৪২-৩৩৭, নিদোস)[১] একজন গ্রিক জোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ এবং প্লেটোর ছাত্র ছিলেন। তার অনেক কাজই হারিয়ে গেছে। তবুও তার কিছু কাজের হদিস পাওয়া গিয়েছে।
এউদক্সস অর্থ সম্মানিত। লাতিন শব্দ বেনেদিক্তুস থেকে শব্দটি এসেছে। তার বাবা একজন স্টেটসম্যান ছিলেন। তিনি আকাশ দেখতে ভালোবাসতেন। সেখান থেকেই Eudoxus এর শুরু। শিক্ষার জন্যে তিনি Archytas এর সাথে ট্যারেনটামে পড়তে চলে গেলেন। তার কাছেই তিনি গণিতের শিক্ষা লাভ করেন। ইটালিতে থাকা অবস্থায় তিনি সিসিলিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ফিলিস্টনের কাছে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে শেখেন। তার ২৩ বছর বয়সে তিনি চিকিৎসক Theomedon এবং সিক্রেটসের অনুসারীদের সাথে এথেন্সে যান। তিনি প্লেটো ও অন্যান্য দার্শনিকদের সান্যিধ্যে সেখানে শিক্ষালাভ করেন। কিন্তু মতামতের অমিল হওয়ায় তাকে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। Edoxus অত্যন্ত দরিদ্র ছিলেন। কোনোরকম একটা থাকার ব্যবস্থা করে থাকছিলেন। তিনি প্রতিদিন ১১কিমি হেটে প্লেটোর কাছে পাঠ নিতে যেতেন। গণিত ও জোতির্বিজ্ঞানে তার প্রতিভা দেখে তার বন্ধুরা টাকা তুলে তাকে মিশরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সেখানে ১৬ মাস থাকার পরে তিনি Cyzicus ও Mausolus ভ্রমণ করলেন এবং নিজের অনেক শিষ্য যোগাড় করেন।
এরপর তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে আথেন্সে ফিরে আসেন এবং এক পর্যায়ে তার গ্রামেই ফিরে যান। সেখানে তিনি গবেষণাগার বানান এবং আগের মতোই লেখালেখি ও ধর্ম, জোতির্বিজ্ঞান ও আবহবিদ্যায় শিক্ষাদান চালিয়ে গেলেন। তার একটি ছেলে Aristagoras এবং Actis, Philtis and Delphis নামক তিন কন্যা ছিল।
তিনি বিশ্বাস করতেন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে গোলকাকৃতির গ্রহ নক্ষত্র ও অন্যসব কিছু আবর্তন করে এবং গ্রহ নক্ষত্রের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দেয়ায় তিনি বিখ্যাত। অনুপাতের উপর তার কাজ প্রায় একযুগ ধরে পরিমাণবাচক গণিতশাস্ত্রের ভিত্তি ছিল। পরবর্তীতে Richard Dedekind প্রবর্তন করেন। চাঁদ এবং মঙ্গলের গর্তগুলোকে তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়। একটি বীজগাণিতিক বক্র Kampyle of Eudoxus তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়।
এউদক্সসকে আর্কিমিদিসের পর তৎকালীন সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদ বলা হয়। তিনি method of exhaustion আবিষ্কার করেন যা পরবর্তীকালে সমাকলনবিদ্যার ভিত গড়ে দেয়। এ পদ্ধতি ব্যবহার কিরে তিনি বৃত্তের ক্ষেত্রফল যে তার ব্যাসার্ধের বর্গমূলের আনুপাতিক হয় এবং এর আয়তন তার ব্যাসার্ধের ঘনমূলের আনুপাতিক হয় তা প্রমাণ করেন। তিনি গাণিতিক সমানুতা ব্যবহার করে রেখা, কোণ, ক্ষেত্রফল প্রভৃতির সংজ্ঞা প্রদান করেন। এটা করার সময় তিনি পিথাগোরাসের সময় থেকে প্রচলিত পাটিগণিত ও সংখ্যার বদলে জ্যামিতির ব্যবহারের প্রচলন করেন। তিনি অনুপাতের সূত্র প্রদান করে জ্যামিতির ধারণা বদলে দেন।
লক্ষ বছরের বিবর্তন মানবমস্তিষ্ককে এমনভাবে গড়েছে যে যেকোনো কিছুতে একটা বিন্যাস সে খুঁজে নেয়, যাতে মনে রাখতে বা নজর কাড়তে সুবিধে হয়। এভাবেই প্রাচীন মানুষের হাতে নক্ষত্রমণ্ডলীর বিভিন্ন আকৃতির সৃষ্টি। যা হোক, বর্তমানে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ মিলিয়ে রাতের আকাশে মোট ৮৮টি নক্ষত্রমণ্ডলীকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিকাল ইউনিয়ন (www.iau.org) স্বীকৃতি দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ওই ৮৮টির মধ্যে ৪৮টিরই নিখুঁত বিবরণ আছে ক্লডিয়াস টলেমির (৯০-১৬৮ খ্রিষ্টাব্দ) বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আলমাজেস্ট’-এ। খ্রিষ্টীয় ১৫০ অব্দের কাছাকাছি সময়ে লিখিত এই মহাগ্রন্থে সেকালের এবং তার আগের অনেক পুরনো জ্ঞান ও চর্চাকে টলেমি লিপিবদ্ধ করে রেখে গেছেন। এ জন্য ‘আলমাজেস্ট’ জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসের খুব দরকারি একটি বই। এটা আরেকটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ – রাতের আকাশে গ্রহদের বিচরণ ও চন্দ্র-সূর্যের গতির ব্যাখ্যায় পৃথিবীকেন্দ্রিক মডেলের সুন্দর গাণিতিক বর্ণনা টলেমি এই গ্রন্থেই লিখেছিলেন। এই ভূ-কেন্দ্রিক মতবাদ পরবর্তী ১৫০০ বছর পৃথিবীর মানুষকে মোটামুটি গোঁড়া ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রেখেছিল।
এই আলমাজেস্টে ৪৮টি তারকামণ্ডলীর বর্ণনা পাওয়ায় বিজ্ঞানীরা ভাবলেন, তাহলে বোধহয় প্রাচীন গ্রিসেই এগুলির কল্পনা শুরু হয়। কাজেই যদি কেউ বলে প্রাচীন তিব্বতে বা অমুক প্রাচীন সভ্যতার মানুষেরা তারকামণ্ডলীর ধারণা দিয়েছিল, তাহলে অন্তত এটুকু বলা যাবে যে টলেমির বইয়ে ৪৮টি তারকামণ্ডলীর হদিস পাওয়া যায় এবং প্রাচীন গ্রিসের মানুষেরা ওইসব তারকামণ্ডলীর অবস্থান, ছবি এবং কোন ঋতুতে কোনটি আকাশের কোথায় থাকে তা মোটামুটি জানত। কাহিনি অবশ্য এখানেই শেষ নয়। টলেমিরও আগে প্রাচীন গ্রিসে এক মহাজ্ঞানী জ্যোতির্বিজ্ঞানী বাস করতেন। তার নাম হিপার্কাস (খ্রিষ্টপূর্ব ১৯০-১২০); কথিত আছে, হিপার্কাসের হাতে তৈরি একটি স্টার ক্যাটালগ ছিল, কিন্তু এখন তা হারিয়ে গেছে। হিপার্কাসই প্রথম আকাশের নক্ষত্রদের যে উজ্জ্বলতায় দেখা যায় তার প্রেক্ষিতে উজ্জ্বলতার শ্রেণিবিভাগ করেছিলেন। এখন যেমন আমরা বলি ‘ফার্স্ট ম্যাগনিচিউড স্টার’ বা তৃতীয় শ্রেণির উজ্জ্বল নক্ষত্র – এই শ্রেণিবিভাগটি হিপার্কাসের করা। তাছাড়া হিপার্কাস পৃথিবীর অয়নচলনও আবিষ্কার করেছিলেন। এই হিপার্কাসের হাতে সে সময়ে একটি কবিতার বই এসে পড়ে। এখনকার বিজ্ঞানীদের মতো নন তখনকার বিজ্ঞানীরা – তাদের হাতে অঢেল সময় ছিল কবিতা ও ইতিহাস বিষয়ে চর্চা করার। ওই কবিতার বইয়ে হিপার্কাস তারকামণ্ডলীর চমৎকার মনোহারি কাব্যিক বর্ণনা খুঁজে পেলেন। মোহিত করা মাধুর্য ভাষায় সেখানে লেখা ছিল কোন তারা কখন ওঠে, তখন অন্য কোন তারা অস্ত যায়, গ্রীষ্মের শুরুতে কোন তারা দেখা যায়, কোন তারা কোনদিকে থাকলে সমুদ্রে ঝড়ের সম্ভাবনা, কিংবা কোন তারা কীভাবে দেখে দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায় ইত্যাদি।
এই কবিতা পড়ে বুঝতে পারলেন যে একটা কিছু গোলমাল আছে। ওই কবিতায় যখন যেখানে নক্ষত্রের উদয় হওয়ার কথা, তখন সেখানে উদয় বা অস্ত হয় না। হিপার্কাস বুঝলেন যে, ওই কবিতায় যে রাতের আকাশের কথা বলা হয়েছে সে আকাশ হিপার্কাসের সময়ের আকাশ নয়। হিপার্কাসের সামনে দুটো সম্ভাবনা ছিল – এই কবিতার বইটাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কল্পনা বলে ধরে নেয়া, কিংবা বুঝে নেওয়া যে কবি যে আকাশ দেখছেন সেটা অনেক অনেক কাল আগের আকাশ। এখন ওই কবিতার লেখক ছিলেন আরাতুস (খ্রিষ্টপূর্ব ৩১৫-২৫০); কবি আরাতুস আবার রাজার আদেশে আরেকটি বই দেখে এই কবিতা গ্রন্থটি লিখেছিলেন। সেই প্রাচীন বইটির কোনো হদিস নেই, কিন্তু আরাতুস ওই বইয়ের লেখকের নাম জানিয়েছেন ইউডক্সাস। ইতিহাসবিদেরা জানিয়েছেন ইউডক্সাস নামে পুরাকালে সত্যিই এক জ্যোতির্বিদ ছিলেন, যার সময়কাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০-৩৫০; ইউডক্সাস প্রাচীন মিশর ভ্রমণ করে অনেক জ্ঞান লাভ করেন। এই লব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে তিনি একটি তারার তালিকা বানিয়ে থাকতে পারেন। খুব সম্ভবত তিনি একটি ‘আকাশ-গোলক’ (সেলেশিয়াল স্ফিয়ার) বানিয়েছিলেন, যেখানে রাতের আকাশের একটি ম্যাপ ছিল। এমনটি ভাবার কারণ হল, কিংবদন্তিতে ‘ইউডক্সাসের স্ফিয়ার’ বলে একটা কথা প্রচলিত আছে।
এউদক্সস তাতে যে বিষয়গুলো দেখিয়ে গিয়েছিলেন তার মধ্যে ছিলো :
আরিস্তোতলের মেটাফিসিক্স XII, 8-এর উপর একটি সাধারণ ধারণা হতে পারে, অ্যারিস্টটলের আরেকটি কাজ দে সেলোতে সিিলিকিয়া (6 ষ্ঠ শতাব্দী) এর সিম্পলিকিয়াসের একটি ভাষ্য। Simplicius দ্বারা রিপোর্ট একটি গল্প অনুযায়ী, প্লেটো গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য একটি প্রশ্ন উত্থাপিত: "অভিন্ন এবং সুশৃঙ্খল গতি অনুমান দ্বারা গ্রহের আপাত গতির জন্য হিসাব করা হতে পারে কি ?"। প্লেটোর প্রস্তাব করেন যে, নক্ষত্রে কেন্দ্রীভূত একক বৃত্তাকার গতির সংমিশ্রণগুলির দ্বারা গ্রহটির গতিগুলি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
এউদক্সসের প্রতিমানের বেশিরভাগ আধুনিক পুনর্নির্মাণে, চাদের তিনটি ক্ষেত্রে নিয়োগ করা হয়:
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাইরের প্রান্তে পশ্চিমাঞ্চলে ঘুরছে এবং ক্রমবর্ধমান এবং সেটিং ব্যাখ্যা করছে।
দ্বিতীয় রাউন্ডের মধ্য দিয়ে চাঁদের মাসিক গতির ব্যাখ্যা করে, এক মাসের মধ্যে একবার পূর্ব দিকে ঘুরে যায়।
তৃতীয় এক মাসে তার বিপ্লব সম্পন্ন করে, তবে তার অক্ষটি সামান্য ভিন্ন কোণে উল্টিয়ে যায়, অক্ষাংশে গতি (মহাকর্ষ থেকে বিচ্যুতি) এবং চন্দ্র নোডের গতির ব্যাখ্যা প্রদান করে।
সূর্যকেও তিনটি গোলকটি দেওয়া হয়। দ্বিতীয়টি মাসের পরিবর্তে একটি বছরের মধ্যে তার গতি সম্পন্ন। তৃতীয় গোলাকার অন্তর্ভুক্তিটি বোঝায় যে Eudoxus ভুল করে বিশ্বাস করেন যে সূর্য অক্ষাংশে গতি ছিল।
পাঁচটি দৃশ্যমান গ্রহ (শুক্র, বুধ, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি) প্রত্যেকটি চারটি স্থান বরাদ্দ করা হয়:
বাইরেরতমতম দৈনিক গতির ব্যাখ্যা দেয়।
দ্বিতীয় রাশিচক্র মাধ্যমে গ্রহের গতি ব্যাখ্যা।
তৃতীয় এবং চতুর্থ একসাথে ক্রমবর্ধমান অনুমান, যখন একটি গ্রহ ধীরে ধীরে প্রদর্শিত হয়, তারপর সামান্য পরিমাণে রাশিচক্রের মাধ্যমে তার গতি বিপরীত। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে দুটি গোলাকার অক্ষ বরাবর সন্নিবেশিত করে এবং বিপরীত দিকের দিক দিয়ে তাদের ঘূর্ণন করে, কিন্তু সমান সময়সীমার সাথে, Eudoxus এর ভিতরের গোলকে একটি বিন্দু আটটি আকৃতি তৈরি করতে পারে।
Aristotle এর The Nicomachean Ethicsএ এউদক্সস উল্লিখিত দর্শনের নজির পাওয়া যায়। এউদক্সসের মতে
Evans, James (1998). The History and Practice of Ancient Astronomy. Oxford University Press. ISBN 0-19-509539-1. OCLC 185509676. Huxley, GL (1980). Eudoxus of Cnidus p. 465-7 in: the Dictionary of Scientific Biography, volume 4. Wikisource-logo.svg Laërtius, Diogenes (1925). "Pythagoreans: Eudoxus". Lives of the Eminent Philosophers. 2:8. Translated by Hicks, Robert Drew (Two volume ed.). Loeb Classical Library. Lloyd, GER (1970). Early Greek Science: Thales to Aristotle. W.W. Norton
De Santillana, G. (1968). "Eudoxus and Plato: A Study in Chronology". Reflections on Men and Ideas. Cambridge, MA: MIT Press. Huxley, G. L. (1963). "Eudoxian Topics". Greek, Roman, and Byzantine Studies. 4: 83–96. Knorr, Wilbur Richard (1986). The Ancient tradition of geometric problems. Boston: Birkhäuser. ISBN 0-8176-3148-8. Knorr, Wilbur Richard (1978). "Archimedes and the Pre-Euclidean Proportion Theory". Archives Internationales d'histoire des Sciences. 28: 183–244. Neugebauer, O. (1975). A history of ancient mathematical astronomy. Berlin: Springer-Verlag. ISBN 0-387-06995-X. Van der Waerden, B. L. (1988). Science Awakening (5th ed.). Leiden: Noordhoff. Lasserre, François (1966) Die Fragmente des Eudoxos von Knidos (de Gruyter: Berlin) Manitius, C. (1894) Hipparchi in Arati et Eudoxi Phaenomena Commentariorum Libri Tres (Teubner)