গুন্টার ব্লোবেল | |
---|---|
জন্ম | ভাল্টার্সডর্ফ, নিম্ন সাইলেশিয়া, জার্মানি | ২১ মে ১৯৩৬
মৃত্যু | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ নিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৮১)
নাগরিকত্ব | জার্মান ও আমেরিকান |
মাতৃশিক্ষায়তন | কিয়েল বিশ্ববিদ্যালয় টুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় (এমডি) উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচডি) |
পরিচিতির কারণ | প্রোটিন লক্ষ্যভেদকরণ, জিন তোরণায়ন তত্ত্ব |
পুরস্কার | এনএএস আণবিক জীববিজ্ঞান পুরস্কার (১৯৭৮) রিচার্ড লোনসবেরি পুরস্কার (১৯৮৩) চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯৯৯) ম্যাসরি পুরস্কার (১৯৯৯) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | জীববিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয় |
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টা | জর্জ এমিল প্যালেড |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | পিটার ওয়াল্টার |
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী | ডেভিড জে অ্যান্ডারসন |
গুন্টার ব্লোবেল (২১ মে ১৯৩৬-১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮) একজন সাইলেশীয় জার্মান ও আমেরিকান জীববিজ্ঞানী ছিলেন। প্রোটিনের মধ্যে অন্তর্নিহিত সংকেত বিদ্যমান, যেগুলোর মাধ্যমে কোষে তাদের পরিবহন ও স্থানীয়করণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্লোবেল এটি আবিষ্কারের জন্য ১৯৯৯ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
ব্লোবেল নিম্ন সিলেশীয় প্রদেশের ভাল্টার্সডর্ফে জন্মগ্রহণ করেন। তখন এটি পূর্ব জার্মানির অংশ ছিল। ১৯৪৫ সালে লাল ফৌজের আগ্রাসন হতে পরিত্রাণ লাভের উদ্দেশ্যে তার পরিবার ভাল্টার্সডর্ফ থেকে পালিয়ে ড্রেসডেন শহরে স্থানান্তরিত হয়। ড্রেসডেনে যখন বোমা নিক্ষেপ করা হয়, তখন আট বছর বয়সী ব্লোবেলের পরিবার শহরের পশ্চিমে একজন আত্মীয়ের খামারে অবস্থান করছিল। ব্লোবেল জাখসেন প্রদেশের ফ্রেইবুর্গ শহরের এক জিমনেসিয়ামে প্রাথমিক অধ্যয়ন লাভ করেন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং টুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৬০ সালে স্নাতক হন। দুই বছর কাজ করার পর মেডিকেল ইন্টার্নশিপ শেষে তিনি উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ম্যাডিসন শহরে গমন করেন। তিনি ভ্যান আর পোটারের বিজ্ঞানাগারে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। [১]
ব্লোবেল ১৯৮৬ সালে হাওয়ার্ড হিউজেস চিকিৎসা ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালে পেপটাইড সংকেত আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। [২] পেপটাইড সংকেতসমূহ প্রোটিন লক্ষ্যকরণ বা প্রোটিন টার্গেটিংয়ের অপরিহার্য অংশ পরিগণিত হয়। এটি কোষগুলোকে সদ্য সংশ্লেষিত প্রোটিন অণুগুলোকে এক প্রকার "ঠিকানা চিহ্ন" বা অ্যাড্রেস ট্যাগ লাগিয়ে যথাযথ অবস্থানে পৌঁছাতে সহায়তা প্রদান করে।
ব্লোবেল নিউ ইয়র্ক প্রেসবিটেরিয়ান ওয়েলি কর্নেল চিকিৎসা কেন্দ্রে ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ম্যানহাটনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[৩] মৃত্যুর দিকেই ব্লোবেল কোষ জীববিদ্যাকে আণবিক পর্যায়ে উন্নীত করার স্বীকৃতি লাভ করেন।
ড্রেসডেন শহরের পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় ব্লোবেল সর্বদাই অবদান রাখেন। ১৯৯৪ সালে ব্লোবেল ফ্রেন্ডস অব ড্রেসডেন ইনকর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা, যা শহরটির উন্নতিকল্পে কাজ করে। ব্লোবেল ফ্রাউনকার্ক চার্চের পুনর্গঠন (যা ২০০৫ সালে সম্পন্ন হয়) এবং ইহুদি ধর্মােপাসনালয় বা সিনাগগ তৈরিতেও এটি অবদান রাখে।
১৯৪৫ সালে, ব্লোবেলের বোন যে রেলগাড়িতে করে যাতায়াত করছিলেন, সেই যুদ্ধবিমান থেকে রেলগাড়ির উপর আচমকা নিক্ষিপ্ত হয়। যার ফলে তার বোন মারা যান। তার এক ভাই মার্কিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ব্লোবেল নিউ ইয়র্ক সিটির রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৮ সাল থেকেই কর্মরত ছিলেন। ব্লোবেল ম্যানহাটনের আপার ইস্ট সাইড এলাকায় সহধর্মিণী লরা মায়োগলির সঙ্গে বসবাস করতেন। গুন্টার ব্লোবেল নেসলে কোম্পানি ও স্ক্রিপস গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি ক্রোমোসেল কর্পোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।[৪] তিনি শ পুরস্কার প্রদানকারী জীবনবিজ্ঞান ও চিকিৎসা নির্বাচন কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। অপেরা সংগীত ও স্থাপত্যের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। বলা বাহুল্য, পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানেও তিনি আগ্রহী ছিলেন।