গাটাপার্চা (ইংরেজি: Gutta-percha) হল প্যালাকুইয়াম গণের একপ্রজাতীর গাছ হতে প্রাপ্ত তরুক্ষির। যা সাধারণত প্যালাকুইয়াম গাটা প্রজাতীর গাছ হতে পাওয়া য়ায়।
গাটাপার্চা শব্দটির উৎপত্তি মালয় ভাষায় গেটাহ-পার্চা থেকে, যার অর্থ পার্চা গাছ হতে প্রাপ্ত আঠা।
১৮৪৩ সালে সর্বপ্রথম প্রাকৃতিক থার্মোপ্লাস্টিক পদার্থ হিসেবে এটি বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি পায়। ১৮৫১ সালে ১৫০০০০ কেজি গাটা পার্চা ব্রিটেনে রপ্তানী করা হয়। ১৯ শতকের শেষের দিকে গৃহস্থালী এবং শিল্পকারখানায় এর ব্যবহার বেড়ে যায়।[১] বিশেষত জলমগ্ন তারবার্তা [২] পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত তারের অন্তরক হিসেবে ব্যবহার করার ফলে তারের ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছিল।[৩] উন্নত বিশ্বে গাটাপার্চা ব্যবহার শুরুর আগে স্থানীয় মালয়েশীয়রা এটাকে ছুরির হাতল, ছড়ি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করত। প্রথম ইউরোপিয়ান হিসেবে এটি আবিষ্কার করেন জন ট্রেডিসেন্ট ১৬৫৬ সালে দূরপ্রাচ্য থেকে। তিনি এটার নাম দিয়েচিলেন 'মাজের উড'। ড. মন্টেগামারি নামক একজন ভারতীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা এর ব্যবহারিক ব্যবহার শুরু করেন। ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করার বিষয়ে প্রথম ধারনাপত্র দেয়ার কারণে তাকে রয়েল সোসাইটি অব আর্টস, লন্ডন স্বর্নপদক দেয়, ১৮৪৩ সালে।[৪]
প্যালাকুইয়াম গাটা গাছ ৫-৩০ মিটার পর্য়ন্ত লম্বা এবং কান্ডের বেড় প্রায় ১ মিটার পর্য়ন্ত হতে পারে। এর পাতা চিরহরিৎ প্রকৃতির, সর্পিলাকারে সজ্জিত, পাতার উপরের অংশ সবুজ কিন্তু নিচের অংশ হলুদাভ, যা ৮-২৫ সে,মি, পর্যন্ত লম্বা হয়। এর ফুল কাণ্ডের পাশে ছোট ছোট গুচ্ছাকারে হয়, প্রতিটি ফুল একটি করে সাদা দল নিয়ে গঠিত যা আবার ৪-৮ টি( সাধারণত ৬ টি) খণ্ডে বিভক্ত। এর ফল ৩-৭ সে.মি. পর্যন্ত হয় যা সাধারণত রসালো হয় এবং প্রত্যেক ফলে ৪ টি করে বীজ থাকে। কিছু কিছু প্রজাতীর ফল ভক্ষনযোগ্য।
অস্ট্রেলিয়াতে গাটাপার্চা সাধারণত গন্ধযুক্ত মজবুত কাঠ উৎপাদনকারী গাছ হিসেবে পরিচিত।
রাসায়নিক ভাবে গাটাপার্চা একটা পলিতারপিন, পলি আইসোপ্রিন সত্যিকার অর্থে ট্রান্স ১,৪ পলি আইসোপ্রিন। অপরদিকে সিস পলিমার হল প্রকৃতিক রাবার যা আসলে আকারবিহীন কিন্তু গাটাপার্চা স্ফটিক গঠন করে বলে এটি কঠিন পদার্থ।