গুন্টুর সান্নাম বা Capsicum annuum var. Longhum হচ্ছে সুপরিচিত ঝালসমূহের মধ্যে অন্যতম এবং পৃথিবীব্যাপী এই জাতের ঝালের চাহিদা ব্যাপক।[১] ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুর জেলা এবং তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওয়ার্যাঙ্গেল ও খাম্মাম জেলার বিস্তৃত জমিতে গুন্টুর ঝাল চাষ করা হয়।
গুন্টুর সাম্মাম ঝাল হচ্ছে ক্যাপসিকাম এন্নাম প্রজাতির ঝাল। মসলা এবং সবজি হিসেবে ব্যবহারের জন্য বাণিজ্যিক ভাবে গুন্টুর সাম্মাম ঝালের চাষাবাদ করা হয়। ভারতীয়দের মধ্যে মাথাপ্রতি ব্যবহৃত মশলার বড় অংশ ঝুড়ে আছে ঝাল।
প্রায় ৪০০ বছর ধরে ভারতবর্ষে ঝালের চাষ হচ্ছে। ঝাল উৎপাদনে ভারতের বৈশ্বিক অবস্থান শীর্ষে। ভারতে উৎপাদিত মোট ঝালের ৪৬% উৎপাদিত হয় অন্ধপ্রদেশ রাজ্যে এবং ঝাল উৎপাদনে অন্ধ্রপ্রদেশ ভারতের শীর্ষস্থান অধিকারকারী রাজ্য। ঝালটির নামই প্রমাণ করে যে এটি অন্ধপ্রদেশের মৌলিক ঝাল। ঝালের উপর গবেষণার জন্য তিন দশক পূর্বে অন্ধ্র প্রদেশ সরকার গুন্টুরে একটি আঞ্চলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।[২] বর্তমান সময়ে ঝাল সেখানকার প্রধান অর্থকরী ফসল এবং এই জাতের ঝালের চাষাবাদ তাদের জীবিকার উৎস হিসেবে পরিণত হয়েছে।
তেলুগু শব্দ সাম্মাম অর্থ চিকন। নামের দ্বারাই ফলের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। গুন্টুর সাম্মাম অর্থ হচ্ছে গুটুর অঞ্চলে উৎপাদিত চিকন ঝাল।
গুন্টুর ঝালের প্রধান ফলন মৌসুম হচ্ছে ডিসেম্বর থেকে মে। বছরে প্রায় ২৮০,০০০ টন গুন্টুর সান্নাম ঝাল উৎপন্ন হয়। সর্বোচ্চ ফলন পেতে একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থায় গুন্টুর সান্নাম ঝালের চাষাবাদ সম্পন্ন করতে হয়। ফসলটি উচ্চমাত্রায় রোগাক্রান্ত হয় তাই ভালো ফলন পেতে বিশেষ যত্ন এবং লক্ষ্য প্রয়োজন।
Guntur Sannam Factsheet | |||
---|---|---|---|
চাষাবাদ অঞ্চল | অন্দ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, রাজস্থান, আসাম | ||
চাষাবাদ সময় | জানুয়ারী থেকে এপ্রিল অথবা ডিসেম্বর থেকে মে | ||
ASTA Colour Value | ৩২.১১ | ||
ঝালের মাত্রা | ০.২২৬% | ||
বার্ষিক উৎপাদন | ২৮০,০০০ টন |
ভৌগোলিক অঞ্চল হিসেবে গুটুর সান্নাম ঝাল প্রধানত অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলাতেই আবাদ, প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণ করা হয়। তবে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল যেমন প্রকাশম, ওয়ারাঙ্গেল এবং খাম্মাম জেলায়ও গুন্টুর সাম্মাম ঝালের চাষ হয়। গুন্টুর সাম্মাম ঝালের বৃদ্ধির জন্য উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া উপযোগী এবং পাকার সময়ে শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন।