গোজো

গোজো
স্থানীয় নাম:
Għawdex

ডাকনাম: Gżira tat-tlett għoljiet / Isle of Calypso
মাল্টিয় দ্বীপপুঞ্জে গোজোর অবস্থান (গাঢ়)
ভূগোল
অবস্থানসিসিলির দক্ষিণে, ভূমধ্যসাগর
স্থানাঙ্ক৩৬°০৩′ উত্তর ১৪°১৫′ পূর্ব / ৩৬.০৫০° উত্তর ১৪.২৫০° পূর্ব / 36.050; 14.250
দ্বীপপুঞ্জমাল্টিয় দ্বীপপুঞ্জ
আয়তন৬৭ বর্গকিলোমিটার (২৬ বর্গমাইল)
দৈর্ঘ্য১৩.৩৪ কিমি (৮.২৮৯ মাইল)
প্রস্থ৭.১৫ কিমি (৪.৪৪৩ মাইল)
প্রশাসন
মাল্টা
বৃহত্তর বসতিভিক্টোরিয়া (জনসংখ্যা ৬৯০১)
গোজোর মন্ত্রীক্লিন্ট কামেলেরি
জনপরিসংখ্যান
বিশেষণগোজিটানস
জনসংখ্যাবৃদ্ধি 32,723 (2017 [])
জনঘনত্ব৫৫৭ /বর্গ কিমি (১,৪৪৩ /বর্গ মাইল)
ভাষামাল্টিজ, ইংরেজি
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহমাল্টিজ

গোজো (/ˈɡz/,[] বা ইউএস: /ˈɡɔːdz, ˈɡɔːts/),[] ঘাউডেক্স (মাল্টীয়: Għawdex, মাল্টীয় উচ্চারণ: [ˈɐːˤʊ̯dɛʃ] নামেও ডাকা হয়)[](টেমপ্লেট:Lang-xpu;[] প্রাচীন গ্রিকΓαῦλος[] Gaúlos),[][] একটি দ্বীপ যা ভূমধ্যসাগরের মাল্টীয় দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত। এটি মাল্টার একটি অংশ। মাল্টিয় দ্বীপপুঞ্জে মাল্টার পরে এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ।

২০১৫ সাল অব্দি দ্বীপটির জনসংখ্যা ছিল ৩৭৩৪২ (মাল্টার মোট জনসংখ্যা ৪৭৫০০০)। এখানে বসবাসরত মানুষদের বলা হয় গোজিটানস (মাল্টীয়: Għawdxin)। এখানে উল্লেখযোগ্য কিছু স্থাপনা আছে যেমন গান্টিয়া মন্দির। কোন রকম ভিত্তিপ্রস্থর ছাড়াই মন্দিরটি কয়েক হাজার বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছিল। শুধুমাত্র পাথর দিয়ে নির্মাণ করা স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন কোন স্থাপনা।[]

দ্বীপটিকে ঠিক শহুরে বলা যায় না। তাছাড়াও মাল্টার মতো ওতো আধুনিকতার ছোঁয়া এখানে লাগেনি। ভৌগলিকভাবে পাহাড় দিয়ে আবৃত হওয়ার কারণে দ্বীপটি ভ্রমনপিপাসুদের কাছে সুপরিচিত। এর পতাকাতে থাকা পাহাড় এটিই উপস্থাপন করে।[১০] এখানে আজুর উইন্ডো নামে একটি প্রাকৃতিক খিলান ছিল। ২০১৭ সালের ৮ মার্চে তা ভেঙ্গে যায়। এছাড়াও দ্বীপটিতে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রাকৃতিক নিদর্শন রয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরিণ সমুদ্র এবং উইড ইল-মিয়েলান উইন্ডোটি অন্যতম। রয়েছে আরো কিছু সমুদ্র সৈকত এবং রিসোর্ট। মারসালফর্ন এবং লেন্ডি রিসোর্ট দুটি বিখ্যাত। ডুবুরিদের জন্য গোজো একটি পছন্দের স্থান। এছাড়া জলের নানারকম খেলাধুলাও এখানে অনুষ্ঠিত হয়।[১১]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
গোজোর পতাকা

গোজোতে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ সাল থেকে মানুষ বসবাস শুরু করে। মূলত সিসিলি থেকে কৃষকরা কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে গোজোতে প্রবেশ করে। তখন থেকেই এখানে মানুষের বসতি গড়ে ওঠে।[১২]

সংস্কৃতির ভিন্নতার জন্য গোজো বিখ্যাত। নিওলিথিক যুগে এখানে গান্টিয়া মন্দির তৈরি করা হয়। এটি শুধু পাথর দিয়ে তৈরি সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনাই নয়, এটি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় উপসনালয়। মাল্টিয় ভাষায় মন্দিরটির নামের অর্থ "দৈত্যদের প্রতি উৎসর্গকৃত"। গোজোর লোককাহীনি তে বর্ণিত আছে, দৈত্যরা এই মন্দিরটি তৈরি করেছে।[] জাঘরা স্টোন সার্কেল নামে নিওলিথিক যুগের আরেকটি স্থাপনা রয়েছে গোজোতে। স্থানীয় মানুষজন এবং কিছু প্রাচীন গ্রীক ইতিহাসবেত্তা মনে করেন, হোমার তার অডিসিতে অগিজিয়া নামে যে দ্বীপটির কথা উল্লেখ সেটাই হচ্ছে গোজো।[১৩]

১৫৫১ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের সিনান পাশা পুরো দ্বীপকে দখল করেন। দ্বীপে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষকেই দাস হিসেবে লিবিয়ার তারহুনায় নিয়ে যান। ১৫৬৫ এবং ১৫৮০ সালের দিকে পুনরায় দ্বীপটিতে মানুষের বসতি স্থাপিত হয়। মালটার রাজা দ্বীপটিকে শাসন করা শুরু করেন।[১৪]

দ্বীপটির ইতিহাস পুরোটাই মালটার ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। অনেক আগ থেকেই দ্বীপটি মালটার শাসকরা দ্বারা শাসিত হয়েছিল। তবে ২৮ অক্টোবর ১৭৯৮ সাল থেকে ১৮০১ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত নেপোলিয়ন দ্বীপটিকে শাসন করেন।[১৪]

যোগাযোগ ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

পায়ে হাঁটা

[সম্পাদনা]

গোজোর গ্রামগুলোর মধ্যে দুরত্ব খুব একটা বেশি নয়। বরং রাস্তা গুলো অনেক নিরব এবং কোলাহলবিহীন। তবে শহরের মধ্যে কোলাহল কিছুটা বেশি। বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া থেকে মাল্টা ফেরি ঘাট পর্যন্ত গাড়ি-ঘোড়া কিছুটা বেশি থাকে। তবে পায়ে হেঁটে যাওয়ার জন্য ফুটপাতের ব্যবস্থা রয়েছে।[১৫]

২০১৭ সালে গোজোতে একটি পাবলিক বাস

ব্রিটিশভিত্তিক যানবাহন প্রতিষ্ঠান এরাইভা ২০১৪ সালে গোজো এবং মাল্টায় বন্ধ করা হয়। কিছু বাধ্যবাধকতায় অবশ্য তাদের পুরনো গাড়িগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে গাড়িতে চড়ার ক্ষেত্রে শহুরে নাগরিক এবং অনাগরিকের মধ্যে আগে বৈষম্য ছিল। এখন তা নেই। গ্রীষ্মে ২ ঘণ্টার জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ ডলার। এবং শীতকালে এই মূল্য ১.৫০ ডলার।[১৬]

অন্যান্য

[সম্পাদনা]

ছাদমুক্ত বাস পরিসেবা এখানে চালু আছে। মিগার ঘাট থেকে এই রুট শুরু হয় এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে থামে।[১৭] এই রুটে দুটি কোম্পানির বাস চলাচল করে। একটি সিটি সাইটসিং গোজো, আরেকটি গোজো সাইটসিং।[১৮]

জনসংখ্যা

[সম্পাদনা]

২০০৫ সাল পর্যন্ত দ্বীপটিতে ৩১০৫৩ জন মানুষের বসবাস ছিল। এর মধ্যে এর রাজধানী ভিক্টোরিয়াতে বসবাস করতো ৬৪১৪ জন মানুষ। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এখানে ৩২৭২৩ জন মানুষ বসবাস ছিল।[১৯]

ভূতত্ত্ব

[সম্পাদনা]

গোজো দর্শনীয় স্থানের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ক্যালিপসো গুহা এবং নিওলিথিক যুগে তৈরি করা সবচেয়ে প্রাচীন মানুষের তৈরি স্থাপনা।[২০]

গোজোর মোট আয়তন ৬৭ বর্গকিলোমিটার (২৬ মা)। নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন দ্বীপের আয়তনের সমান। মালটা থেকে ৬ কিলোমিটার (৪ মা) উত্তর-পশ্চিম দিকে এটি অবস্থিত এবং দেখতে কিছুটা ডিমাকৃতির। দ্বীপটি লম্বায় ১৪ কিলোমিটার (৮.৭ মা) এবং প্রস্থে ৭.২৫ কিলোমিটার (৪.৫০ মা)।[২১]

গোজোতে উল্লেখযোগ্য সমুদ্র সৈকতের মধ্যে রয়েছে সান বিয়াস এবং রামলা।[২২]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Gozo Population 2017" (পিডিএফ)। NSO.gov.mt। ৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. "Gozo" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জুন ২০১৯ তারিখে (US) and {{Cite Oxford Dictionaries|Gozo|accessdate=3 June 2019}}
  3. "Gozo"মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৯ 
  4. Grenville Temple (1836). "Excursions in the Mediterranean". p. 200.
  5. Huss (1985), p. 565.
  6. Stephanus of Byzantium, Ethnica, §G200.3
  7. Gaulos (island) – pleiades.stoa.org
  8. Gaulos (Gozo) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে – trismegistos.org
  9. "Ġgantija Temples"Heritage Malta। ৫ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৫ 
  10. "Coat of Arms of the Island Region of Gozo"VisitGozo.com। অক্টোবর ২০১৩। ১৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৫ 
  11. "Where is Gozo?"Gozo & Malta। ২১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৩ 
  12. "History of Gozo"islandofgozo.org। Gozo Tourism Association। ৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৪ 
  13. Ltd, Allied Newspapers। "Gozo's encounter with the greatest Homeric hero: The final chapter"timesofmalta.com। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  14. "The Gozo Citadel: The pride of Gozo island with a tragic past!"maltabulb.com। ২৮ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  15. Mitev, Georgi। "Countryside Walk in Malta and Gozo"www.malta.com। ৩ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  16. "Malta Public Transport"www.tallinja.com। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  17. "Hop-on Hop-off Bus - visitgozo.com"visitgozo.com। ২৯ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  18. www.untangledmedia.com, Untangled Media -। "Gozo Hop-On Hop-Off -"www.citysightseeing.com.mt। ১০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  19. "Gozo's contribution to national GDP accounted for 4.2% or €473.4 m"Gozo News.Com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১২-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২০ 
  20. Pier, Meg (২৬ জুলাই ২০০৯)। "A magnificent island for many an odyssey"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ – The Boston Globe-এর মাধ্যমে। 
  21. "#Gozo ~ 1st Day ~ Winding Down in Westworld! – Georgia Rose Books"georgiarosebooks.com। ৫ জুলাই ২০১৫। ২৮ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 
  22. "Malta Beaches – Ramla Bay in Gozo"perfectbay.com। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৮ 

গ্রন্থপুঞ্জি

[সম্পাদনা]
  • Head, Barclay; ও অন্যান্য (১৯১১), "Islands Between Africa and Sicily", Historia Numorum (2nd সংস্করণ), Oxford: Clarendon Press, পৃষ্ঠা 882–3 .
  • Huss, Werner (১৯৮৫), Geschichte der Karthager, Munich: C.H. Beck . (জার্মান ভাষায়)

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Malta Islands টেমপ্লেট:Phoenician cities and colonies navbox টেমপ্লেট:Malta-LocalCouncils