গুলাবো সিতাবো | |
---|---|
পরিচালক | সুজিত সরকার |
প্রযোজক | রনি লাহিড়ী শীল কুমার |
রচয়িতা | জুহি চতুর্বেদী |
চিত্রনাট্যকার | জুহি চতুর্বেদী |
কাহিনিকার | জুহি চতুর্বেদী |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার |
|
চিত্রগ্রাহক | অভিক মুখোপাধ্যায় |
সম্পাদক | চন্দ্রশেখর প্রজাপতি |
প্রযোজনা কোম্পানি | রাইজিং সান ফিল্মস কিনো ওয়ার্ক্স |
পরিবেশক | অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১২৪ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
গুলাবো সিতাবো (দেবনাগরী: गुलाबो सीताबो) ২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দিভাষী হাস্যরসাত্মক-নাট্য চলচ্চিত্র। সুজিত সরকার নির্মিত চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছেন জুহি চতুর্বেদী।[১] রাইজিং সান ফিল্মস-এর ব্যানারে চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেন রনি লাহিড়ী ও শীল কুমার। উত্তর ভারতের লখনোউ শহরের একটি বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়ার কর্মকাণ্ড নিয়ে নির্মিত এই কাহিনিচিত্রের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন ও আয়ুষ্মান খুরানা।[২][৩] শান্তনু মৈত্র, অভিষেক অরোরা ও অনুজ গার্গ চলচ্চিত্রটির কন্ঠ ও নেপথ্য সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। ২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রটি করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে প্রেক্ষাগৃহের বদলে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও নামক অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং সেবায় ১২ জুন,২০২০-এ মুক্তি দেয়া হয়।[৪][৫][৬] চলচ্চিত্রটি অভিনয়ের জন্য শংসা ও ধীর চিত্রনাট্যের জন্য সমালোচিত হলেও ৬৬তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অনুষ্ঠানে ৬ বিভাগে বিজয়ী হয়।
লখনউয়ের এক হাভেলি (বড় বাড়ি), যার নাম ফাতিমা মহল। এই হাভেলির মালিক ফাতিমা বেগম (ফররুখ জাফর)। ফাতিমা বেগমের অশীতিপর স্বামী চুন্নান মির্জা নাওয়াব (অমিতাভ বচ্চন), এই বাড়ির দেখভালকারী। ফাতিমা মহলের দীর্ঘদিনের ভাড়াটিয়া বাঙ্কে রাস্তোগি (আয়ুষ্মান খুরানা)। বাঙ্কে তার মা আর তিন বোনকে নিয়ে ফাতিমা মহলে ভাড়া থাকেন, কিন্তু নিয়মিত ভাড়া দেননা। মির্জা সাহেব বাঙ্কেকে দেখলেই ভাড়া পরিশোধের তাগিদ দেন। দুইজন কেউ কাউকে সহ্য করতে পারেন না। মির্জা শেখ চান বাঙ্কে সোধি তার বাড়ি ছেড়ে চলে যাক। দীর্ঘদিন ভাড়া থাকায় অধিকার নিয়ে চেপে বসেন বাঙ্কে। সম্পর্কের তিক্ততায় মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত হয়। অনাথ ছেলে বাঙ্কে পুত্রহীন মির্জা শেখকে তার পালকপিতা হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু এত সহজে হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো মালিক নন মির্জা। বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মাঝে তিক্ত-মধুর সম্পর্ককে কেন্দ্র করে এই চলচ্চিত্রের গল্প নির্মিত।[২][৭]
২০১৭ সালে জুহি চতুর্বেদী 'একজন কুটিল বৃদ্ধ'-এর গল্পের ধারণা অমিতাভ বচ্চনের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন। অমিতাভ তখন জুহিকে এই গল্প থেকে চিত্রনাট্য লেখার জন্য জুহিকে উৎসাহ দিয়েছিলেন।[৮] ২০১৯-এর মে'তে এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক সুজিত সরকার জানান যে, তিনি এবং জুহি একটি চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করছেন। জুহি চিত্রনাট্যের মূল কাহিনির ধারণা উপস্থাপন করেন। সুজিত, এই চিত্রনাট্যের গল্প প্রযোজক রনি লাহিড়ী, অমিতাভ বচ্চন ও আয়ুষ্মানকে জানান। চিত্রনাট্য পড়ে অমিতাভ ও আয়ুষ্মান চটজলদি সম্মতি দেন। চলচ্চিত্রটি লখনউকেন্দ্রিক, তাই চলচ্চিত্রের শিরোনাম লখনউ শহরের লোকদের কথ্যরিতিতে মজার ছলে ব্যবহৃত শব্দ 'গুলাবো সিতাবো' রাখা হয়।[১][২] ২০১৯-এর জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ হতে লখনউ-তে চলচ্চিত্রটির মুখ্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়।[৯]
গুলাবো সিতাবো | |||||
---|---|---|---|---|---|
শান্তনু মৈত্র, অভিষেক অরোরা, অনুজ গার্গ কর্তৃক চলচ্চিত্র সঙ্গীত | |||||
মুক্তির তারিখ | ২৭ মে, ২০২০[১০] | ||||
শব্দধারণের সময় | ২০১৯ | ||||
ঘরানা | চলচ্চিত্র সঙ্গীত | ||||
দৈর্ঘ্য | ৩০:৪৪ | ||||
ভাষা | হিন্দি | ||||
সঙ্গীত প্রকাশনী | জি মিউজিক কোম্পানি | ||||
|
পুনিত শর্মা, দিনেশ পন্ত ও বিনোদ দুবে'র গীতিতে 'গুলাবো সিতাবো'র কন্ঠ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শান্তনু মৈত্র, অভিষেক অরোরা ও অনুজ গার্গ। শান্তনু মৈত্র কন্ঠ সঙ্গীত ছাড়াও এই চলচ্চিত্রের আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেন। চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন গানের শিরোনাম অনুযায়ী গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পীদের নাম নিম্নে উল্লিখিতঃ-
সঙ্গীত তালিকা | |||||
---|---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | সুরকার | সঙ্গীত শিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "মাদারি কি বান্দার" | দিনেশ পন্ত | অনুজ গার্গ | তোচি রায়না, অনুজ গার্গ | ৪:১০ |
২. | "জুতম ফেঁক" | পুনীত শর্মা | অভিষেক অরোরা | পিজুস মিশ্র | ২:০৭ |
৩. | "কঞ্জুস" | পুনীত শর্মা | শান্তনু মৈত্র | মিকা সিং | ২:৫০ |
৪. | "কেয়া লেকে আয়ে হো জাগমে" | বিনোদ দুবে | শান্তনু মৈত্র | বিনোদ দুবে | ৩:০১ |
৫. | "দো দিন কা ইয়ে মেলা (পুনরায়)" | দিনেশ পন্ত | অনুজ গার্গ | তোচি রায়না | ৩:৩৩ |
৬. | "বুধাও (পুনরায়)" | দিনেশ পন্ত | অনুজ গার্গ | ভবানি দেবি | ৩:১৫ |
৭. | "দো দিন কা ইয়ে মেলা" | দিনেশ পন্ত | অনুজ গার্গ | রাহুল রাম | ৩:৩৩ |
৮. | "বুধাও" | দিনেশ পন্ত | অনুজ গার্গ | ববি ক্যাশ | ৩:৩৮ |
৯. | "গুলাবো সিতাবো থিম" | - | শান্তনু মৈত্র | - | ৩:৪১ |
১০. | "গুলাবো সিতাবো ক্লারিনেট থিম" | - | শান্তনু মৈত্র | - | ০:৫৬ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৩০:৪৪ |
২২ মে, ২০১৯-এ চলচ্চিত্রটির ট্রেইলার প্রকাশিত হয়।[১১] ২১ জুন, ২০১৯-এ অমিতাভ বচ্চন 'মির্জা শেখ'-এর অবয়বে গুলাবো সিতাবো'র প্রথম পোস্টারে আবির্ভূত হন।[১] প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য ১৭ এপ্রিল,২০২০ তারিখ নির্ধারণ করা হয়।[১] ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ পরিবর্তিত হয়।[১২][১৩] করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহের বদলে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও নামক অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং সেবায় ১২ জুন,২০২০-এ মুক্তি দেয়া হয়।[৪]
সমালোচকদের মূল্যায়ন | ||
---|---|---|
পর্যালোচনা স্কোর | ||
পত্রিকা/সাময়িকী | সমালোচক | রেটিং |
দ্য গার্ডিয়ান | মাইক ম্যাককাহিল | |
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া | পল্লবি দে পুরকায়স্থ | |
আইএমডিবি |
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া'র পল্লবি দে পুরকায়স্থ'র ভাষ্যমতে গুলাবো সিতাবো ছায়াচিত্রটি "অনেক ক্ষেত্রেই ভাল করেছে, তবে গল্পের ভিত্তি এই কাহিনিচিত্রের উল্লেখযোগ্য বিষয়। গল্পের বুনট গঠন করতে উল্লেখযোগ্য সময় লেগেছে, যা শুরুতে চলচ্চিত্রটির গতি ধীর করেছে।" পত্রিকাটি এই চলচ্চিত্রের কুশীলবদের অভিনয়ের প্রশংসা করে এবং রেটিং প্রদান করে।[১৪] এই চলচ্চিত্রে অমিতাভ ও আয়ুষ্মানের অভিনয় ও গল্পের বর্ণনা, দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার মাইক ম্যাককাহিলকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। মাইক গুলাবো সিতাবোকে কিছুটা নেতিবাচক রেটিং প্রদান করেন।[১৫]
ফিল্ম কমপ্যানিয়নের অনুপমা চোপরা'র মতে "গুলাবো সিতাবো (কাহিনি)র ভিত্তি তৈরী করতে সময় নেয়া হয়েছে, যা একই সাথে কাহিনিকে নিজের মাঝে ধরে রেখেছে এবং অবিরত রেখেছে"। তার মতে এই ছবির প্রথম ঘণ্টা বেশ পরিমিত গতিতে এগিয়েছে। প্রথম ঘণ্টায় গল্প বলার গতিময়তায় তিনি এই ছবির পরিচালক সুজিত সরকারের আরেকটি ছায়াছবি অক্টোবরের সাথে মিল পান। তিনি এই ছায়াচিত্রেকে এক কথায় 'ব্যঙ্গপূর্ণভাবে আমুদে এবং গভীরভাবে দুঃখজনক' বর্ণনা করেন[১৬]
গুলাবো সিতাবো ৬৬তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে ১৩টি বিভাগে মনোনায়নসহ ৬টি পুরস্কার অর্জন করে।
পুরস্কার | প্রদানের তারিখ | বিভাগ | মনোনীত কুশীলব | ফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ২৭ মার্চ ২০২১ | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (সমালোচক) | অমিতাভ বচ্চন | বিজয়ী | [১৭] |
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী | ফররুখ জাফর | বিজয়ী | |||
শ্রেষ্ঠ সংলাপ | জুহি চতুর্বেদী | বিজয়ী | |||
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ | অভিক মুখোপাধ্যায় | বিজয়ী | |||
শ্রেষ্ঠ পোশাক পরিকল্পনা | বীরা কাপুর ঈ | বিজয়ী | |||
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশনা | মানসী মেহতা | বিজয়ী | |||
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র | গুলাবো সিতাবো | মনোনীত | [১৮] | ||
শ্রেষ্ঠ পরিচালক | সুজিত সরকার | মনোনীত | |||
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | অমিতাভ বচ্চন | মনোনীত | |||
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (সমালোচক) | গুলাবো সিতাবো | মনোনীত | |||
শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদনা | চন্দ্রশেখর প্রজাপতি | মনোনীত | |||
শ্রেষ্ঠ কাহিনি | জুহি চতুর্বেদী | মনোনীত | |||
শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা | সমল | মনোনীত |