গারুডি গোম্বে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে প্রচলিত একটি লোকনৃত্য । নৃত্যশিল্পীরা বাঁশের কাঠি দিয়ে তৈরি বড় আকারের পুতুলের কাঠামোতে নিজেকে সাজায়। কন্নড় ভাষায় গারুডি-গোম্বে শব্দটির অর্থ যাদুর পুতুল বা ঐন্দ্রজালিক পুতুল । এই নৃত্যটি সেখানকার প্রধান উৎসবগুলোতে এবং মহীশূর দশহরা উৎসবে অনুষ্ঠিত মিছিলের মধ্যেও পরিবেশিত হয়। এই নৃত্যটি কর্ণাটকের উপকূলীয় জেলাগুলোতে টট্টিরায়া নামেও পরিচিত। টট্টিরায়া শব্দের অর্থ বাঁশের লাঠি দিয়ে তৈরি পুতুল বহনকারী একজন ব্যক্তি।[১]
একটি কিংবদন্তি অনুসারে, এই নাচ হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত যুগেও পরিবেশিত হত। হিন্দু ভগবান কৃষ্ণের স্ত্রী সত্যভামা স্বামীর উপর রাগান্বিত হলে, তিনি গারুডি গোম্বের পুতুল পরে তার ক্রোধ প্রশমিত করেছিলেন।[২]
কাঠের ঝুড়িতে কাগজের মণ্ড প্রয়োগ করে পুতুলের মুখের অবয়ব তৈরি করা হয়। তারপর উপযুক্ত নকশা এবং রঙ ব্যবহার করে মুখটি তৈরি হয়। প্রতিটি মুখ একটি কাঠের কাঠামো দ্বারা আটকানো থাকে। পুতুলগুলির উচ্চতা ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে এবং কাঠামো সহ মোট ওজন ৪০ কেজির বেশি হতে পারে। [১][২] একজন ব্যক্তি নিজেকে নীচে থেকে এই কাঠামোতে প্রবেশ করে এবং তার কাঁধে এই বিশাল কাঠামোটি বহন করে নাচটি সম্পাদন করে
বহনযোগ্য পুতুলগুলো ওজনে ভারী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ অভিনয়শিল্পীই পুরুষ।[২] নাচ পরিবেশন প্রায় আট ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে অর্থ্যাৎ অভিনয়কারীদের দীর্ঘসময় ধরে এসব ভারী পুতুল বহন করতে হয়। যদিও নাচ পরিবেশনের পিছনে মূল ধারণাটি হলো একটি মজাদার পরিবেশ তৈরি করা, তবুও সেগুলি মন্দ আত্মাদের মুক্তির মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। [১]