গোলাম মুহাম্মদ গুরজার | |
---|---|
![]() দ্য গ্রেট গামা | |
জন্ম | ১৮৮০ অমৃতসর, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ১৯৬৩ লাহোর, পাকিস্তান |
পেশাদারি কুস্তি ক্যারিয়ার | |
রিংয়ে নাম | গামা গুরজার পালোয়ান |
গামা পালোয়ান (২২ মে ১৮৮০ - ১৯৬৩)[১][২] (উর্দু: گاما پھلوان), জন্ম নাম গোলাম মুহাম্মদ গুরজার (উর্দু: غلام محمد), ছিলেন একজন বিখ্যাত পালোয়ান বা কুস্তিগির। পাঞ্জাবের অমৃতসরে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯১০ এর ১৫ অক্টোবর ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপের ভারতীয় সংস্করণ তাকে প্রদান করা হয়। ৫০ বছরের কর্মজীবনে তিনি অপরাজেয় হিসেবে টিকে ছিলেন। তাকে তার সময়ের শ্রেষ্ঠ পালোয়ান হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান চলে যান।[৩]
গোলাম মুহাম্মদের পাঞ্জাবি ডাকনাম ছিল "গামা"। একটি মুসলিম গুরজার পরিবারে তিনি জন্ম নেন। খ্যাতনামা কুস্তিগির মুহাম্মদ আজিজ তার পিতা। মধ্য প্রদেশের দেশীয় রাজ্য দাতিয়ার শাসক মহারাজা ভবানি সিং তরুণ কুস্তিগির ও তার ভাই ইমাম বখশের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।[৪] ১০ বছর বয়সে যোধপুরে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করার মাধ্যমে তিনি প্রথম নজরে আসেন। এই প্রতিযোগিতায় চারশতের বেশি কুস্তিগির অংশ নেয়। তরুণ গামা শেষে টিকে থাকা পনেরজন কুস্তিগিরের অন্যতম ছিলেন। এসময় যোধপুরের মহারাজা অসাধারণ প্রাণশক্তি ও জ্যেষ্ঠ কুস্তিগিরদের সামনে তার দক্ষতার গামাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
গামা পালোয়ানের দৈনিক চর্চার মধ্যে ছিল তার সহযোগী ৪০ জন কুস্তিগিরের সাথে মল্লযুদ্ধ। তিনি প্রতিদিন দশ লিটার দুধ, দেড় পাউন্ড এলমন্ড পেস্ট মিশ্রিত শক্তিবৃদ্ধিকারী পানীয় ও সেসাথে ফলের রসসহ অন্যান্য খাবার খেতেন। উচ্চ প্রোটিন ও উচ্চ শক্তির খাবার তার পেশির জন্য সহায়ক হয়।
২২ বছর বয়সে বরোদায় তিনি ১২০০ কেজি পাথর উত্তোলন করেন। পাথরটি বরোদা জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়। এটি আড়াই ফুট উচু। এতে খোদাই করে লেখা আছে যে এই পাথর ১৯০২ সালের ২৩ ডিসেম্বর গোলাম মুহাম্মদ উত্তোলন করেন।[৫] তিনি বরোদায় কুস্তি প্রতিযোগিতায় আসেন। কিন্তু কোনো ম্যাচ না পাওয়ায় ১২০০ কেজির পাথর উত্তোলন করেন এবং কিছু দূর বহন করেন।[৫]
১৯ বছর বয়সে গোলাম মুহাম্মদ গুজরানওয়ালার (বর্তমান পাঞ্জাব, পাকিস্তান মুসলিম কুস্তিগির ও ভারতীয় কুস্তি চ্যাম্পিয়ান মধ্যবয়সী রহিম বখশ সুলতানি ওয়ালাকে চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। ৭ ফুট উচু ও খুব ভালো রেকর্ডধারী রহিম ৫ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার গামাকে সহজে হারিয়ে দেবেন বলে মনে হয়েছিল। রহিমের একমাত্র দুর্বলতা ছিল তার বয়স। তিনি তার কর্মজীবনের শেষসীমায় পৌছে গিয়েছিলেন। তাদের লড়াই চার ঘণ্টা ধরে চলে এবং শেষ পর্যন্ত ড্র হয়। রহিম বখশের সাথে প্রতিযোগিতা গামার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপর তাকে ভারতীয় কুস্তি প্রতিযোগিতার পরবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। প্রথমবার গামা প্রতিরক্ষামূলকভাবে খেলেন। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি আগ্রাসী হন। নাক ও কান থেকে বেশ রক্তপাত হওয়ার পরও তিনি রহিম বখশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হন।
দ্য গ্রেট গামা ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার গন্ডি পেরিয়ে নিজের সক্ষমতা জানান দিতে জাহাজে ছেপে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। উচ্চতা কম হওয়ায় ইংল্যান্ডের মাটিতে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে। নানান চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে নিজের উচ্চতা নয় বরং দক্ষতার প্রমান দিয়ে অবশেষে ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯১০ সালে ইংল্যান্ড এর মাটিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্টেনিস্লাভ জিসকোর সাথে ২ ঘন্টা ৩৩ মিনিট লড়াইয়ের পরেও জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়নি। তবে ৭ দিন পর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জিসকোকে হারিয়ে লাভ করেন জন বুল বেল্ট। [৬]
১৯৬০ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কার প্রদান করেন।
২৩ই মে ১৯৬০ সালে তিনি লাহোরে মৃত্যুবরণ করেন।
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; strong
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি