ক্লোরিস লিচম্যান | |
---|---|
Cloris Leachman | |
জন্ম | দেস মইন্স, আইওয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৩০ এপ্রিল ১৯২৬
জাতীয়তা | মার্কিন |
শিক্ষা | নাট্যতত্ত্ব |
মাতৃশিক্ষায়তন | ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৪৮-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | জর্জ ইংলান্ড (বি. ১৯৫৩; বিচ্ছেদ. ১৯৭৯) |
সন্তান | ৫ |
আত্মীয় | ক্লেইবর্ন ক্যারি (বোন) অ্যানাবেল ইংলান্ড (নাতনী) |
ক্লোরিস লিচম্যান (ইংরেজি: Cloris Leachman; জন্ম: ৩০শে এপ্রিল ১৯২৬) হলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী ও কৌতুকাভিনেত্রী। সাত দশকের বেশি সময়ের কর্মজীবনে তিনি রেকর্ডসংখ্যক আটটি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার (জুলিয়া লুই-ড্রাইফাসের সাথে যৌথভাবে), একটি ডেটাইম এমি পুরস্কার, একটি একাডেমি পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও একটি বাফটা পুরস্কার অর্জন করেছেন।
১৯৪৬ সালে তিনি মিস শিকাগো হিসেবে ২০তম মিস আমেরিকা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং শীর্ষ ১৬ প্রতিযোগীর মধ্যে ছিলেন। লিচম্যান ১৯৭১ সালে দ্য লাস্ট পিকচার শো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ১৯৭০-এর দশকে সিবিএস চ্যানেলের দ্য ম্যারি টাইলার মুর শো ও এর স্পিন অফ ফিলিস অনুষ্ঠানে ফিলিস লিন্ডস্ট্রম চরিত্রে অভিনয় করেন। ফিলিস ধারাবাহিকে তার কাজের জন্য তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি ইয়ং ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (১৯৭৪) সহ মেল ব্রুক্স পরিচালিত তিনটি চলচ্চিত্র, ১৯৮৬-৮৮ সাল পর্যন্ত এনবিসির দ্য ফ্যাক্টস অব লাইফ ও দ্য বেভারলি হিলবিলিজ (১৯৯৩) এ ডেইজি মে মোজেস চরিত্রে কাজ করেন।
২০০০-এর দশকে লিচম্যান ফক্স চ্যানেলের ম্যালকম ইন দ্য মিডল সিটকমে ইডা ও ২০০৮ সালে বব স্যাগেটের কমেডি সেন্ট্রাল রোস্ট-এ তাকে দেখা যায়। ২০০৮ সালে তিনি এবিসি চ্যানেলের রিয়্যালিটি প্রতিযোগিতা ধারাবাহিক ড্যান্সিং উইথ দ্য স্টারস-এর সপ্তম মৌসুমের একজন প্রতিযোগী ছিলেন এবং তার যুগল ছিলেন কর্কি বালাস। সে সময়ে তিনি ৮২ বছর বয়সী ছিলেন এবং তিনি এই ধারাবাহিকে অংশগ্রহণকারী বয়োজ্যেষ্ঠ প্রতিযোগী ছিলেন।[১] ২০১০ থেকে ২০১৪ সালে তিনি ফক্স চ্যানেলের সিটকম রাইজিং হোপ-এ ম ম চরিত্রে এবং ২০১৭ সাল থেকে তিনি আমেরিকান গডস-এ জোরইয়া ভেচেরনায়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
লিচম্যান আইওয়ার ডেস মোইনেসে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ক্লোরিস (ওয়ালেস; ১৯০১-১৯৬৭) এবং পিতা বার্কলি ক্লেইবর্ন "বাক" লিচম্যান (১৯০৩-১৯৫৬)। বাক তার পারিবারিক লিচম্যান লাম্বার কোম্পানিতে কাজ করতেন।[২] ক্লোরিস তার পিতামাতার তিন কন্যার মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ। তার মেজো বোন ক্লেইবর্ন ক্যারি (১৯৩২-২০১০) একজন অভিনেত্রী ও গায়িকা ছিলেন[৩] এবং ছোট বোন ম্যারি। তার মাতামহী ছিলেন বোহিমিয়ান (চেক) বংশোদ্ভূত।[৪]
কৈশোরে লিচম্যান সপ্তাহান্তে ডেস মোইনেসের ড্রেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় তরুণদের সাথে মঞ্চনাটকে কাজ করতেন। হাই স্কুল পাস করার পর তিনি ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্ত্বে ভর্তি হন এবং পরে নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নর্থওয়েস্টার্নে তিনি গামা ফি বেটা দলের সদস্য ছিলেন এবং তার সহপাঠি ছিলেন পরবর্তী সময়ের হাস্যরসাত্মক অভিনয়শিল্পী পল লিন্ড ও শার্লট রে। ১৯৪৬ সালে তিনি মিস শিকাগো হিসেবে ২০তম মিস আমেরিকা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পর টেলিভিশন ও পরে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন।
মিস আমেরিকা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ১৬ প্রতিযোগীর মধ্যে থাকার জন্য লিচম্যান এলিয়া কাজানের অধীনে নিউ ইয়র্ক সিটির অ্যাক্টরস স্টুডিওতে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি পান। তিনি রজার্স ও হ্যামারস্টেইনের সাউথ প্যাসিফিক মঞ্চনাটকে নেলি ফরবাশ চরিত্রের জন্য অন্য একজন অভিনয়শিল্পীর স্থলাভিষিক্ত হন। কয়েক বছর পরে তিনি উইলিয়াম ইঙ্গের কাম ব্যাক, লিটল শেবা নাটকে অভিনয় করেন, কিন্তু ব্রডওয়ে মঞ্চে মঞ্চস্থ হওয়ার আগেই এই নাটক ত্যাগ করে ক্যাথরিন হেপবার্নের অনুরোধে তার সহশিল্পী হিসেবে উইলিয়াম শেকসপিয়ারের অ্যাজ ইউ লাইক ইট মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন।
লিচম্যান ১৯৫০-এর দশকে কয়েকটি সরাসরি টিভি সম্প্রচারে কাজ করেন, তন্মধ্যে রয়েছে সাসপেন্স ও ওয়েস্টিংহাউজ স্টুডিও ওয়ান। তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কার্নেগি হল (১৯৪৭) চলচ্চিত্রে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে, কিন্তু তিনি প্রথম মূল চরিত্রে কাজ করেন রবার্ট অলড্রিচের নোয়া চলচ্চিত্র কিস মি ডেডলি (১৯৫৫)-এ।[৫] এই চলচ্চিত্রের চিত্রায়নের সময়ে লিচম্যান অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং একটি দৃশ্যে অন্ধকার হাইওয়েতে ট্রেঞ্চ কোট পরিহিত অবস্থায় তার দৌড়ানোর দৃশ্য রয়েছে। পরের বছর তিনি পল নিউম্যান ও লি মারভিনের সাথে দ্য র্যাক (১৯৫৬)-এ অভিনয় করেন। তিনি পুনরায় নিউম্যানের সাথে বাচ ক্যাসিডি অ্যান্ড দ্য সানড্যান্স কিড (১৯৬৯) ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন।
লিচম্যান ১৯৭১ সালে ল্যারি ম্যাকমার্ট্রির সর্বাধিক বিক্রীত বই অবলম্বনে নির্মিত দ্য লাস্ট পিকচার শো চলচ্চিত্রে একজন হাই স্কুলের ব্যায়াম শিক্ষকের উপেক্ষিত স্ত্রী চরিত্রে অভিনয় করেন, যার টিমোথি বটমের চরিত্রের সম্পর্ক রয়েছে। পরিচালক পিটার বোগডানোভিচ প্রত্যাশা করেছিলেন যে লিচম্যান এই কাজের জন্য অস্কার লাভ করবেন। ফলশ্রুতিতে লিচম্যান এই কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন। এই চরিত্রের জন্য মূলত এলেন বার্স্টিনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বার্স্টিন এই চলচ্চিত্রের অন্য একটি চরিত্র চেয়েছিলেন।[৬]
তিনি ১৯৭০-এর দশকে সিবিএস চ্যানেলের দ্য ম্যারি টাইলার মুর শো ও এর স্পিন অফ ফিলিস অনুষ্ঠানে ফিলিস লিন্ডস্ট্রম চরিত্রে অভিনয় করেন। ফিলিস ধারাবাহিকে তার কাজের জন্য তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন।