ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাস ৭ম শতাব্দীতে দুই ডিউক শাসিত অঞ্চল, তথা ক্রোয়েশিয়ার ডিউক শাসিত অঞ্চল ও প্যানোনিয়ান ক্রোয়েশিয়ার ডিউক শাসিত অঞ্চল,[১] যা ক্রোয়েশিয়া রাজ্যে একত্রীত হয় ও বর্তমান স্বাধীন ক্রোয়েশিয়ার ঘটনাবলি বিবৃত করে। একত্রীত ক্রোয়েশিয়া রাজ্যর ব্যপ্তি ছিল ৯২৫ থেকে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ১শ শতাব্দী থেকে ক্রোয়েশিয়া রাজ্য হাঙ্গেরি রাজ্যের সাথে ব্যক্তিগত সংঘ গড়ে তোলে। এটি বান ও সাবোরের অধীনের ভিন্ন রাজ্য ছিল, কিন্তু হাঙ্গেরি, নাপোলি ও হাবসবুর্গ-সহ পার্শ্ববর্তী শক্তিশালী দেশ থেকে অভিজাত রাজবংশগুলোকে নির্বাচিত করত।
৯ম শতাব্দী থেকে ক্রোয়েশিয়ান সীমান্ত
১৫শ থেকে ১৭শ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্যে দেশটি তিক্ত সংকটে জর্জরিত ছিল। বিংশ শতাব্দীর দীর্ঘ সময় যুগোস্লাভিয়ার সাথে যুক্ত থাকার পর ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।
বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া হিসেবে পরিচিত এলাকাটিতে প্রাগৈতিহাসিক যুগেও জনবসতি ছিল। উত্তর ক্রোয়েশিয়ার ক্রাপিনা এলাকা থেকে মধ্য পুরা প্রস্তর যুগেরনিয়ানডার্থালদের ফসিল উদ্ধার করা হয়।[২] দেশটির সমগ্র অঞ্চলে নব্য প্রস্তর যুগ ও তাম্র যুগের সংস্কৃতির কিছু অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়।[৩] উত্তর ক্রোয়েশিয়ার নদী উপত্যকায় অধিকাংশ প্রাচীন নির্দশন পাওয়া যায় এবং আবিষ্কৃত উল্লেখযোগ্য সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে স্ত্রারচেভো, ভুচেদোল, ও বাদেন সংস্কৃতি।[৪][৫] ইলিরীয় হলস্টাট সংস্কৃতি ও কেল্টীয় লা তেনে সংস্কৃতি লৌহ যুগের চিহ্ন বহন করে।[৬]
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ২২০-এর দশকের ইলিরীয় যুদ্ধ পর্যন্ত দালমাতিয়া ইলিরীয় রাজ্যের উত্তর অংশ ছিল[৭] এবং খ্রিষ্টপূর্ব ১৬৮ অব্দে রোমান প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে নেরেৎভা নদীর দক্ষিণে এটি আশ্রিত রাজ্য হিসেবে যুক্ত হয়। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩২-২৭ অব্দে ইলিরিকাম প্রদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে নেরেৎভা নদীর উত্তরের এলাকা রোমানদের দখলে চলে আসে।
দালমাতিয়া অঞ্চল রোমান ইলিরিকাম প্রদেশের অংশ হয়ে ওঠে। ৬ থেকে ৯ খ্রিষ্টাব্দে দালমাতীয়রা প্যানোনীয়দের সাথে মিলে কয়েকটি বিদ্রোহ করে, কিন্তু তা ব্যর্থ হয় এবং ১০ খ্রিষ্টাব্দে ইলিরিকাম প্যানোনিয়া ও দালমাতিয়া প্রদেশে বিভক্ত হয়ে যায়। দালমাতিয়া প্রদেশে দিনারিক আল্পসের সমভূমি ও পূর্ব আদ্রিয়াতিক উপকূল অন্তর্গত ছিল। দালমাতিয়ায় রোমান সম্রাট দোক্লেতিয়ান জন্মগ্রহণ করেন, যিনি ৩০০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট পদ থেকে অব্যহতি নেওয়ার পর সালোনায় একটি বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করেন। এই প্রাসাদটিকে কেন্দ্র করে পরবর্তী কালে শহরটি গড়ে উঠে।[৮][৯]
১০ম শতাব্দীর বাইজেন্টিনীয় সম্রাট সপ্তম কনস্তান্তিনের দে আদমিনিস্ত্রান্দো ইমপেরিও অনুসারে ক্রোটরা সপ্তম শতাব্দীর শুরুতে দক্ষিণ পোল্যান্ড ও ক্রাকফের দক্ষিণাংশ থেকে বর্তমান ক্রোয়েশিয়ায় আসে। তবে এই দাবীটি অমীমাংসিত এবং অন্যান্য অনুসিদ্ধান্ত অনুসারে এই ঘটনা ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শতাব্দীর মধ্যে সংগঠিত হয়েছিল।[১০] ৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে আইনহার্ডের সময়পঞ্জি অনুসারে ইতোমধ্যে প্যানোনিয়া ও দালমাতিয়া ডিউকশাসিত এলাকা গঠিত হয়, যা যথাক্রমে লিউদেভিত ও বর্না শাসন করে। এই নথিতেই তৎকালীন ফ্রাঙ্কিয়ার বিশাল রাজ্য হিসেবে ক্রোয়েশীয় এলাকার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়।[১১]
তোমিস্লাভ ক্রোয়েশিয়ার প্রথম শাসক ছিলেন যাকে পোপ দশম জন রাজা হিসেবে সম্বোধন করে চিঠি লিখেন। এর সময়কাল ছিল ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দ। তোমিস্লাভ হাঙ্গেরীয় ও বুলগেরীয় আক্রমণ প্রতিহত করেন এবং ক্রোয়েশীয় রাজা হিসেবে প্রভাব বিস্তার করেন।[১২]
১১শ শতাব্দীতে চতুর্থ পেতার ক্রেসিমির (১০৫৮-১০৭৪) ও দিমিতার জভোনিমিরের (১০৭৫-১০৮৯) শাসনামলে মধ্যযুগীয় ক্রোয়েশীয় রাজ্য সাফল্যের শিখরে পৌঁছে।[১৩] ১০৯১ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় স্তিয়েপানের মৃত্যুর পর ত্রপিমিরভিচ রাজবংশের সমাপ্তি ঘটে এবং হাঙ্গেরির প্রথম লাদিস্লাউস ক্রোয়েশীয় সিংহাসনে আসীন হন। এর বিরোধিতার ফলে যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১১০২ খ্রিষ্টাব্দে কলমানের অধীনে ক্রোয়েশিয়া ও হাঙ্গেরির মধ্যে ঐক্য গড়ে ওঠে।[১৪]
↑রাও, ডি. বিজয়, "Preface", Armies, Wars and their Food, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, পৃষ্ঠা ix–x, আইএসবিএন978-81-7596-938-4, সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑জ্যাকলিন বালেন (ডিসেম্বর ২০০৫)। "The Kostolac horizon at Vučedol"। Opvscvla Archaeologica Radovi Arheološkog zavoda। University of Zagreb, Faculty of Philosophy, Archaeological Department। ২৯ (১): ২৫–৪০। আইএসএসএন0473-0992। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০।
↑তিহোমিলা তেজা-গ্রেগল (ডিসেম্বর ২০০৩)। "Prilog poznavanju neolitičkih obrednih predmeta u neolitiku sjeverne Hrvatske" [A Contribution to Understanding Neolithic Ritual Objects in the Northern Croatia Neolithic]। Opvscvla Archaeologica Radovi Arheološkog zavoda (Croatian ভাষায়)। University of Zagreb, Faculty of Philosophy, Archaeological Department। ২৭ (১): ৪৩–৪৮। আইএসএসএন0473-0992। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
↑হ্রভোজে পোত্রেবিকা; মার্কো দিজদার (জুলাই ২০০২)। "Prilog poznavanju naseljenosti Vinkovaca i okolice u starijem željeznom dobu" [A Contribution to Understanding Continuous Habitation of Vinkovci and its Surroundings in the Early Iron Age]। Prilozi Instituta za arheologiju u Zagrebu (Croatian ভাষায়)। Institut za arheologiju। 19 (1): ৭৯–১০০। আইএসএসএন1330-0644। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
↑Thomas Kelly Cheyne and John Sutherland, BlackEncyclopaedia Biblica: A Critical Dictionary