দুটি বড়, কুন্ডলী পাকানো ও খাজঁ বিশিষ্ট খন্ড নিয়ে সেরিব্রাম (ইংরেজি: cerebrum) গঠিত। খন্ড দুটিকে সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। সেরেব্রাম মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ এবং মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশকে আবৃত করে রাখে। খন্ড দুটি ভেতরের দিকে কর্পাস ক্যালোসাম নামে চওড়া স্নায়ুগুচ্ছ দিয়ে যুক্ত। পৃষ্টতল নানা স্থানে ভাজঁ হয়ে উচুঁ নিচু অবস্থায় থাকে। উচুঁ জায়গাকে জাইরাস এবং নিচু জায়গাকে ফিসার বলে।
মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ হল সেরেব্রাম(গুরুমস্তিষ্ক)। এটা brainstem এর উপরে হবে না সামনের দিকে অবস্থান করবে তা নির্ভর করে প্রাণির উপর। মানুষের ক্ষেত্রে সেরেব্রাম সবচেয়ে বড় এবং উন্নত এবং এটা পাচটা বৃহত্তম খণ্ডে বিভক্ত।phylogenetic অনুসারে এখন পর্যন্ত জানাশুনা অন্য সকল প্রজাতির চেয়ে স্তন্যপায়ীর গুরুমস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় এবং উন্নততর।
গুরুমস্তিষ্ক দুইটা খাজবিশিষ্ট অংশ নিয়ে গঠিত যাকে সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলা হয়। গুরুমস্তিষ্কের বাইরের দিকের স্তরগ্রে ম্যাটার এ গঠিত। একে সেরেব্রাল কর্টেক্স বলে। এর নিচের স্তরকেহোয়াইট ম্যাটার বলা হয়।[১] এর subcortical গঠনপ্রণালিতে আছে হিপোক্যাম্পাস, basal ganglia এবং olfactory bulb। গুরুমস্তিষ্ক যে দুইটা হেমিস্ফিয়ার ধারণ করে তা একে অপর থেকে ফিসার দ্বারা পৃথক থাকে যাকে lateral sulcus বলে।
সেরিব্রাল কর্টেক্স, গুরুমস্তিষ্কের বহিঃস্তর যাকে গ্রে ম্যাটার বলা হয়, শুধুমাত্রই স্তন্যপায়ী প্রাণিতে পাওয়া যায়। বড় স্তন্যপায়ী যেমন মানুষে গুরুমস্তিষ্কের পৃষ্টতল ভাজ হয়ে তৈরী করে gyri এবং sulci যেগুলো surface area বৃদ্ধি করে।[২]
সেরিব্রাল কর্টেক্স সাধারণত চারটা লোবে বিভক্ত,যথাঃ ফ্রন্টাল, প্যারাইটাল, টেম্পোরাল,এবং অক্সিপিটাল লোবস.[৩]
গুরুমস্তিষ্ক পৃথক হয়েছেmedial longitudinal fissure(অনুদৈর্ঘ্য বরাবর) দ্বারা দুইটা সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ারএ, যার নাম ডান হেমিস্ফিয়ার এবং বাম হেমিস্ফিয়ার। ডান হেমিস্ফিয়ার শরীরের বাম অংশের সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং তাকে প্রকৃয়াজাত করে বাম অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং বাম হেমিস্ফিয়ার করে তার উল্টোটা।[৩] দুইটা হেমিস্ফিয়ারের শক্তিশালি bilateral symmetry থাকলেও সেটা সম্পূর্ণ নয়। তবে দুইটা হেমিস্ফিয়ারের কার্যক্রমের কিছুটা পার্থক্য আছে বলে ধারণা করা হয়।
সংবেদী অঙ্গ থেকে আসা অনুভূতি গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করে। চিন্তা, বুদ্ধি, ইচ্ছাশক্তি, উদ্ভাবনীশক্তি প্রভৃতি উন্নত মানসিক বোধের নিয়ন্ত্রণ করে।[১][২]
সেরিব্রাম শরীরের সচেতন বা স্বইচ্ছায় চালিত সঞ্চালক পেশির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। এই কাজগুলো প্রাথমিক সঞ্চালক কোরটেক্স এবং অন্যান্য ফ্রন্টাল লোব অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয় যেখানে কর্ম পরিকল্পনা করা হয়। প্রাথমিক সঞ্চালক কোরটেক্সের উর্ধ্বস্থ সঞ্চালক নিউরণ এক্সনগুলো পাঠায় মস্তিষ্কের শাখা প্রশাখা এবং মেরুদন্ড হয়ে নিম্ন সঞ্চালক নিউরণের synapse, যেটা পেশি নিয়ন্ত্রণ করে। কোরটেক্সের সঞ্চালক অঞ্চলের ক্ষতি হলে বিশেষ ধরনের সঞ্চালক নিউরণ রোগ হতে পারে। এই ধরনের ক্ষতির ফলে পেশির ক্ষমতা বিনষ্ট হওয়া এবং সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস না হয়ে একক কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এটি ইন্দ্রিয় উপলব্দি ক্ষমতা, স্মৃতি, চিন্তা এবং বিচারিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। সহায়ক সঞ্চালক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবেও সেরিব্রাম কাজ করে।