ক্রিস্পার (ইংরেজি CRISPR), যা "ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পার্সড শর্ট প্যালিনড্রোমিক রিপিট্স" (Clustered regularly interspaced short palindromic repeats) নামক ইংরেজি পদবন্ধটির সংক্ষিপ্ত রূপ, কিছু আদিকেন্দ্রিক জীব যেমন ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়ার বংশাণুসমগ্রে (জিনোমে) প্রাপ্ত কিছু ডিএনএ অনুক্রমের একটি পরিবার।[১] আদিকেন্দ্রিক জীবটিকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াভক্ষক ভাইরাস সংক্রমিত করার ফলে যে ডিএনএ খণ্ডাংশগুলি পাওয়া যায়, তাদের থেকে এই ডিএনএ অনুক্রমগুলি বের করা যায়। পরবর্তী সংক্রমণগুলিতে সদৃশ ব্যাকটেরিয়াভক্ষকদের থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ শনাক্ত করতে ও ধ্বংস করতে এগুলি ব্যবহার করা যায়। সুতরাং এই ডিএনএ অনুক্রমগুলি আদিকেন্দ্রিক জীবসমূহের (ভক্ষক) ভাইরাসরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।[১]
ক্রিস্পার-ক্যাস ব্যবস্থা একটি আদিকোষকেন্দ্রীয় অনাক্রম্যতন্ত্র যা বহিরাগত বংশাণু উপাদান যেমন প্লাজমিড বা ভক্ষকদের ভেতরে অবস্থিত উপাদানগুলি থেকে ঘাতসহিষ্ণুতা প্রদান করে[৩][৪][৫] এবং এক ধরনের অর্জিত অনাক্রম্যতা প্রদান করে। স্পেসার অনুক্রমকে আশ্রয়দানকারী আরএনএগুলি ক্রিস্পার-সংশ্লিষ্ট ক্যাস প্রোটিনগুলিকে বহিরাগত রোগসৃষ্টিকারী ডিএনএ শনাক্ত করতে এবং এগুলিকে কেটে ফেলতে সাহায্য করে। অন্যান্য আরএনএ-পরিচালিত ক্যাস প্রোটিনগুলি বহিরাগত আরএনএ কর্তন করতে পারে।[৬] এ পর্যন্ত অনুক্রমায়িত ৫০% ব্যাকটেরিয়া বংশাণুসমগ্রতে এবং প্রায় ৫০% আর্কিয়া বংশাণুসমগ্রতে ক্রিস্পার প্রোটিনগুলি পাওয়া গেছে।[৭]
এই ব্যবস্থাগুলিকে ব্যবহার করে ক্রিস্পার বংশাণু সম্পাদনা নামক কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে, যাতে সচরাচর ক্যাস৯ বংশাণুটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।[৮] এই সম্পাদনা প্রক্রিয়াটির বহুবিধ প্রয়োগ রয়েছে, যার মধ্যে মৌলিক জীববৈজ্ঞানিক গবেষণা, জৈবপ্রযুক্তি পণ্য উদ্ভাবন এবং রোগসমূহের চিকিৎসা অন্যতম।[৯][১০] ক্রিস্পার-ক্যাস৯ বংশাণুসমগ্র সম্পাদনা কৌশলটি উদ্ভাবনের জন্য ২০২০ সালে এমানুয়েল শারপঁতিয়ে ও জেনিফার ডাউডনা-কে রসায়নে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।[১১][১২]
↑Zhang F, Wen Y, Guo X (২০১৪)। "CRISPR/Cas9 for genome editing: progress, implications and challenges"। Human Molecular Genetics। 23 (R1): R40–6। ডিওআই:10.1093/hmg/ddu125। পিএমআইডি24651067।