ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গুলাবরায় সিপাহীমালিনী রামচাঁদ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | করাচী, সিন্ধ, ব্রিটিশ ভারত | ২৬ জুলাই ১৯২৭|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩ মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স ৭৬)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অধিনায়ক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬১) | ৫ জুন ১৯৫২ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৩ জানুয়ারি ১৯৬০ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৫/৪৬–১৯৪৬/৪৭ | সিন্ধ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৮/৪৯–১৯৬২/৬৩ | বোম্বে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৬/৫৭ | রাজস্থান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ |
গুলাবরায় সিপাহিমালিনী রাম রামচাঁদ (ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ভারত ক্রিকেট দলের পক্ষে ৩৩ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও, দলকে ৫ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সিন্ধু, বোম্বে ও রাজস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন গুলাবরায় রামচাঁদ।
; জন্ম: ২৬ জুলাই, ১৯২৭ - মৃত্যু: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৩) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের করাচীর সিন্ধু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান: পাকিস্তান) করাচীতে এক সিন্ধু পরিবারে রামচাঁদের জন্ম। শুরুর দিকে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটে সিন্ধুর প্রতিনিধিত্ব করে। এরপর দেশ বিভাজন হলে তিনি বোম্বেতে চলে আসেন ও সেখানেই নিবাস গড়েন।
১৯৪৫-৪৬ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় সিন্ধু দলের সদস্যরূপে মহারাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর তিনি আরও দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় সিন্ধুর পক্ষে খেলেছিলেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বের পক্ষে অংশ নেন।[১] রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় উভয় ইনিংসে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে অপরাজিত ৫৫ ও অপরাজিত ৮০ রান তুলেন। এরফলে বোম্বের জয় সহজতর হয়।[২]
বোম্বে দলের সদস্য থাকা অবস্থায় পাঁচবার রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় অংশ নিয়ে দলকে শিরোপা এনে দেন। চূড়ান্ত খেলার সবগুলোতেই তার শতরানের ইনিংস ছিল। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে হোলকারের[৩] বিপক্ষে ১৪৯; ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে মহীশূরের[৪] বিপক্ষে ১০৬; ১৯৬০-৬১,[৫] ১৯৬১-৬২[৬] ও ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে রাজস্থানের বিপক্ষে যথাক্রমে ১১৮, ১০০ ও অপরাজিত ১০২ রান তুলেন।[৭] ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে রাজস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
১৯৫২ সালে ভারত দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। তার এ অন্তর্ভূক্তিকে বিষ্ময়কররূপে চিত্রিত করা হয়ে থাকে। ৫ জুন, ১৯৫২ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। তবে হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত টেস্টের অভিষেক পর্বটি তার জন্যে সুখকর হয়নি। উভয় ইনিংসে জোড়া শূন্য রান করেন গুলাবরায় রামচাঁদ। চার টেস্টের সিরিজের সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। ঐ সিরিজটিতে সর্বমোট ৬৮ রান তুলেন ও ৪ উইকেট পান তিনি।
১৯৫২-৫৩ মৌসুমে তার ক্রীড়াশৈলীর বেশ উত্তরণ ঘটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যাটিং অর্ডারে সামনের দিকে চলে আসেন। এমনকি নতুন বল নিয়ে বোলিং আক্রমণও পরিচালনা করেছেন তিনি। ৫ টেস্টের ঐ সিরিজে অংশ নিয়ে ২৪.৯০ গড়ে ২৪৯ রান তুলেন ও ৮ উইকেট লাভ করেন তিনি।
১৯৫৫ সালের শুরুতে পাঁচ টেস্টের সিরিজে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে পাকিস্তান সফরে যান। ব্যাটহাতে ২৪.৯০ গড়ে রান তোলাসহ ১০ উইকেট পান তিনি। এ সিরিজের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের সংগ্রহ ১০৩/৭ থাকাবস্থায় মাঠে নেমে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও করাচীতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৬/৪৯ লাভ করেন। এটিই তার একমাত্র পাঁচ উইকেট প্রাপ্তি ছিল।
ডিসেম্বর, ১৯৫৫ সালে কলকাতায় সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৬ রান তোলেন। এটিই তার প্রথম সেঞ্চুরি ছিল। এর প্রায় এক বছর পর অক্টোবর, ১৯৫৬ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজ মাঠ ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে পরবর্তী শতকটি হাঁকান। ১০৯ রানের ঐ ইনিংসটি খেলার জন্য তাকে রে লিন্ডওয়াল, প্যাট ক্রফোর্ড, অ্যালান ডেভিডসন ও রিচি বেনো’র ন্যায় বোলারদের আক্রমণ প্রতিহত করতে হয়েছিল।[৮] ইনিংসটিতে ১৯টি চারের মার ছিল।
দুই বছর বাদে পরবর্তী সিরিজে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। তিন টেস্ট খেলার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারত সফরে আসে। সিরিজটিতে তেমন কিছু করতে না পারলেও প্রথম খেলায় অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস উপহার দেন তিনি। এরফলে ভারত দল খেলাটি ড্র করতে সমর্থ হয়েছিল।[৯]
১৯৫৯-৬০ মৌসুমে নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ডিসেম্বর, ১৯৫৯ সালে তাকে অধিনায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। ৫ টেস্টের ঐ সিরিজে ভারত দলকে পরিচালনা করে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম জয় নিয়ে আসেন। দুই টেস্টে ড্র করলেও সিরিজে তার দল ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল ও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে সক্ষমতা দেখায়। ব্যক্তিগতভাবে তিনি এ সিরিজে ভূমিকা রাখতে পারেননি। ব্যাটহাতে ১২.৩৩ গড়ে রান সংগ্রহ ও ২০০ গড়ে বোলিং করেন।[১০] তবে, রামচাঁদের অধিনায়কত্ব গণমাধ্যমে বেশ প্রশংসিত হয়।[১১][১২] কানপুরের দ্বিতীয় টেস্টে দলকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় এনে দেন।[১৩][১৪]
চান্দু বোর্দে এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন যে, রামচাঁদের অধিনায়কত্বে দল বেশ সুন্দরভাবে খেলে বিজয়ী হয়েছিল এবং তিনি সবসময়ই আশ্বস্ত করেছেন যে, আমরা তাদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো। এটি তার ভারতের পক্ষে সর্বশেষ সিরিজ ছিল।
আক্রমণধর্মী মাঝারীসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন রামচাঁদ। এছাড়াও প্রায়শঃই দলের বোলিং উদ্বোধনের মাধ্যমে আক্রমণ শানতেন।[১৫] উইজডেন এশিয়া তার স্মরণীকায় উল্লেখ করে যে, তিনি প্রতিভাধর অল-রাউন্ডার ছিলেন যিনি বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান, সুন্দর উদ্বোধনী বোলার ও কাছাকাছি থেকে দক্ষ ক্যাচ তালুবন্দীকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।[১৪] মিডিয়াম পেস সুই বোলার হিসেবে ইন-সুইঙ্গারের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতেন। বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক সুজিত মুখোপাধ্যায়ের অভিমত, বোলিং করার পূর্ব-পর্যন্ত তাকে প্রকৃত ফাস্ট বোলাররূপে দেখা যেতো।
অধিনায়ক হিসেবে রামচাঁদ দলীয় সঙ্গীদের কাছে চীরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন একজন নেতারূপে যিনি তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী হতে শিখিয়েছেন ও উজ্জ্বীবিত করেছেন।[১৫][১৬]
১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত দলের ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এয়ার ইন্ডিয়ায় ২৬ বছর চাকরি করেন। এ সময়ে তিনি ব্যাংকক ও হংকংয়ে স্টেশন ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন।[১১][১৭]
উইজডেন এশিয়ার তথ্য মোতাবেক জানা যায় যে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিচিতিতে শুরুর দিককার ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি।
১৯৯৫ সালে হৃদযন্ত্রে আক্রান্ত হন ও আরোগ্য লাভ করেন। মৃত্যুর পূর্বেকার দুইমাসে তিনবার হৃদযন্ত্র ক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৩ তারিখে তাকে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর পূর্বে বিসিসিআইয়ের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করা হয়। বিসিসিআই চিকিৎসার্থে ২ লক্ষ রূপী বরাদ্দ করে। এছাড়াও প্রয়োজনে তারা আরও অর্থ প্রদান করবে বলে জানায়।[১৩] ৫ সেপ্টেম্বর জানা যায় যে, আইসিইউ থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়। তার স্ত্রী লীলা রামচাঁদ জানান যে, আমরা তার ব্যয়ভার বহন করতে অক্ষমতা প্রকাশ করায় তাকে আইসিইউ থেকে বের করে আনতে বাধ্য হই।[১৮] অবশেষে ৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৩ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ের হাসপাতালটিতে হৃদযন্ত্র জটিলতায় তার দেহাবসান ঘটে।[১১]
পূর্বসূরী দত্ত গায়কওয়াড় |
ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ১৯৫৯-৬০ |
উত্তরসূরী নরি কন্ট্রাক্টর |