ক্রীড়া | ক্রিকেট |
---|---|
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯২৩ |
অবস্থান | ক্লোনটার্ফ, ডাবলিন মালাহাইড, ডাবলিন |
সভাপতি | ড. মারে পাওয়ার |
চেয়ারম্যান | রস ম্যাককুলাম |
মুখ্য নির্বাহী | ওয়ারেন ডিউট্রম |
প্রশিক্ষক | জন ব্রেসওয়েল |
পৃষ্ঠপোষক | টার্কিস এয়ারলাইন্স, টয়োটা, শাপুরজী পাল্লোনজী, ফ্লো গ্যাস, ও’নীলস[১] |
স্থলাভিষিক্ত | পূর্বতন আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন |
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট | |
www |
ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড (ইংরেজি: Cricket Ireland) আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট খেলা পরিচালনায় নিযুক্ত সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থা। আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংস্থাটি আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন নামে পরিচিত। সংস্থাটি আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল ও আয়ারল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও, আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রিমিয়ার ক্লাব ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আইরিশ সিনিয়র কাপ আয়োজন করে থাকে। জুন, ২০১৭ সালে আইসিসি কর্তৃক অত্র সংস্থাটি টেস্ট মর্যাদা লাভের সুবাদে পূর্ণাঙ্গ সদস্যের মর্যাদা পায়। [২]
১৮৯০ সালে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন সংস্থাটির একমাত্র কাজ ছিল আইরিশ আন্তর্জাতিক দলের জন্য খেলোয়াড় মনোনীত করা।[৩] ১৯২৩ সালে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। লিনস্টার ক্রিকেট ইউনিয়ন, মুনস্টার ক্রিকেট ইউনিয়ন, নর্দার্ন ক্রিকেট ইউনিয়ন, কনাক্ট ক্রিকেট ইউনিয়ন ও নর্থ ওয়েস্ট ক্রিকেট ইউনিয়ন - এ পাঁচটি প্রাদেশিক ইউনিয়ন নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়।[৪] শুরুতেই কঠোরভাবে এর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা হয় ও ১৯৩৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়।[৫]
৬ জুলাই, ১৯৯৩ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী সদস্যের মর্যাদা লাভে সক্ষম হয় আয়ারল্যান্ড।
আয়ারল্যান্ডের অন্যান্য ক্রীড়া পরিচালনা পরিষদের ন্যায় অত্র ইউনিয়ন আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে আয়ারল্যান্ডের সকল দলকে নিয়ন্ত্রিত করছে। রাগবি ইউনিয়ন ও ফিল্ড হকি সংস্থায় আইরিশ ট্রাইকালার ব্যবহৃত হলেও এক্ষেত্রে সংস্থাটি ব্যতিক্রম। এর পরিবর্তে সংস্থাটি নিজস্ব পতাকা ব্যবহার করে থাকে।[৬][৭]
২০০৭ সালের আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগের প্রথম বিভাগে আয়ারল্যান্ড দল অংশ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী সদস্য হিসেবে দলটি একদিনের আন্তর্জাতিক ও টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের মর্যাদা লাভ করে।
অদ্যাবধি আয়ারল্যান্ডের সেরা সাফল্য হিসেবে রয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ৩ উইকেট বিজয় লাভ। ২ মার্চ, ২০১১ তারিখে ব্যাঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের ঐ খেলায় কেভিন ও’ব্রায়ান বিশ্বকাপের ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছিলেন।[৮] খেলায় ৩২৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা সাফল্যের সাথে টপকিয়ে বিশ্বকাপ রেকর্ড স্থাপন করে আয়ারল্যান্ড দল। ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের খেলায় তিন উইকেটে জয় তুলে নিয়েছিল দলটি।[৯] তবে, পাকিস্তানের কোচ বব উলমারের আকস্মিক মৃত্যুতে তাদের সাফল্য ঢাকা পড়ে যায়।
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ তারিখে সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় ও লিমিটেড কোম্পানীতে পরিণত করা হয়। [১০]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিষ্ময়কর ফলাফলের প্রেক্ষিতে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বরাবর পূর্ণাঙ্গ সদস্যের জন্য আবেদন করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ২০০৮ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব ও ২০০৯ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শিরোপা জয় করে। এছাড়াও, ২০০৯ সালে বিশ্ব টুয়েন্টি২০ ও ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আয়ারল্যান্ড দল।
পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ লাভ করলে আয়ারল্যান্ড স্থায়ীভাবে একদিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্ট মর্যাদা লাভে সক্ষম হবে।[১১]
আগস্ট, ২০১১ সালে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা আয়োজনের অবকাঠামোর জন্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরফলে দেশটি টেস্ট মর্যাদা লাভে আরও এক ধাঁপ এগিয়ে যায়।[১২]
২০১২ সালে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড ঘোষণা করে যে, পুরুষ দলের ক্রমাগত সাফল্য লাভের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের মধ্যে টেস্ট মর্যাদার জন্যে সঠিক নিশানা খুঁজে পেয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আয়ারল্যান্ডে ৫০,০০০ লোককে খেলায় অংশগ্রহণের বিষয়টি যুক্ত করেছে। বিশ্ব ক্রিকেট র্যাঙ্কিংয়ে দলকে অষ্টম স্থানে পৌঁছানো ও ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা এ লক্ষ্যমাত্রার অংশবিশেষ। বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদন নিশ্চিত করা হয়েছে। এরফলে ২০১৫ সাল থেকে কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ও পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে টেস্ট মর্যাদা লাভের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ রেকর্ডসংখ্যক ২০১২ সালে তিনটি বিষয়শ্রেণীতে ২৩জন পেশাদার খেলোয়াড়ের সাথে চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। উন্নয়ন কর্মকর্তা ফিল সিমন্স বলেছেন, এর মাধ্যমে তাদের অগ্রসরতা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আয়ারল্যান্ডের কোচ ফিল সিমন্স তার চুক্তিনামা আরও দুই বছর বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে। এরফলে তিনি পরবর্তী বছরে আয়ারল্যান্ডের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলা পর্যন্ত থাকবেন।
প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ হিসেবে আঞ্চলিক একাডেমি স্থাপনের মাধ্যমে ৫০,০০০ সদস্যকে যুক্ত করে সদস্য সংগ্রহ স্ফীত করা হবে। ‘গেট ইনটু ক্রিকেট’ প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় থেকে ১২ বছর বয়সীদেরকে ক্লাব ও স্কুল পর্যায়ের ক্রিকেটে আকর্ষণের বিষয়টি দেখাশোনা করা হবে। বৃহত্তর ক্লাবগুলো অন্যান্য ক্লাবগুলোকে তাদের সুযোগ-সুবিধার উত্তরণের দিকটিতে নজর দিবে। ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড খেলোয়াড় থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবীদেরকে জাতীয় পুরস্কারের মাধ্যমে মূল্যায়িত করবে। এ বিষয়ে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের সিইও ওয়ারেন ডিউট্রম মন্তব্য করেন যে, তৃণমূল পর্যায় থেকে মাঠে আনার মাধ্যমে প্রকৃত পার্থক্য গড়ে তোলার দিকটিই আমাদের অঙ্গীকার। গত চার বছরে আন্তর্জাতিক দলের বিষয়ে যেভাবে নজর দিয়েছি ঠিক সেভাবেই ঘরোয়া খেলার দিকে নজর দেবো।[১৩] আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার বৃদ্ধিতে আরেকটি বিষয় হচ্ছে রেকর্ডসংখ্যক ২৩জন জাতীয় খেলোয়াড়কে ২০১২ মৌসুমে চুক্তিনামায় নিয়ে আসা। এতে শুধুমাত্র জ্যেষ্ঠ ও নিয়মিত খেলোয়াড়ই নয়; বরং নির্জীব খেলোয়াড়ও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ চুক্তিনামাটি প্রথমবারের মতো ‘ক’, ‘খ’ ও নির্জীব খেলোয়াড়দের জন্য ‘গ’ শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে।[১৪]
জুন, ২০১৭ সালে আইসিসি আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানকে একযোগে পূর্ণাঙ্গ সদস্যের মর্যাদাদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করে। এরফলে তারা টেস্ট খেলার মর্যাদার অধিকারী হয়।[২]
আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড আগামী চার বছরে তৃণমূল পর্যায়ে প্রসার ঘটিয়ে নিয়ে যাবার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নতুন পরিকল্পনা গ্রহণে ঘরোয়া খেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে উত্তরণ ঘটিয়ে এ দ্বীপে খেলাটিকে আরও শক্তিশালী করা ও ২০১৫ সালের মধ্যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করা।
প্রসারণকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে -