ক্যাথরিন ফ্লন, ছিলেন একজন হাইতীয় মেয়ে-গর্জি, দেশপ্রেমিক ও জাতীয় নায়িকা। তিনি হাইতীয় বিপ্লব ও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম মুখ হিসেবে পরিচিত। তিনিই প্রথম হাইতীয় পতাকা সেলাই করেন ও বিপ্লবে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ক্যাথরিন ফ্লন সেন্ট-ডোমিং এর আর্কাহিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা-মাতা ফ্রান্স থেকে টেক্সটাইল-এর ব্যবসা করতেন। সময়ের সাথে সাথে নিজস্ব কর্মশালায় তিনি একজন মেয়ে-দর্জি হয়ে ওঠেন। এক সময় তিনি কিছু শিক্ষার্থীদের এই কাপড় বোনার শিক্ষাও দিতেন। তিনি ছিলেন জিন-জ্যাক ডেসালাইনসের ধর্মকন্যা।
হাইতীয় বিপ্লবী অনুসারে, ফ্লোন আর্কাইয়ের কংগ্রেসের শেষ দিন, ১৮০৩ সালের ১৮ মে দেশের প্রথম পতাকা তৈরি করেছিল। বিপ্লবের নেতা জিন-জ্যাক ডেসালাইনস, ফ্লনের ধর্মপিতা, ফ্রান্সের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাই সেখানে তিনি একটি ফরাসি পতাকা কেটে ফেলেন। তিনি পতাকার কেটে ফেলা টুকরোগুলি ফ্লোনকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সেই কেটে ফেলা পতাকার থেকেই ফ্লন তৈরি করেছিলেন হাইতীয় বিপ্লবের পতাকা। নতুন পতাকাতে সাদা, নীল ও লাল রঙের স্থান দেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে নীল ও লাল রঙ হাইতির কালো এবং মুলাত্তো নাগরিকদের মধ্যে মিলন ঘটাতে সাহায্য করেছিল। [১]
ঐতিহাসিকরা পতাকা তৈরির এই কিংবদন্তি ইতিহাসের মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বিপ্লবের প্রাথমিক উৎসগুলি থেকে জানা যায় যে, বিদ্রোহীরা আরকাইয়ে সম্মেলনের আগে নীল-লাল পতাকা ব্যবহার করেছিল। [২]
ক্যাসিল ফাতিমান এবং ড্যাডি বাজিলের পাশাপাশি ক্যাথেরিন ফ্লনকে হাইতীয় স্বাধীনতার তিনটি মুখ্য নায়িকাদের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ক্যাথরিন ফ্লনের জন্মভূমি আর্কাহিকে বর্তমানে "পতাকা নগর" হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং ১৮ই মে তারিখে তিনি প্রথম পতাকা তৈরি করেছিলেন বলে ওই দিনটি জাতীয় ছুটিতে পরিণত হয়েছে। বিপ্লবের প্রতীক হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি ফ্লোন হাইতীয় মহিলাদের মধ্যেও প্রশংসার চিত্র হয়ে উঠেন। সামাজিক অনুষ্ঠান এবং মহিলা নেতৃত্বাধীন নেতাকর্মী আন্দোলনগুলির নামকরণ করা হয়েছে বিপ্লবী নায়কের নাম অনুসারে। উৎসব এবং জাতীয় ছুটির দিনগুলিতে যুবতীরা ফ্লোন এবং অন্যান্য মহিলা বিপ্লবীদের মতো পোশাক পরেন, বিপ্লব এবং পুরো হাইতীয় ইতিহাসে নারীর ভূমিকার দিকগুলিকে তুলে ধরেন। [৩]
২০০০ সালে প্রকাশিত ১০-গুর্ডিস হাইতীয় নোটে ক্যাথরিন ফ্লনের ছবিটি তুলে ধরা হয়েছিল।