খৈরি Chocolate pansy | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | সন্ধিপদী |
শ্রেণী: | পতঙ্গ |
বর্গ: | লেপিডোপ্টেরা |
পরিবার: | Nymphalidae |
গণ: | Junonia |
প্রজাতি: | J. iphita |
দ্বিপদী নাম | |
Junonia iphita (Cramer, 1779) | |
প্রতিশব্দ | |
Precis iphita |
খৈরি একটি প্রজাপতির জাতের নাম। এদের ওপর-পিঠে কিছু গাঢ় রঙের টানা দাগ থাকে। পিছনের ডানায় পার্শ্বপ্রান্তের কাছে একসারি প্রায়-অদৃশ্য ছোপ দেখা যায়। নিচের পিঠে অপেক্ষাকৃত হালকা রঙ এবং কয়েকটি ক্ষীণ চোখের মতো চিহ্ন থাকে।
প্রসারিত অবস্থায় খৈরি এর ডানার আকার ৫৫-৮০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]
ভারতে প্রাপ্ত খৈরি এর উপপ্রজাতি হল-[২]
খৈরিদের সমগ্র ভারত এই দেখা যায়। হিমালয় এর ৯০০০ ফুট উচ্চতা অবধি সাধারনত এদের দেখা যায়। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার থেকে মালয়েশিয়া, সুমাত্রা[৩] এবং চিনের কিছু অংশে এদের পাওয়া যায়।[১]
প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
ডানার উপরিতল বাদামী ও ঈষৎ অস্পষ্ট কালচে বাদামী বন্ধনীযুক্ত। সামনের ডানায় cell অথবা কোষ এর উপরপ্রান্ত হইতে নিম্নপ্রান্ত অবধি বিস্তৃত, কালো রেখা দ্বারা উভয়পার্শ্বে সীমায়িত ২টি ছোট বাদামী বন্ধনী ও সেল এর বহিঃপ্রান্তে ইষদ অস্পষ্ট কালচে বাদামী চওড়া পটি বর্তমান। অ্যাপেক্সের নিম্নভাগে কোস্টাল শিরার লাগোয়া একটি ছোট ও লম্বাটে সাদা ছোপ এবং পোস্ট ডিসকাল অংশে একসারি ছোট ও অস্পষ্ট চক্ষুবিন্দু (ocelli) চোখে পড়ে। উক্ত চক্ষুবিন্দুগুলি কিছু নমুনাতে অনুপস্থিত থাকে। অ্যাপেক্স বহিঃবর্তী যা বাইরের দিকে বাড়ানো ও চৌকো এবং টার্মেন অবতল (falcate)। টার্মিনাল ও সাব-টার্মিনাল দুটি কালো ঢেউ খেলানো রেখা প্রায় সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত। উভয় ডানা গুড়ে কোস্টাল শিরা থেকে উৎপন্ন ও প্রায় ডরসাম অবধি বিস্তৃত আঁকাবাঁকা কালচে বাদামী ডিসকাল রেখা বিদ্যমান যা পিছনের ডানায় ক্রমশ সরু ও অস্পষ্ট হয়েছে।[৪] পিছনের ডানা অনুরূপ রেখা, দাগ ও বন্ধনীযুক্ত, তবে পোস্ট ডিসকাল অংশের অস্পষ্ট চক্ষুবিন্দুর সারি সর্বদাই উপস্থিত ও সামনের ডানার চক্ষুবিন্দুগুলি অপেক্ষা বড়। টর্নাস সামান্য বহিঃবর্তী। টার্মিনাল ও সাবটার্মিনাল কালো রেখা দুটি অনুরূপ। টার্মেন ঢেউ খেলানো।
ডানার নিম্নতল গাঢ় অথবা ঈষৎ খয়েরি ও শুকনো পাতার অনুরূপ দর্শন। দাগ, ছোপ, বন্ধনী ও চক্ষুবিন্দুগুলি উপরিপৃষ্ঠের অনুরূপ ও খুবই অস্পষ্ট।[৪]
স্ত্রী ও পুরুষ প্রকার অনুরূপ।[৫]
খৈরিরা মাটির কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে। এরা মাটি থেকে তিন-চার ফুট উঁচুতে গাছের পাতায় বসে আবার অনেক সময় মাটিতে বসেও রোদ পোহাতে দেখা যায়।[৬] এরা কাছাকাছি অন্য কোন প্রজাপতি দেখলে এরা ঝটিতি তাড়া করে তাদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। এরা একটু গাছপালা ঘেরা জায়গায় বেশি দেখা যায়। স্যাঁতসেতে এলাকা পছন্দ করে।[৭]
এরা ডিম পাড়ে কচি পাতায়।
শূককীটগুলি পূর্নবয়স্ক অবস্থায় কালো রঙ এর হয় এবং এদের দু’পাশ লালচে বাদামি বর্ণের হয়। সারা দেহে লম্বা লম্বা নরম কাঁটার বৃন্তিকা দেখা যায়। ৩-১২ নং দেহখণ্ডে লম্বালম্বি সাত সারি, প্রতি খণ্ডে প্রতি সারির একটি করে এরকম বৃন্তিকা আছে। এক একটি কাঁটার উচ্চতা প্রায় ২ মিমি। সারা দেহে অতি সূক্ষ্ম, সাদা আঁচিলের ছাওয়া বলে মখমলের মতো দেখায়। মাথার মাঝখানে একটা রেখা থাকে যা মাথাটাকে দুটো গোলার্ধে ভাগ করেছে। এরা ডিম ফুটে বেরনোর পরের কয়েকদিন তাদের আহার্য কচি পাতাগুলি খেতে থাকে এবং কয়েকটা রেশম সুতোর টানা দিয়ে পাতাগুলো মুড়ে একটা আবরণ তৈরি করে।[৮]
বেল লিখেছেন যে এ কাজটা তারা করে দায়সারাভাবে। পূর্ণবয়স্ক লার্ভা শ্লথ; তাকে পাতার যে কোনো জায়গায়, এমনকী পাতা ছাড়াও কাণ্ড অথবা অন্যত্র দেখতে পাওয়া যায়। বিপদের আশঙ্কা দেখলেই শরীরটা গুটিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এরকম অভ্যাস আরও অনেক শূককীটের রয়েছে, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই এই সময়ে একটা রেশম সুতোর অবলম্বন ধরে ফের ওপরে উঠে আসে।
মূককীট মূককীট ধূসর বর্ণের, খানিকটা কালচে খয়েরি বর্ণের। এদের মাথার ওপর এবং বক্ষের সামনে দু’পাশে হালকা ছোপ দেখা যায়। দেহে কিছু অর্বুদ অথবা গুটি থাকে। এরা সাধারনত মাটির কাছে সরু ডাল, কাঠি অথবা পাতাতে মূককীট তৈরি করে।